আমপান বিধ্বস্ত বাংলায় বিদ্যুৎ কর্মীদের সবথেকে বড় ভয় এখন ‘অপহৃত’ হবার! কলকাতা রাজ্য May 27, 2020 অনেক অবরোধ-বিক্ষোভের পর রবিবার কলকাতার একাধিক প্রান্তে ভেঙে পড়া গাছগাছালি পরিষ্কার করে বিদ্যুৎ পরিষেবা ফেরানোর তোড়জোড় শুরু করেছে সিইএসসি। তবে রাতারাতি শহরের ছবি বদলাতে পারেনি বিদ্যুৎ পরিষেবা প্রদানকারীর দল। শহরবাসীর ক্ষোভ বাড়ছে ক্রমশ। এমন অনেক জায়গা দেখা যাচ্ছে, যেখানে প্রায় 144 ঘণ্টা অন্ধকারের মধ্যে রয়েছেনে এলাকাবাসীরা। বিস্তীর্ণ এলাকায় শান্তি বজায় রাখতে এবং পরিকাঠামোর হাল ফেরাতে যত রকম ভাবে চেষ্টা চালানো যায় তা করছে সিইএসসি বিদ্যুৎ সংস্থা। কিন্তু তা সত্বেও বিভিন্ন জায়গায় দীর্ঘদিন বিদ্যুৎ না থাকার কারণে বিদ্যুৎ পরিষেবা প্রদানকারী দল পৌঁছানো মাত্রই হয় তাঁদেরকে এলাকাতেই আটকে মারধর করা হচ্ছে, না হলে হাইজ্যাক করে অন্য পাড়ায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বলে জানা যাচ্ছে। গত বুধবার আমফানের জেরে কলকাতা শহরের ওপর বলা যায়, বুলডোজার চালিয়েছে প্রকৃতি। বিভিন্ন জায়গায় ছিন্নভিন্ন হাইটেনশন তার, মুখ থুবড়ে পড়া বিদ্যুতের খুঁটি এবং উপড়ে পড়া বিশাল বিশাল গাছের আড়ালে হারিয়ে গেছে শহরের বিদ্যুৎ পরিষেবা। আর তা ফেরাতেই দিনরাত এক করে কাজ করে চলেছেন বিদ্যুৎ পরিষেবা প্রদানকারী দল। বলা যেতে পারে যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে কাজ চলছে। এ প্রসঙ্গে সিইএসসি অভিজ্ঞ সুপারভাইজার প্রসেনজিৎ দাস জানিয়েছেন, এমন বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে তাণ্ডবের চিহ্ন এতদিন পর্যন্ত তাঁর চোখে পড়েনি। প্রসেনজিতের কথা থেকেই জানা গেছে, রিজেন্ট এস্টেট এলাকায় কাজ শুরু করা মাত্রই পাশের শ্রী কলোনির বাসিন্দারা চড়াও হয় এবং প্রসেনজিতের সহকর্মীকে পাশের পাড়ায় নিয়ে যাওয়ার জন্য অপহরণের চেষ্টা চালানো হয়। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - সেসময় যাদবপুর থানার পুলিশ এসে পরিস্থিতি আয়ত্তে আনে বলে জানা গেছে। বিদ্যুৎ কর্মী প্রসেনজিতের কাছ থেকেই জানা গেছে, শহরের ওপর দিয়ে ঝড়ের তাণ্ডব চলে যাওয়ার পর থেকেই প্রসেনজিৎ সহ সিইএসসির অন্যান্য বিদ্যুৎ কর্মীরা নিরলস পরিশ্রম করে চলেছেন শহরের বিদ্যুতের হাল ফিরিয়ে দেওয়ার। কিন্তু তা সত্বেও তাঁদের ঘিরে চলছে গণবিক্ষোভ এবং গালিগালাজ। সূত্রের খবর, বরানগর থেকে শুরু করে দমদম পর্যন্ত সর্বত্র একই ছবি। কাজ করতে গিয়ে এলাকার বাসিন্দাদের ক্ষোভের মুখে পড়তে হয়েছে বিদ্যুৎ কর্মীদের। সূত্রের খবর, এই প্রসেনজিতদের নিরলস চেষ্টাতেই 6 দিন পর বিদ্যুৎ পরিষেবা ফিরে এসেছে রিজেন্ট এস্টেটের একটা অংশে। পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছেছে, যেখানে বিদ্যুৎ কর্মীদের কাজ করতে হচ্ছে পুলিশ প্রশাসনের আওতায় থেকে। অন্যদিকে জানা যাচ্ছে, দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যুৎ সংস্থায় লোক সংখ্যা কমে যাওয়ার দরুন সমস্যা আরও বেড়েছে। এ প্রসঙ্গে এক সিইএসসির এক জনৈক কর্তা জানিয়েছেন, ‘‘লোকে সিইএসসি-র গাড়ি দেখলেই জবরদস্তি টেনে নিয়ে যাচ্ছে। কখনও মাটির নীচের তার সারানোর লোককে ধরে ওভারহেড তার সারাতে হবে বলে আবদার করছেন। কখনও বা উল্টোটা ঘটছে। দু-এক দিনে গোটা শহরেই বিদ্যুৎ ফিরবে বলে আশা করছি।” অন্যদিকে রবিবারের তুলনায় সোমবার রাত পর্যন্ত পরিস্থিতির অনেক উন্নতি হয়েছে কলকাতায় বলে শোনা যাচ্ছে। এই মুহুর্তে পুলিশ বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর পাশাপাশি সেনাবাহিনীও লড়াই করে বেশ কিছু এলাকায় গাছ সরিয়ে ফেলে। ফলে বিদ্যুতকর্মীরা বিদ্যুৎ ফেরাতে সমর্থ হয়েছে বলে জানা গেছে। তবে পরিস্থিতি যে সর্বত্র স্বাভাবিক হয়েছে, তা কিন্তু নয়। জানা যাচ্ছে, খাস কলকাতায় 67 টি এলাকাসহ বিভিন্ন জেলাতেও এখনো পর্যন্ত বেশ কিছু অঞ্চল বিদ্যুৎহীন রয়েছে। পানীয় জলের সমস্যাও বর্তমান। তবে পর্যবেক্ষকদের মতে যদি শহরের মানুষরা বিদ্যুৎ কর্মী এবং অন্যান্যদের সঙ্গে সহযোগিতা করেন, তাহলে হয়তো পরিস্থিতি খুব সহজেই আগের অবস্থায় ফিরে আসবে। আপনার মতামত জানান -