শাসকদলকে ব্রাত্য করে বিজেপির দেওয়া ত্রান নেওয়ার “অপরাধে” গ্রামবাসীকে ফেলে পেটাল তৃণমূল! কলকাতা রাজ্য May 27, 2020 একদা বাম সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই করে নন্দীগ্রাম থেকেই পরিবর্তনের ডাক দিয়েছিলেন পশ্চিমবঙ্গের বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি নন্দীগ্রামের আন্দোলনের মধ্যে থেকেই তুলে ধরেছিলেন তিনি। তবে বর্তমানে সেই নন্দীগ্রামই যেন রাজ্যের বর্তমান শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের কাছে অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। এবার বিজেপির পক্ষ থেকে ঈদের সময় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষদের মধ্যে ত্রাণ বিলির উদ্যোগ নেওয়ায় গ্রামবাসীদের মারধর অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। যার ফলে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে একদা পরিবর্তনের আঁতুড়ঘর সেই নন্দীগ্রামে। জানা গেছে, সোমবার নন্দীগ্রামের আমদাবাদ 1 গ্রাম পঞ্চায়েতের পূর্বপল্লী এলাকায় সংখ্যালঘু মানুষদের বিজেপির পক্ষ থেকে ত্রাণ দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। অভিযোগ, মঙ্গলবার সেই সমস্ত মানুষদের মারধর করেন তৃণমূলের নেতাকর্মীরা। কেন তারা বিজেপির কাছ থেকে ত্রাণ নিয়েছে, তা নিয়ে তাদের ওপর স্থানীয় তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য জাহানারা খাতুনের নেতৃত্বে একগুচ্ছ দুষ্কৃতী বাঁশ, লাঠি নিয়ে চড়াও হন বলে অভিযোগ উঠেছে। আর এতেই ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে। জানা গেছে, বর্তমানে আক্রান্ত 11 জন ব্যক্তি চিকিৎসাধীন রয়েছেন। কিন্তু কেন তাদের উপর এই আক্রমণ এল! এদিন এই প্রসঙ্গে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন শেখ রকিবুল বলেন, “দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় কোনো ত্রাণ আসেনি। লকডাউন এবং আমপানের চাপে মানুষ খেতে পারছে না। তাই বিজেপির পক্ষ থেকে দেওয়া ত্রাণ সবাই নিয়েছে। বিজেপির দেওয়া ত্রান কেন নিয়েছি, সেই অপরাধে তৃণমূলের লোকজনের হাতে মার খেতে হল।” আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - অন্যদিকে এই ব্যাপারে আরেক বাসিন্দা শেখ আজিজ বলেন, “শাসক দলের মদদপুষ্ট দুষ্কৃতীরা আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে বিজেপির দেওয়া ত্রান কেন নিয়েছি, জানতে চেয়ে ভয় দেখায়। মহিলাদেরও ওরা মারধর করেছে।” এদিকে এই ব্যাপারে ইতিমধ্যেই তৃণমূলের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে ভারতীয় জনতা পার্টি। এদিন এই প্রসঙ্গে তমলুক জেলা বিজেপির সহ-সভাপতি প্রলয় পাল বলেন, “করোনা এবং আমপানে এলাকার মানুষ খাবার পাচ্ছিলেন না। মাথা গোঁজার ঠাঁই টুকু ভয়াবহ দূর্যোগ কেড়ে নিয়েছে। পানীয় জলের প্রচন্ড সমস্যা। তাই পানীয় জলের ব্যবস্থা করা হয়েছে এবং কিছু খাদ্য সামগ্রী ওই এলাকার মানুষদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। বিপদে পাশে দাঁড়িয়েছি বলে ওরা আমাদের প্রশংসা করছেন। তাই তৃণমূল নেতৃত্ব ধৈর্য হারিয়েছে। আসলে নন্দীগ্রামে তৃণমূল পায়ের তলায় মাটি হারিয়ে ফেলছে বলেই বারবার সংখ্যালঘুদের উপর আক্রমণ চালাচ্ছে। আর মুখ্যমন্ত্রী মুখে ত্রাণ নিয়ে রাজনীতি না করার কথা বলছেন।” সত্যিই তো তাই! যদি কোনো একটি রাজনৈতিক দল বিপদে মানুষের পাশে দাঁড়ায়, তাহলে কেন তারা এভাবে সাধারণ মানুষদের উপর আক্রমণ করলেন? কেন তাদের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ উঠল? এক্ষেত্রে কি নন্দীগ্রামে তৃণমূল তাদের জনভিত্তি আরও হারাচ্ছে না? এদিন এই প্রসঙ্গে তৃণমূলের নন্দীগ্রাম বিধানসভার চেয়ারম্যান মেঘনাথ পাল বলেন, “মানুষের বিপদে যে কোনো রাজনৈতিক দল সাহায্য করতেই পারে। এই ধরনের ঘটনা ঘটে থাকলে দল তা সমর্থন করে না।” তবে মেঘনাথবাবু যে কথাই বলুন না কেন, একসময় তৃণমূলকে ক্ষমতায় নিয়ে আসা নন্দীগ্রামের মানুষের উপর বর্তমানে যে আক্রমণ হয়েছে বলে তৃণমূলের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠল, তাতে তৃণমূলকে এখানে যে অনেকটাই চাপে পড়তে হল, সেই ব্যাপারে নিশ্চিত বিশ্লেষকেরা। এখন গোটা পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়, তার দিকেই নজর থাকবে সকলের। আপনার মতামত জানান -