এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > পঞ্চায়েতে গোঁজকাঁটা – বড়সড় বিদ্রোহ হতে চলেছে শাসকদলের অন্দরে?

পঞ্চায়েতে গোঁজকাঁটা – বড়সড় বিদ্রোহ হতে চলেছে শাসকদলের অন্দরে?

২০১৮ সালের ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত নির্বাচনে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের বহু নেতাই নির্বাচনী লড়াইয়ে মনোনীত হননি। এই অভিযোগের ভিত্তিতেই পূর্ব বর্ধমান জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের বেশ কয়েক জন কর্মী সমর্থক তাঁদের ক্ষোভ প্রকাশ করলেন। উল্লেখ্য ২০১৩ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে সিপিএমের বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করে তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী গোলাম জার্জিস বিজয়ী হয়েছিলেন। এছাড়া তাঁকে জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দফতরের কর্মাধ্যক্ষ পদেও মনোনীত করা হয়। কিন্তু ২ বছর আগে হঠাৎই তাঁকে কর্মাধ্যক্ষ পদ থেকে বহিঃস্কার করা হয়। স্বয়ং গোলাম জার্জিসের দাবি কর্মাধ্যক্ষের পদ থেকে অপসারনের ব্যাপারে এখনও অবধি তাঁকে কিছুই জানানো হয়নি। তাঁকে শুধু বলা হয়েছিল আপাতত তাঁকে কর্মাধ্যক্ষের পদ ছেড়ে দিতে হবে। ফের দিন পনেরোর মধ্যেই তাঁকে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু সেই কথা মতন এখনও অবধি কোনো কাজ হয়নি। স্থানীয় মানুষদের উৎসাহে তিনি এবার প্রার্থীপদের জন্যে মনোনয়ন পত্র পেশ করেন।

আরো খবর পেতে চোখ রাখুন প্রিয়বন্ধু মিডিয়া-তে

তবে ঐদিন দুপুরের মধ্যেই তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতি স্বপন দেবনাথ তাঁকে জানান, মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নিতে হবে। গোলাম জার্সিস ঐ নির্দেশ মাথা পেতে নেন উল্লেখ্য, গোলাম জার্জিসের ওই আসনে প্রার্থী করা হয়েছে জেলা পরিষদের বিদায়ী পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ বাগবুল ইসলামকে। এই প্রসঙ্গে দলীয় সিদ্ধান্তে কার্যত অসন্তুষ্ট গোলাম জার্সিস বললেন, তাঁকে টিকিট না দিয়ে বহিরাগতকে প্রার্থী করায় এলাকার মানুষ ভাল চোখে দেখছেন না। শুধু তিনিই নন, দলনেত্রীর নির্দেশ উপেক্ষা করেই গতবারের বহু নির্বাচিত প্রার্থীকে এবার টিকিট দেওয়া হয়নি। সমগ্র বিষয় নিয়ে দলের অন্দরে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। জানা গিয়েছে শুধু গোলাম জার্জিসই নন, এবারে দলের নির্দেশে কাটোয়া-২ ব্লকের জেলা পরিষদ আসনে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন জেলা পরিষদের বিদ্যুত্‍ দফতরের কর্মাধ্যক্ষ শান্তনু কোঁয়ার। এই প্রার্থীকে সাথে নিয়ে জেলা পরিষদের সভাধিপতি দেবু টুডু কাটোয়া মহকুমাশাসকের অফিসে মনোনয়নপত্র পেশ করতে গিয়েছিলেন। কিন্তু দলের নির্দেশে তাঁকে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নিতে হয়। এবং ঐ আসনে দলের সম্মতিতে অন্য প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বীতার সুযোগ পায়। শুধু এই দুই নেতাই নয় এবারে দল মনোনীত হতে পারেন নি অনেকেই । এদের মধ্যে রয়েছেন আউশগ্রামের জেলা পরিষদের গতবারের জয়ী প্রার্থী রুবি ধীবর, নারী ও শিশু কল্যাণ দফতরের কর্মাধ্যক্ষ পিঙ্কি সাহা প্রমুখ। উল্লেখ্য মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের প্রথম দিনেই বর্ধমান জেলা পরিষদের ৫৮টি আসনের মধ্যে ১টি তৃণমূল কংগ্রেস, ১টি বিজেপি, ১টি সিপিএম এবং অন্যান্য ২টি প্রার্থী তাঁদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন। পঞ্চায়েত সমিতির মোট ৬১৮টি আসনের মধ্যে ৮ টিতে তৃণমূল কংগ্রেস, বিজেপি ১৮ টিতে, সিপিএম ১১ টিতে, কংগ্রেস ১ টিতে, এবং নির্দল ২ টি আসনে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন। গ্রাম পঞ্চায়েতের মোট আসন ৩২৩৪ টির মধ্যে তৃণমূল কংগ্রেস ১০২ টি, বিজেপি ৮৬ টি, সিপিএম ৭৯ টি, কংগ্রেস ৩ টি, অন্যান্যরা ১ টিতে এবং নির্দল ১৮ টি আসনের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন। পাশাপাশি জেলা পরিষদের সভাধিপতি দেবু টুডু জেলা পরিষদ আসনে মনোনীত হওয়া দলীয় প্রার্থীদের সরাসরি নির্দেশ দিয়েছেন মনোনয়ন পত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন থেকেই নির্বাচনী প্রচার কার্যে পূর্ণ মনোনিবেশ করতে। তিনি মিছিল, মিটিং-সহ বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোট প্রচারের নির্দেশ ও দিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!