ঘুটে পোড়ে গোবর হাসে। তৃণমূলের ভাগ্যে এরকম আরও অনেক রয়েছে।- সাংসদের বিজেপিতে যোগদান নিয়ে বোমা ফাটালেন হেভিওয়েট নেতা জাতীয় রাজ্য January 10, 2019 শাসকদলের অস্বস্তিকে বাড়িয়ে ঠিক লোকসভা ভোটের ঠিক মুখে পাকাপাকিভাবে দল ছাড়লেন বিষ্ণুপুরের সাংসদ সৌমিত্র খাঁ। যোগ দিলেন বিজেপিতে। এই ঘটনায় যতোটা সন্তুষ্ট হয়েছেন মুরলীধর লেনের কর্তারা,ততোটাই বেকায়দায় পড়েছে জোড়াফুল শিবির। তৃণমূল নেতৃত্বের এভাবে প্রতিপক্ষ শিবিরে যোগদান নিয়ে প্রকাশ্যেই এদিন সৌমিত্র খাঁয়ের বিরুদ্ধে বিষোদগার করলেন বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান। এ ব্যাপারে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে সৌমিত্র খাঁয়ের বিরুদ্ধে আক্রমণাত্ম ভঙ্গিতে তিনি বললেন,বিষ্ণুপুরের সাংসদকে কোনো গুরুত্ব দিতেই তিনি রাজি নন। সৌমিত্র খাঁ আসলে সুবিধাবাদী একজন লোক। আর সেজন্যে একসময় কংগ্রেসের টিকিটে জিতে তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন। আর এখন তৃণমূলের সুবিধা করতে না পেরে বিজেপিতে গিয়ে যোগ দিলেন। এরকম অনেক সুবিধাবাদী লোক আছে দলে,যাঁদের কাছে রাজনৈতিক স্বার্থের থেকে৷ বড় হয়ে ওঠে ব্যক্তিগত স্বার্থ। শুধুমাত্র টাকা এবং ক্ষমতার লোভে প্রতারণা করতে তাঁদের বিবেকে বাঁধে না। সৌমিত্র খাঁ তেমনই একজন মানুষ। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - প্রসঙ্গত,একসময় কংগ্রেসের টিকিটে জিতে তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন সৌমিত্র খাঁ। তারপর তৃণমূলে সেভাবে গুরুত্ব না পেয়ে এদিন গেরুয়াশিবিরে গিয়ে ভীড়লেন বিষ্ণুপুরের সাংসদ,এমনটাই খবর দলীয় সূত্রের। এদিন সৌমিত্র খাঁয়ের পাশাপাশি তৃণমূলকে বিঁধতে ভুললেন না আব্দুল মান্নান। বললেন,সৌমিত্র খাঁয়ের মতো বিশ্বাসঘাতক নেতাদের তৃণমূলই এককালে প্রশ্রয় দিয়েছে। তখন তাঁরা খুব উন্নয়নের জোয়ার দেখিয়েছিল। এখন দলে দাগ কাটতে না পেরে প্রকৃত ভাবমূর্তি সামনে আনল। এসব নেতাদের তৃণমূলে ঠাঁই দেওয়ার কারণে অনেকেই তৃণমূলের বিরুদ্ধে আক্রমণ করবেন এমনটাই দাবী মান্নানের। এরপর ফের সৌমিত্র খাঁকে সরাসরি নিশানা করে বলেন,সৌমিত্র এতোটাই সুবিধাবাদী লোক যে পরবর্তীকালে নিজের লাভের জন্যে মুসলিম লিগে যোগ দিতেও দুবার ভাববে না। আসলে এদের কোনো চরিত্র বা ক্যারেকটার নেই। তৃণমূলের এবার বুঝে দেখা উচিৎ কার মদত নিয়ে কংগ্রেসের সংগঠন ভাঙতে এসেছিল। তৃণমূল ভেবেছিল,কংগ্রেস থেকে একদল সদস্য তাঁদের দলে আসায় কংগ্রেসের সংগঠনে আঘাত লেগেছে। তাই সেইজন্যেই ঢাকঢোল পিটিয়ে সৌমিত্র খাঁয়ের মতো লোকেদের দলে জায়গা দিয়ে তৃণমূল উঁচু পদে বসায়,সম্মান করে। আসলে ঘুঁটে পোড়ে গোবর হাসে দশা তৃণমূলের। তৃণমূলের ভাগ্যে এরকম অনেক নেতা-কর্মীরা রয়েছেন। তাই সৌমিত্রের বিজেপিতে যোগদান নিয়ে একফোঁটাও অবাক হননি তিনি, এমনটাই দাবী করলেন বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা আব্দুল মান্নান। প্রসঙ্গত,তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ হওয়া সত্ত্বেও প্রশাসনের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে বিদ্রোহ করার ২৪ ঘন্টা কাটতে কাটতেই দল ছাড়েন সৌমিত্র খাঁ। তাঁর অভিযোগ ছিল,জেলার এসডিপিও সুকমল দাস তাঁর ব্যক্তিগত আপ্তসহায়ক সুশান্ত দাসকে অপহরণের পাশাপাশি তাঁকে খুনের চক্রান্ত করছেন। শুধু তাই নয়,বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরেই দলের নেতা-কর্মীদের উপর অত্যাচার চালানো হচ্ছে বলে প্রশাসনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন তিনি দফায় দফায়। দলছাড়ার কারণ হিসাবে তৃণমূল কংগ্রেসের যুব সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধেও অভিযোগ তুলেছেন তিনি। তিনি স্পষ্টভাষায় জানিয়েছেন,তাঁর দলত্যাগ করার নেপথ্যে রয়েছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। যুব কংগ্রেস সভাপতির স্বৈরাচারী মনোভাব এবং পুলিশের অত্যাচারই তাকে দল ছাড়তে বাধ্য করেছে। দলের নেতা-কর্মীদের কোনো স্বাধীনতা দেওয়া হয় না,রাজ্যে কোনো গনতন্ত্র নেই,পুলিশের দাদাগিরি চলছে সর্বত্র। এভাবে দলে থেকে মানুষের জন্যে স্বাধীনভাবে কাজ করার যায় না বলেও অভিযোগে জানান তিনি। পাশাপাশি,সদ্য সমাপ্ত পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা ভোটের প্রসঙ্গ তুলেও শাসকদলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দেন তিনি। বলেন,এই রাজ্যসরকারের অধীনে ভোট হলেও সন্ত্রাসের দাপট চলে,খুনের বন্যা বয়ে যায়। কিন্তু বিজেপিসরকারের নিরাপত্তায় যে ভোট হল তাতে সন্ত্রাসের কোনো চিহ্ন দেখা যায়নি। রাজ্যের এতো আইনশৃঙ্খলার অবনতি তাঁর সহ্যের বাইরে চলে গিয়েছে। এদিন অভিযোগ প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও একহাত দিয়ে দেন তিনি। বলেন,”তৃণমূল কংগ্রেস পিসি-ভাইপোর দলে পরিণত হয়েছে। পরিবারতন্ত্র চালাচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মানুষের উন্নয়নের কোনও জায়গা নেই এই দলে।” উল্লেখ্য, সৌমিত্রের এই তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগদানের খবরে এমনিতেই হইচই পড়ে গিয়েছে রাজনৈতিকমহলে,তার উপর এদিন বিধানসভার বিরোধী নেতা আব্দুল মান্নান এ প্রসঙ্গে মন্তব্য করে আরো শোরগোল ফেলে দিলেন। আপনার মতামত জানান -