প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – রাজ্য ও রাজ্যপাল সংঘাত দিনদিন তীব্র আকার ধারণ করছে। ইতিপূর্বেও রাজ্যের একাধিক বিষয় নিয়ে বারবার সরব হয়েছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর। নির্বাচন-পরবর্তী হিংসার পরিস্থিতি নিয়ে রাজ্যপাল মুখ্যমন্ত্রীকে বারবার সতর্ক করেছেন। রাজ্যের আইন শৃঙ্খলা বজায় রাখার আবেদন জানিয়েছেন।

গতকাল নিজাম প্যালেসে যখন ধুন্ধুমার কান্ড চলছিল, সেই সময়ে রাজ্যপাল একাধিকবার সতর্ক করেছেন মুখ্যমন্ত্রীকে। রাজ্যের আইন শৃঙ্খলা বজায় রাখার আর্জি জানিয়েছেন তিনি। তিনি অভিযোগ করেছেন, আইনশৃঙ্খলার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ কলকাতা পুলিশ ও রাজ্য পুলিশ। মুখ্যমন্ত্রীকে তিনি সতর্ক করেছেন যে, আইন-শৃঙ্খলা, সাংবিধানিক অবস্থা ভেঙে পড়লে তার ফলাফল কি হতে পারে। এবার রাজ্যপালের বিরুদ্ধে চরম পদক্ষেপ নিতে চলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

জানা গেছে, এবার রাজ্যপাল জগদীপ ধনকরের পদত্যাগের দাবি করতে চলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর কাছে চিঠি দেবেন তিনি। এরপর বিধানসভায় রাজ্যপালের পদত্যাগের দাবি করে প্রস্তাব দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল। বিধানসভায় বয়কট পর্যন্ত করতে পারে তাঁকে তৃণমূল। তাই এবারে রাজ্য ও রাজ্যপাল সংঘাত চূড়ান্ত আকার ধারণ করবে বলেই অভিমত অনেকের। তবে, প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতি মুখ্যমন্ত্রীর দাবি মেনে নেবেন কিনা? সে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।

রাজ্যের সাংবিধানিক দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই রাজ্যপালের সঙ্গে বারবার মতান্তর ঘটেছে মুখ্যমন্ত্রীর। রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থা, রাজ্যের স্বাস্থ্যব্যবস্থা, রাজ্যের পুলিশি ব্যবস্থা নিয়ে রাজ্যপাল বারবার প্রশ্ন তুলেছেন। বারবার ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন রাজ্যপাল। ভোট পরবর্তী হিংসার পরিস্থিতিতে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে সতর্ক করেছেন তিনি। রাজ্যের নানা স্থান পরিদর্শন করেছেন তিনি। মানুষের দুর্দশার কথা বারবার মুখ্যমন্ত্রীর কাছে তুলে ধরেছেন তিনি। যার ফলে রাজ্যপাল হয়ে পড়েছেন শাসকদলের চক্ষুশূল।

গতকাল সিবিআই দপ্তরের সামনে যখন ইটবৃষ্টি, বোতল ছোড়াছুড়ি চলছিল, সেসময় মুখ্যমন্ত্রীকে বারবার সতর্ক করেছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর। তিনি অভিযোগ করেছেন, কলকাতা পুলিশ ও রাজ্য পুলিশ একেবারে নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে, যা দেখে তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। প্রশাসনকে সমস্ত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আর্জি জানিয়েছেন তিনি।

তিনি অভিযোগ করেছেন, কোন রকম ব্যবস্থা না নেওয়ার ফলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। এরপর রাজ্যপালকেও একাধিকবার আক্রমণ করতে দেখা গেছে তৃণমূল নেতাদের। রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা জানিয়েছেন, রাজ্যপাল তাঁর পদক্ষেপের মাধ্যমে যথেষ্ট অস্বস্তি বাড়িয়ে দিয়েছেন শাসকদল তৃণমূলের। মুখ্যমন্ত্রীও আর রাজ্যপালের চাপ নিতে পারছেন না, এ কারণেই রাজ্যপালের অপসারণ চাইছেন তিনি।