এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > তৃণমূল > অর্জুনের সাবধান বাণী, ভোটের আগেই চরম বিপাকে মমতা! কটাক্ষ বিরোধীদের!

অর্জুনের সাবধান বাণী, ভোটের আগেই চরম বিপাকে মমতা! কটাক্ষ বিরোধীদের!


 

প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট- অনেক আহ্লাদে গদগদ করে অর্জুন সিংহকে দলে নিয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেস। যখন অর্জুন সিংহ তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে গিয়েছিল, তখন কতই না বড় বড় কথা শোনা গিয়েছিল তৃণমূলের যুবরাজের গলায়। আর কোনোদিন এই সমস্ত লোককে নেওয়া হবে না, তিনি দলের দায়িত্বে থাকতে তিনি কোনদিন এই সমস্ত লোককে দলে ফেরাবেন না, ইত্যাদি অনেক বড় বড় কথা বলেছিলেন। কিন্তু সময় অনুপাতে দেখা গিয়েছে, সেই সমস্ত কিছু ঢপের চপ। তবে এখন সেই অর্জুন সিংহের কাটা গলায় বিঁধতে শুরু করেছে তৃণমূল কংগ্রেসে। লোকসভা নির্বাচন যতই এগিয়ে আসছে, ততই অর্জুন সিংহকে নিয়ে সমস্যা বাড়ছে তৃণমূলের মধ্যে। আর এবার দলের মধ্যে যারা দুর্নীতি করেছে, যারা কাজের বিনিময়ে টাকা নিয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে মন্তব্য করতে গিয়ে ঘুরিয়ে তৃণমূলের সঙ্গে একদিকে দুর্নীতির যোগ এবং অন্যদিকে ভোটের সময় কোন লোকেদের বুথে বসালে তৃণমূলের পরাজয় হবে, সেই কথা বলে অস্বস্তি বাড়িয়ে দিলেন ব্যারাকপুরের সাংসদ অর্জুন সিংহ। আর অর্জুনবাবুর এই মন্তব্যের পর ফায়দা পেয়ে গিয়েছে বিরোধীরাও। তারা এখন বলতে শুরু করেছেন, এখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বুঝুন ঠ্যালা কাকে বলে। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে কি এমন বললেন ব্যারাকপুরের সাংসদ?

প্রসঙ্গত, এদিন একটি সভায় উপস্থিত হয়ে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বক্তব্য রাখেন অর্জুন সিংহ। তিনি বলেন, “যারা মানুষের কাছ থেকে কাজের বিনিময়ে টাকা নেয়, তাদের ভোটের সময় বুথে বসাবেন না। এই লোকেদের বুথে বসালে আপনি ভোটের আগেই হেরে যেতে পারেন।” অর্থাৎ অর্জুন সিংহের এই কথা থেকে দুটো জিনিস স্পষ্ট হচ্ছে। প্রথম কথা, তিনি খুব ভালো মতোই জানেন যে, দলের মধ্যে দুর্নীতি হয়। দলের মধ্যে কিছু কিছু লোক কাজের বিনিময়ে টাকা নেয়। আর দ্বিতীয় কথা, তৃণমূল কাদেরকে সম্পদ ভাবে, সেটাও হয়তো অর্জুন সিংহ দলের মধ্যে থেকেই এই বক্তব্যের মধ্যে দিয়ে স্পষ্ট করে দিলেন। তিনি হয়ত আশঙ্কা করছেন যে, যারা কাজের বিনিময়ে টাকা নেয়, যারা দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত, তাদেরকেই এবারের নির্বাচনে কাজে লাগাতে পারে তৃণমূল নেতৃত্ব। তাই যদি ভোটের আগেই হেরে যেতে না হয়, তাহলে কাদের বুথে বসাতে হবে, কাদের ভোটের কাজে লাগাতে হবে, সেই কথাই বোঝানোর চেষ্টা করলেন অর্জুনবাবু।

কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, অর্জুন সিংহের এই কথা শুনবে কে! তৃণমূলে কতজন ভালো আছে, এটার পাশেই তো একটা বড় প্রশ্ন বোধক চিহ্ন বসে গিয়েছে। হয়ত অর্জুন সিংহ বলবেন, তার গ্রুপের লোকেরা ভালো, সোমনাথ শ্যামের গ্রুপের লোকেরা খারাপ। কারণ দুই নেতার মধ্যে ইতিমধ্যেই গন্ডগোল বেশ কিছু ক্ষেত্রে সামনে চলে এসেছে। তবে যে গ্রুপের লোকেরাই ভোটের কাজে থাকুন না কেন, মানুষ যে এবার তৃণমূলকে বিদায় দেওয়ার জন্য প্রস্তুত, সেই ব্যাপারে নিশ্চিত বিরোধীরা।

বিরোধীদের দাবি, তৃণমূলে যে পরিমাণ দ্বন্দ্ব শুরু হয়েছে, তাতে এমনিতেই এই দল এখন বিদায়ের মুখে দাঁড়িয়ে আছে। এখন শুধু প্রয়োজন মানুষের ভোটাধিকার প্রয়োগ। আগামী লোকসভা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এখন থেকেই নেতাদের মধ্যে দড়ি টানাটানি শুরু হয়েছে যে, কে কোথায় প্রার্থী হবে! তাই যারা প্রার্থী হতে পারবে না, তারা উল্টোদিকে ভোট করাবে। আর এই দ্বন্দ্বের ফলেই জয় হবে গণতন্ত্র প্রেমী সাধারণ মানুষের। দিনের শেষে এবারের লোকসভা নির্বাচনে গণনার দিন তৃণমূল ধুয়েমুছে সাফ হয়ে যাবে বলেই দাবি বিরোধীদের।

পর্যবেক্ষকদের মতে, অর্জুন সিংহ এখন নিজের হাতে ব্যারাকপুর এলাকার রাশ রাখতে চাইছেন। কারণ খুব কম সম্ভাবনা আছে এবার তার লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূলের টিকিট পাওয়ার। তাই নিজের দিকে জন সমর্থন আনতে চাইছেন তিনি। নিজেকে একটা সৎ ভাব মূর্তির মানুষ হিসেবে সকলের সামনে উপস্থাপিত করতে চাইছেন। কিন্তু এসব করে লাভ হবে না। অর্জুন সিংহ দাঁড়ান বা অন্য কেউ দাঁড়ান, দিনের শেষে পরাজিত হবে তৃণমূল কংগ্রেস। কারণ এই দলটার ওপর মানুষ আর বিশ্বাস রাখতে পারছে না। যে যত ভালোই হোক না কেন, এই দলে থাকলে মানুষ অন্তত তৃণমূলকে চোর, দুর্নীতির আতুড়ঘর বলতে দুইবার ভাবছে না। তাই অর্জুন সিংহ এখন নিজের পদ বাঁচাতে দলে বড় জায়গা পেতে অনেক বড় বড় কথা বলবেন ঠিকই। কিন্তু বাস্তবে এর ফলে লাভের লাভ কিছু হবে না। বরঞ্চ এই কথা বলে অর্জুন সিংহ নিজের দল এবং দলনেত্রীর অস্বস্তি প্রকট ভাবে বাড়িয়ে দিলেন। দিনের শেষে তেমনটাই বলছেন রাজনৈতিক সমালোচকরা।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!