এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > বিজেপি > বঙ্গ জয়ের লক্ষ্যমাত্রা রেখেও কেন বিফল মনোরথ হয়ে ফিরতে হয়েছে বিজেপিকে? খোলসা করলেন দিলীপ ঘোষ

বঙ্গ জয়ের লক্ষ্যমাত্রা রেখেও কেন বিফল মনোরথ হয়ে ফিরতে হয়েছে বিজেপিকে? খোলসা করলেন দিলীপ ঘোষ


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – বিধানসভা নির্বাচনে রাজ্য জয়ের লক্ষ্যমাত্রা রেখেছিল বিজেপি। ২০০ টি আসনের লক্ষ্যমাত্রা রাখা হয়েছিল। কিন্তু মাত্র ৭৭ টি আসনে থমকে গেছে বিজেপির বিজয়রথ। কেন দলের এমন বিপর্যয় এসেছে? এ প্রসঙ্গে একটি চ্যানেলকে দেয়া সাক্ষাৎকারে বক্তব্য রাখেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। একাধিক প্রসঙ্গ উঠে এলো তাঁর বক্তব্যে। যার মধ্যে মূল হল ব্যাপকহারে অন্য দল থেকে বিজেপিতে যোগদান। তিনি জানালেন, লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি যাদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছিল, সেই লোকেরা দলে চলে আসায় বুথ ম্যানেজমেন্ট ঠিকমতো করতে পারেনি দল। দলের কর্মীদের মনোবল নষ্ট হয়ে গেছে। যে হাওয়া এসেছিলো, তাতে মানুষ ধরে নিয়েছিলেন বিজেপি জিতবে। মানুষ ভোট দিয়েছিলেন। কিন্তু দলবদলকে ঘিরে দলের নিচুতলার কার্যকর্তাদের মধ্যে বিরূপ প্রভাব পড়েছিল। এর ফলে বুথে, গণনা কেন্দ্রে সঠিকভাবে লড়াই করা যায়নি।

বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ জানিয়েছেন যে, ভোটের আগে দলবদলে বিজেপির ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এমন লোককে দলে নেওয়া হয়েছিল, যা দলের কর্মীরা মেনে নিতে পারেননি। যে সব মানুষের বিরুদ্ধে লোকসভা ভোটে লড়াই করেছেন তাঁরা, তাদের দলে নেওয়াতে তৃণমূলের সঙ্গে বিজেপির পার্থক্য চলে গিয়েছিল। তৃণমূলের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করা হয়েছিল, সে অভিযোগগুলি ভোঁতা হয়ে পড়েছিল। সারদা, নারদার মত দুর্নীতিতে অভিযুক্ত নেতাদের দলে নেওয়ার ফলে মানুষ দেখেছেন বিজেপি সবাইকেই দলে নিচ্ছে। দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব এক্ষেত্রে বেশিরভাগ সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। তাঁরা শুধুমাত্র তা কার্যকর করেছেন। কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে আপত্তির কথা বলাও হয়েছিল। কিন্তু কেন্দ্রের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল যে, এদেরকে দলে নিতে।

বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ জানালেন যে, অন্য দল থেকে আসা কিছু লোককে দলে নিতে হতো। কারণ, বিজেপির অভিজ্ঞতা কম ছিল। কিন্তু অন্য দলের লোকদের দলে নেওয়ার একটা সীমারেখা রাখা উচিত ছিল। কিন্তু সেই সীমারেখা পার হয়ে গিয়েছিল। তৃণমূলের বিরুদ্ধে যে প্রতিষ্ঠান বিরোধীতা ছিল, বিজেপি যেটার সুবিধা পেত, তা হাতছাড়া হয়ে গেছে। তৃণমূলকে বলার সুযোগ করে দেয়া হয়েছে যে, তারা যে চোরেদের দল থেকে তাড়িয়ে দিয়েছে বিজেপি তাদের গ্রহণ করেছে। তৃণমূলের যে বদনাম ছিল, দুর্নীতি ছিল, সেখানে জড়িতদের বিজেপি দলে নিয়েছে। এই সমস্ত নেতাদের সারদা, নারদা থেকে শুরু করে স্থানীয় স্তরের দুর্নীতি নিয়ে অভিযোগ ছিল।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

বিভিন্ন ধরনের দুর্নীতির সঙ্গে যারা যুক্ত, চাকরি দেওয়ার নামে টাকা নেওয়ার অভিযোগ যাদের বিরুদ্ধে রয়েছে, তাদেরও দলে নেয়া হয়েছে। কোন বাছবিচার রাখা হয়নি। কোনো চিন্তা-ভাবনা করা হয়নি। যে পেরেছে সেই বিজেপিতে যোগদান করেছে। প্রশ্ন ওঠে, রাজ্য নেতৃত্বের এতে কোন আপত্তি ছিল না? এ প্রসঙ্গে বিজেপির রাজ্য সভাপতি জানালেন, কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে বলা হয়েছিল। কিন্তু রাজ্যকে বলা হয় যে, এদের দলে নিয়ে নিতে। এখন বোঝা যাচ্ছে এই সিদ্ধান্ত বড় ভুল ছিল। মানুষ তা ভালোভাবে নেয়নি। মানুষ দেখতে পেয়েছেন যে, বিজেপি সবাইকে দলে নিচ্ছে। তাহলে আর কি পরিবর্তন হবে?

বিজেপির রাজ্য সভাপতি জানান, বিরোধী দল ভেঙে অনেক রাজ্যে বিজেপির লাভ হয়েছে। ত্রিপুরাতে লাভ হয়েছে। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের মানুষ তা ভালোভাবে গ্রহণ করেননি। তিনি জানিয়েছেন, নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহ প্রমুখরা হলেন দলের বিশেষ মুখ। গোটা দেশেই দলকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। দু বার দলকে ক্ষমতায় এনেছেন। কিন্তু বাইরে থেকে অন্য লোক এত না এলেই হয়ত ভালো হত। যা নিয়ে প্রচারের সুযোগ পেয়েছে তৃণমূল। গত ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে ১৮ টি আসন পেয়েছিল বিজেপি। ১৬ টি আসন বাড়াতে পেরেছিল। প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদী ছিলেন দলের প্রধান মুখ। কারণ ভোট ছিল দেশের। বাকি কাজটা করেছিলেন তাঁরা। এরপর অন্য রাজ্যে দলের এই কৌশল কাজ করেছে। কিন্তু বাংলায় কাজ করেনি।

তিনি জানালেন, কন্যাশ্রী সবুজ, সাথী প্রকল্পতে রাজ্যের মানুষ উপকৃত হয়েছেন। এরা তৃণমূলকে ভোট দিয়েছেন। মহিলারা তৃণমূলকে ভোট দিয়েছেন। কেন্দ্রীয় সরকারের প্রকল্প গুলির কথা মানুষের কাছে পৌঁছানো সম্ভব হয়নি। কেন্দ্রের প্রকল্প গুলির নাম বদল করে দিয়েছে তৃণমূল সরকার।
এভাবেই বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির ব্যর্থতার একাধিক কারণ তুলে ধরলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। কিন্তু তার মধ্যে প্রধান কারণ হিসেবে তিনি চিহ্নিত করেছেন ব্যাপকহারে দলবদলকে। রাজ্যের মানুষ কখনোই তা ভালোভাবে গ্রহণ করেননি। যদিও নির্বাচনের আগে বিজেপি ও অন্যান্য বিরোধী দলের বেশ কিছু নেতাকর্মীকে তৃণমূলে যোগদান করানো হয়েছিল। কিন্তু যোগদানের ব্যাপারে অনেকটা এগিয়ে ছিল বিজেপি। স্থানে স্থানে চলেছিল যোগদান মেলা। যা শেষ পর্যন্ত গলার কাঁটা হয়ে বিপর্যয় ডেকে এনেছে বিজেপির। বিজেপির রাজ্য সভাপতির বক্তব্যে তা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।

 

 

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!