এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > ব্যানার্জি পরিবারে বড়সড় ভাঙ্গন, ভাইয়ের সঙ্গে সমস্ত সম্পর্ক ছিন্ন করলেন দিদি মমতা!

ব্যানার্জি পরিবারে বড়সড় ভাঙ্গন, ভাইয়ের সঙ্গে সমস্ত সম্পর্ক ছিন্ন করলেন দিদি মমতা!


প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-তৃণমূল মানেই যে প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি এবং পরিবারকে সর্বস্ব দিয়েই যে রাজনীতি করতে চান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, সেটা প্রতি পদে পদে প্রমাণিত হয়েছে। অনেকে তো এটাও বলেন যে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজের স্বার্থসিদ্ধি করা ছাড়া আর কিছুই বোঝেন না। এখন তার সঙ্গে জুটেছে ভাইপো। আর ক্ষমতা পাওয়ার জন্য দলে গণতন্ত্রকে সম্পূর্ণ রূপে হত্যা করে এবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে কাজ করলেন, তার চমকে দেওয়ার মত। তার দলের প্রার্থী প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়, তার বিরুদ্ধে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নিজের ভাই আপত্তি জানিয়ে নির্দলের টিকিটে হাওড়া থেকে লড়ার কথা বলেছিলেন। আর তারপরেই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী জানিয়ে দিলেন, তিনি ভাইয়ের সঙ্গে সমস্ত সম্পর্ক ছিন্ন করে দিচ্ছেন। আজ থেকে যেন বাবুন ব্যানার্জিকে কেউ তার ভাই বলে পরিচয় না দেন। আর এখানেই অনেকের প্রশ্ন যে, ভাবতে পারেন! শুধুমাত্র উচিত কথা বলার জন্য এই ভদ্র মহিলা নিজের ভাইকেও ত্যাগ করতে দুবার ভাবছেন না! তাহলে তিনি বিরোধীদের মতামতকে সহ্য করবেন কি করে?

প্রসঙ্গত, হাওড়ায় তৃণমূলের প্রার্থী প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে এদিন সোচ্চার হয়ে নির্দলে টিকিটে লড়াই করার কথা জানিয়ে দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নিজের ভাই বাবুন বন্দোপাধ্যায়। আর সেই কথা শুনে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি ভাইয়ের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করছেন বলে জানিয়ে দেন এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। প্রথম কথা, ক্ষমতা পাওয়ার জন্য যে ব্যানার্জি পরিবার উঠে পড়ে লেগেছে এবং তাদের যে সব চাই, সেটা এই ঘটনার মধ্যে দিয়ে স্পষ্ট হয়ে গেল। আর দ্বিতীয় বিষয়, যেটা অত্যন্ত মারাত্মক, সেটা হচ্ছে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজের বলে কাউকে মনে করেন না। তার কাছে নিজের স্বার্থ বিঘ্নিত হওয়া মানে বড় কিছু অঘটন ঘটে যাওয়া। তাই তার দলের প্রার্থীর বিরুদ্ধে তার নিজের ভাই সরব হওয়ার পরেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এমন একটা ভাব দেখালেন, যেন তিনি পরিবারবাদকে প্রশ্রয় দেন না। কিন্তু তার অস্বস্তি তৈরি হয়েছে জন্যেই যে তিনি এই কথা বলতে বাধ্য হলেন, সেটা স্পষ্ট। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই পশ্চিমবঙ্গের মাটিতে পরিবারবাদকে প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে তার দলের অনেক পুরনো সঙ্গীরা তার সঙ্গ ত্যাগ করেছেন। তাই তার মুখ থেকে এত বড় বড় কথা অন্তত মানায় না। তিনি বুঝতে পেরেছেন যে, তার ভাইয়ের এই মন্তব্য তার গলার কাঁটা হয়ে যাচ্ছে। লোকসভা নির্বাচনের আগে এই মন্তব্যে তিনি অত্যন্ত চাপে পড়ে যাচ্ছেন। তাই বাধ্য হয়েই সংবাদমাধ্যমের সামনে এই ধরনের কথা বলে ড্যামেজ কন্ট্রোল করার চেষ্টা করলেন মুখ্যমন্ত্রী বলেই দাবি একাংশের।

পর্যবেক্ষকদের মতে, তৃণমূলের মধ্যে কি হবে, সেটা তাদের নিজস্ব ব্যাপার। তারা কিভাবে সেটাকে সামাল দেবে, সেটা নিয়েও কারও কোনো মাথাব্যথা নেই। কিন্তু একটা জিনিস স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে দিনের শেষে যে, তৃণমূল দলটা সত্যিই প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানিতে পরিণত হয়েছে। এখানে বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবার সবার মাথার উপর ছড়ি ঘোরাবেন, এমনটাই তাদের চাহিদা। তবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বুঝতে পারছেন যে, দলের মধ্যে এমনিতেই বিভিন্ন এলাকায় প্রার্থী নিয়ে যে সমস্যা তৈরি হচ্ছে, তাতে তার পরিবারকে যদি তিনি আরও বেশি করে জায়গা দিয়ে দেন, তাহলে কালীঘাটের বিরুদ্ধেই আওয়াজ উঠবে। তাই ভাই নির্দলের টিকিটে দাঁড়ানোর কথা বলতেই দিদি হিসেবে তার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার কথা বলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করলেন যে, তিনি এই সবকিছুকে প্রশ্রয় দেন না। কিন্তু ভাইপোকে প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সবার আগে যে দলটাকে পরিবারের মধ্যে বেঁধে দিয়েছেন, তার জন্যেই যে পরিবারবাদ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এই পশ্চিমবঙ্গের মাটিতে, এটা তিনি কেন ভুলে যাচ্ছেন? তাই এখন তার সেই ব্যানার্জি পরিবার থেকেই আওয়াজ উঠবে, এটাই তো স্বাভাবিক। আর এভাবেই অন্ধকারের গর্ভে তলিয়ে যাবে তৃণমূল কংগ্রেস। দিনের শেষে তেমনটাই বলছেন রাজনৈতিক সমালোচকরা।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!