এখন পড়ছেন
হোম > জাতীয় > ভারতে কি এবার শুরু হয়ে গেল গোষ্ঠীসংক্ৰমন? করোনা নিয়ে দুশ্চিন্তা প্রবল করছে এই রাজ্য

ভারতে কি এবার শুরু হয়ে গেল গোষ্ঠীসংক্ৰমন? করোনা নিয়ে দুশ্চিন্তা প্রবল করছে এই রাজ্য


সম্প্রতি দেশজুড়ে করোনা সংক্রমণের কারণে ভয়াবহ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। প্রাথমিকভাবে করোনা সংক্রমণ ঠেকানোর জন্য দেশজুড়ে লকডাউন শুরু হয়েছিল, যা এখনো বর্তমান। কিন্তু তা সত্বেও পরিস্থিতির বিন্দুমাত্র উন্নতি হয়নি। উপরন্তু পরিযায়ী শ্রমিকদের আনাগোনার ফলে দেশের করোনা পরিস্থিতি আরো মারাত্মক হয়ে উঠেছে। সম্প্রতি এরইমধ্যে এবার আতঙ্ক বাড়িয়ে আরও ভয়ানক খবর উঠে এল করোনা সংক্রান্ত। বলা হচ্ছে, দিল্লি জুড়ে এবার গোষ্ঠী সংক্রমণ শুরু হয়ে গেছে।

গোষ্ঠী সংক্রমণ হয়েছে তখনই বোঝা যায়, যখন সংক্রমণের উৎস বুঝতে পারা যায় না। এরই পরিপ্রেক্ষিতে এদিন দিল্লির স্বাস্থ্যমন্ত্রী সত্যেন্দ্র জৈন জানিয়েছেন, ‘‘এটিই ‘গোষ্ঠী-সংক্রমণ’ কি না, তা বলবে কেন্দ্রীয় সরকার। কারণ সেটি একটি পরিভাষা।” তবে বিশেষজ্ঞদের মত, যেভাবে দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় 10 হাজারের কাছাকাছি পৌঁছেছে, এর মধ্যে 10% দেখা যাচ্ছে দিল্লিবাসী। তবে কেন্দ্র কিন্তু এখনো দিল্লিতে গোষ্ঠী সংক্রমণ শুরু হয়েছে একথা মানতে নারাজ বলে জানা গেছে।

অন্যদিকে দিল্লির স্বাস্থ্যমন্ত্রী গতকালই জানিয়ে দিয়েছিলেন, দিল্লি থেকে যেসব করোনা আক্রান্তের খোঁজ মিলছে, তাঁদের বেশিরভাগেরই শরীরে সংক্রমণের উৎস খুঁজে পাওয়া যাচ্ছেনা। এদিকে করোনা আক্রান্তের নিরিখে মহারাষ্ট্র এগিয়ে থাকলেও এবার পাল্লা দিয়ে দিল্লি এগিয়ে এল আক্রান্তের তালিকায় তিন নম্বরে। আপাতত দিল্লিতে আক্রান্তের সংখ্যা মোট 31309। অন্যদিকে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল ইতিমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছেন, রাজধানীর সমস্ত হাসপাতালেই দেশের সমস্ত প্রান্তের রোগীদের চিকিৎসা করানো হবে।

সম্প্রতি দিল্লির উপ-রাজ্যপাল এই নির্দেশ দিয়েছেন বলে খবর এবং কেজরিওয়ালের কথা থেকেই পরিষ্কার উপ রাজ্যপালের নির্দেশ অক্ষরে অক্ষরে মেনে চলবে দিল্লি সরকার। অন্যদিকে সূত্রের খবর, এদিন রাতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের বাড়িতে অরবিন্দ কেজরিওয়াল পৌঁছান। এরই পরিপ্রেক্ষিতে এরপর কেজরিওয়াল টুইটারে জানিয়েছেন, করোনা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার জন্যই তিনি গিয়েছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বাড়িতে।  স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তাঁকে যাবতীয় সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন বলে জানান কেজরীওয়াল।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

অন্যদিকে দিল্লির উপমুখ্যমন্ত্রী মণীশ সিসৌদিয়া কিন্তু দিল্লির গোষ্ঠী সংক্রমণের তত্ত্ব সম্পূর্ণ খারিজ করে দিয়েছে্ন। তিনি আগেই জানিয়েছিলেন 31 শে জুলাই এর মধ্যে দিল্লিতে সাড়ে পাঁচ লক্ষ মানুষ করোনা সংক্রমিত হবেন। ইতিমধ্যে মুম্বইয়ের সঙ্গে দিল্লির সুস্থতা হওয়ার একটা ফারাক দেখা যাচ্ছে। যেখানে মুম্বাইতে করোনা আক্রান্ত দ্বিগুণ হওয়ার গড় সাড়ে 13 দিন, সেখানে দিল্লিতে দেখা যাচ্ছে 12 দিনের মাথায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দ্বিগুণ হচ্ছে। অন্যদিকে মুম্বাইতে যেখানে সুস্থতার হার 44%, সেখানে দিল্লিতে দেখা যাচ্ছে মাত্র 8 শতাংশ মানুষ সুস্থ হচ্ছেন।

এদিকে জানা যাচ্ছে, ক্রমাগত দিল্লিতে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে চলায় এবার কোয়ারেন্টাইন সেন্টার গঠন করার জন্য দিল্লির বিভিন্ন স্টেডিয়াম, খেলার মাঠ, হল, হোটেল ভাড়া করতে শুরু করেছে দিল্লি সরকার। অন্যদিকে এইমস এর ডিরেক্টর রণদীপ গুলেরিয়া জানিয়েছেন, শুধুমাত্র যেসব রোগীর শ্বাসকষ্ট থাকবে তাঁদেরকেই হাসপাতালে রাখা হবে এবং উপসর্গহীন যাঁরা তাঁদেরকে বাড়িতে রেখে চিকিৎসা করার পক্ষেই তার মত। তিনি পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছেন, বর্তমান পরিকাঠামো অনুযায়ী হাসপাতালে সব রোগীকে ভর্তি করা সম্ভব নয়।

অবশ্য অনেকেই বলতে শুরু করেছেন, হোটেল, স্টেডিয়ামে রোগী রাখার পরিকল্পনা লকডাউন শুরুতেই হয়েছিল। কিন্তু অরবিন্দ কেজরিওয়ালের এই পরিকল্পনা কার্যকর করতে যথেষ্ট দেরী হল। এই ব্যাপারেই বিজেপি নেতা মনোজ তিওয়ারি প্রশ্ন তুলেছেন, এতদিনেও কেন কোন স্টেডিয়াম বা হোটেল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে দিল্লি সরকারের পক্ষ থেকে কোনো আলোচনা চালানো হয়নি? অন্যদিকে রাজস্থান ইতিমধ্যে সীমানা বন্ধ করে দিয়েছে তাঁদের রাজ্যের। রাজস্থানের সঙ্গে হরিয়ানা, মধ্যপ্রদেশ, উত্তরপ্রদেশ, পাঞ্জাবের সীমানা রয়েছে। তবে আন্তঃরাজ্য পরিষেবা চালু থাকবে বলে জানা গেছে।

সারাদেশ এই মুহূর্তে করোনা সংক্রমণের কারণে রীতিমত আতঙ্কে নাজেহাল। একেতো করোনা পরিস্থিতির কোনো উন্নতি নেই উপরন্তু লকডাউনের কারণে কাজকর্ম বন্ধ। এই পরিস্থিতিতে আবার বিজ্ঞানীরা প্রথম থেকে এখনো পর্যন্ত ঘোষণা করে চলেছেন, প্রতিষেধক বা কোন ওষুধ আবিষ্কার নাহলে করোনার মতো অতিমারি রোগকে কোনমতেই নিষ্ক্রিয় করা সম্ভব নয়। এই অবস্থায় বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, দিল্লিতে যেভাবে করোনা সংক্রমণ ভয়াবহ জায়গায় পৌঁছাচ্ছে, এবার হয়তো দিল্লি করোনার ভরকেন্দ্র হিসেবে বিবেচিত হবে।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!