আনলকে বিধানসভার জমি শক্ত করতে গিয়েই হয়ে গেল বড়সড় বিপদ? চরম বিপাকে হেভিওয়েট রাজনৈতিক নেতারা? তৃণমূল রাজ্য শরীর-স্বাস্থ্য July 15, 2020 প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – করোনা ভাইরাস দাপটে সহকারে বাড়তে শুরু করেছে গোটা রাজ্যে। দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায় প্রথম দিকে এই ভাইরাস একজনের শরীরে বাসা না বাঁধলেও, এখন প্রতিদিন হু হু করে বাড়ছে সংক্রমনের সংখ্যা। বিভিন্ন দলের নেতা-নেত্রীদের শরীরে এই ভাইরাস হানা দিতে শুরু করেছে যা নিঃসন্দেহে চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলাবাসীর কাছে। একাংশের দাবি, লকডাউন পরিস্থিতি কিছুটা শিথিল হতে না হতেই বিধানসভা নির্বাচনকে পাখির চোখ করে তৃণমূল এবং বিজেপি সকলেই রাস্তায় নেমে পড়েছিল। যার কারণে সভা-সমিতির মধ্যে দিয়ে সামাজিক দূরত্ব পালন করা যাচ্ছিল না। ফলে আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। কিন্তু রাজনৈতিক দলের নেতা-নেত্রীদের কাছে কি আগে নির্বাচন? মানুষ যখন বিপদে, তখন তারা কেন বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ মেনে সামাজিক দূরত্ব পালন করলেন না? যদি তারা একটু সাবধানতা পালন করতেন, তাহলে তো আজকে বালুরঘাট সহ দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায় এই পরিস্থিতি হত না! জানা গেছে, দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা তৃণমূল যুব কংগ্রেসের সভাপতি, শ্রমিক সংগঠনের নেতা, ব্লক তৃণমূলের কয়েকজন নেতা এমনকি কুমারগঞ্জের তৃণমূল বিধায়ক পর্যন্ত করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। অন্যদিকে সোমবার কংগ্রেসের জেলা সভাপতি এবং ছাত্র পরিষদের জেলা সভাপতির করোনা পজেটিভ রিপোর্ট এসেছে। আর এই ঘটনা থেকেই রীতিমতো আতঙ্ক বৃদ্ধি পাচ্ছে নানা মহলে। লকডাউন পরিস্থিতি কিছুটা শিথিল হওয়ার পর প্রতিটি রাজনৈতিক দল দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায় ময়দানে নেমে তাদের রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করেছে। যার কারণেই আজ গোটা জেলার এই দূরাবস্থা বলে দাবি করছেন বিশেষজ্ঞরা। তাহলে কি 2021 এর বিধানসভা নির্বাচন তাদের কাছে প্রধান বিষয় হয়ে গেল? যে মানুষ সুরক্ষিত থাকলে ভোটকক্ষে গিয়ে তাদের ভোটদান করতে পারতেন, সেই মানুষের জীবনের কথা না ভেবে করোনা ভাইরাস বৃদ্ধি করে তারা যে কাজ করলেন, তা কি ডেকে বিপদ আনল না? এদিন এই প্রসঙ্গে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা তৃণমূলের সভানেত্রী অর্পিতা ঘোষ বলেন, “আমরা হাতেগোনা কয়েকটি কর্মসূচি করেছি। সমস্ত নিয়ম মেনে সামাজিক দায়িত্ব পালন করে করেছি। সকল নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছি, এখন রাজনীতি করার সময় নয়। বিপদে মানুষের পাশে থাকতে হবে। আমার অফিস বন্ধ করে দিয়েছি। নেতাকর্মীদের সঙ্গে ভিডিও কলে কথা বলছি।” আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - এদিকে এই ব্যাপারে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা বিজেপির সভাপতি বিনয় বর্মন বলেন, “বর্তমান পরিস্থিতিতে ঘরে বসেই কাজ করা হচ্ছে। ভার্চুয়াল সভার উপর আমরা বেশি জোর দিয়েছি। কিন্তু এখন সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার কারণে বাড়ির সামনে দাঁড়িয়েই নেতাকর্মীরা কর্মসূচি পালন করছেন।” তবে এই জেলায় এখনও পর্যন্ত বামেদের কোনো নেতাকর্মী করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হননি। এদিন এই প্রসঙ্গে বালুরঘাটের বাম বিধায়ক আরএসপির বিশ্বনাথ চৌধুরী বলেন, “এখনও আমাদের দলের কোনো নেতাকর্মী আক্রান্ত হননি। নীচুতলার কেউ আক্রান্ত হয়েছেন কিনা, সেই বিষয়ে জানা নেই। সবাইকে সচেতন থাকতে ও সাবধানে কাজ করতে বলেছি।” তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যদি দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায় রাজনৈতিক দলগুলো একটু সচেতন থাকত, লকডাউন হওয়ার পর যদি তারা সেভাবে রাস্তায় না নামত, তাহলে আজকে জেলার এই পরিস্থিতি হত না। যখন কলকাতা সহ রাজ্যের একাধিক জেলায় এমনকি দক্ষিণ দিনাজপুরের পাশের জেলা মালদহে করোনা ভাইরাস হু হু করে বাড়ছে, তখন বেশ ভালো অবস্থাতেই ছিল গোটা দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা। কিন্তু লকডাউন পরিস্থিতি স্থিতিশীল হওয়ার পরেই রাজনৈতিক দলগুলো ময়দানে নামতে না নামতেই নেতাকর্মীদের শরীরে করোনা ভাইরাস হানা দিতে শুরু করেছে। আর যত দিন যাচ্ছে, ততই তা বৃদ্ধি হচ্ছে। তাই এখন জনসাধারণ প্রতিটি রাজনৈতিক দলের কাছে একটাই আবেদন জানাচ্ছেন, বর্তমান সময়ে রাজনীতি দূরে থাক। মানুষের স্বার্থে সভা-সমিতি বন্ধ করে বাড়িতে থেকেই মানুষের উপকার করুন জেলার শাসক থেকে বিরোধী নেতারা। তবে রাজনীতি বড় বালাই। ভোটে জেতা, ক্ষমতা দখল, 2021 এর নির্বাচন, এই সমস্ত কিছু এখন পাখির চোখ শাসক থেকে বিরোধী নেতাদের কাছে। ফলে মানুষের জীবন তাদের কাছে কতটা গুরুত্বপূর্ণ, তা নিয়ে একটা বড় সংশয় তৈরি হয়েছে জেলাজুড়ে। তবে পরিস্থিতি যখন বেগতিক হচ্ছে, তখন কিছুটা হলেও সাবধানতা অবলম্বন করছেন রাজনৈতিক দলের নেতা কর্মীরা। কিন্তু এই সাবধানতা কতদিন অটুট থাকে এবং তার ফলে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায় কতটা কুপোকাত করা যায় করোনা ভাইরাসকে, তার দিকেই নজর থাকবে সকলের। আপনার মতামত জানান -