প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট –  তৃণমূল কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে যোগদান করার পর থেকেই প্রাক্তন দলের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক মন্তব্য করতে দেখা যাচ্ছে শুভেন্দু অধিকারীকে। বিজেপিতে যোগদান করে প্রথম সভা থেকেই আগামী দিনে রাজ্যে বিজেপি সরকার প্রতিষ্ঠিত হবে বলে দাবি করেছিলেন তিনি। এমনকি তৃণমূলের পক্ষ থেকে সেই দাবি নস্যাৎ করা হলে তৃণমূল নেতা সৌগত রায় এবং ফিরহাদ হাকিমকে ভোটের গণনার দিন নিজের বাড়িতে আমন্ত্রণ জানাতে দেখা গিয়েছিল প্রাক্তন তৃণমূল কংগ্রেস নেতা তথা বর্তমান নন্দীগ্রাম বিধানসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী শুভেন্দু অধিকারীকে।

তবে সেই সময় যে তাকে বিজেপি প্রার্থী করবে, এমন কিছুই জানা যায়নি। কিন্তু তারপর রাজ্য রাজনীতিতে অনেক জল গড়িয়ে গেছে। শুভেন্দু অধিকারীকে জবাব দিতে নন্দীগ্রাম বিধানসভার প্রার্থী হয়েছেন তৃণমূল নেত্রী তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ে। অন্যদিকে বিজেপির পক্ষ থেকে সেই নন্দীগ্রামে প্রার্থী করা হয়েছে শুভেন্দু অধিকারীকে। আর প্রার্থী হওয়ার পরেই তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে এখানে পরাজিত করবেন বলে রীতিমতো চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী।

আজ মনোনয়নপত্র পেশ করতে চলেছেন তিনি। আর তার আগেই আগামী ভোট গননার দিন তার বাড়িতে মিষ্টি খাওয়ার আমন্ত্রণ জানালেন নন্দীগ্রামের বিজেপি প্রার্থী শুভেন্দু অধিকারী। স্বাভাবিক ভাবেই তার এই আমন্ত্রণকে কেন্দ্র করে এখন রাজ্য রাজনীতির চর্চা ক্রমশ ঊর্ধ্বমুখী।প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, আজ সকালে নন্দীগ্রামের সিংহবাহিনী মন্দিরে পুজো দেন তিনি। তারপর সেখান থেকে জানকীনাথ মন্দিরে উপস্থিত হন বিজেপি প্রার্থী শুভেন্দু অধিকারী।

প্রতিবারের মত এবারেও সেখানে যজ্ঞের আহুতি দিয়ে মনোনয়নপত্র করতে হলদিয়ার উদ্দেশ্যে রওনা দেন তিনি। আর হলদিয়া ষতে উপস্থিত হয়েই মনোনয়নপত্র পেশের আগে একটি সভায় যোগ দেন বিজেপি প্রার্থী শুভেন্দু অধিকারী। আর সেখান থেকেই জয়ের ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী বলে মন্তব্য করতে দেখা যায় এই বিজেপি নেতাকে। শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “আমি আত্মবিশ্বাসী। আগামী 2 তারিখ আমার বাড়িতে আসবেন। মিষ্টি খেয়ে যাবেন।”

বিশ্লেষকরা বলছেন, শুভেন্দু অধিকারী এই মন্তব্য করে বুঝিয়ে দিতে চাইলেন, তার কাছে লড়াই কোনো ফ্যাক্টর নয়। তবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যেখানে প্রতিপক্ষ টিমে রয়েছে, সেখানে এই ধরনের মন্তব্য করে যে শুভেন্দু অধিকারী বিজেপি নেতাকর্মীদের উজ্জীবিত রাখতে চাইলেন, এখন সেটাই নানা মহলে গুঞ্জনের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। অনেকে বলছেন, শুভেন্দু অধিকারী এখানকার ভূমিপুত্র। অন্যদিকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিমো।

স্বাভাবিক ভাবেই একসময় তৃণমূল কংগ্রেস দলেই ছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। শাসকদলের হয়ে নানা সময়ে লড়াই করতে দেখা গেছে তাকে। লোকসভা হোক বা বিধানসভা, বিভিন্ন সময়ে তৃণমূলের টিকিটে লড়াই করে বিপুল ভোটে জয়লাভ করেছিলেন তিনি। কিন্তু সেই শুভেন্দু অধিকারী এখন প্রতিপক্ষ ভারতীয় জনতা পার্টির অন্যতম সৈনিক।

সেদিক থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মত হেভিওয়েট মুখকে তিনি কীভাবে পরাজিত করবেন, তা নিয়ে রীতিমত চর্চা চলছে। এই পরিস্থিতিতে মনোনয়ন পেশের আগে সভায় উপস্থিত হয়ে শুভেন্দু অধিকারীর আত্মপ্রত্যয়ী মন্তব্য উজ্জীবিত করতে শুরু করেছে বিজেপি নেতা কর্মীদের। সব মিলিয়ে আগামী ভোট গণনার দিন শুভেন্দু অধিকারীর এই আত্মবিশ্বাসী মন্তব্য সত্যিই বাস্তবে দেখা দেয় কিনা, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।