বিজেপি সম্পর্কে নয়া ভাবনা অধীরের, জোর গুঞ্জন! কলকাতা রাজ্য January 23, 2020 কেন্দ্রীয় স্তরে ভারতীয় জনতা পার্টির প্রধান প্রতিপক্ষ হলেও রাজ্য কংগ্রেসের মূল প্রতিপক্ষ যে তৃণমূল কংগ্রেস, সেই কথা বারবার বলতে শোনা গেছে কংগ্রেসের একাধিক নেতাকে। যার জেরে তৃণমূল কংগ্রেসের তরফ থেকে একাধিকবার বাম-কংগ্রেস এবং বিজেপিকে এক করে প্রতিপন্ন করার চেষ্টা করা হয়েছে। যদিও বর্তমানে কেন্দ্রীয় সরকারের একাধিক সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে সেই তথ্য খারিজ করে এসেছে বামদলগুলো থেকে শুরু করে কংগ্রেস। কিন্তু সম্প্রতি লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা অধীর চৌধুরীর মন্তব্য ঘিরে বাংলায় বিজেপি কংগ্রেস গোপন আঁতাতের প্রসঙ্গকে পুনরায় হাওয়া দিতে শুরু করেছে রাজ্যের শাসক দল। কার্যত মুর্শিদাবাদের বহরমপুরে ভারতীয় জনতা পার্টির কার্যালয় ভাঙচুর করার প্রতিবাদ জানিয়ে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসকে রীতিমত তুলোধোনা করতে দেখা গেছে অধীরবাবুকে। এই বিষয়ে কার্যত ভারতীয় জনতা পার্টির পাশেই অবস্থান নিয়েছেন অধীরবাবু। কিন্তু যখন সংশোধিত নাগরিকায়ন থেকে শুরু করে এনআরসি ইত্যাদি প্রায় প্রত্যেক দিন উত্তপ্ত হচ্ছে লোকসভার অধিবেশন থেকে শুরু করে বিভিন্ন জনসভা। প্রত্যেকদিনই যখন কংগ্রেসের নেতারা এবং কিছু কিছু ক্ষেত্রে অধীর রঞ্জন চৌধুরী ভারতীয় জনতা পার্টির প্রবল বিরোধিতা করে আসছে, সেই সময় রাজ্য বিজেপি নেতাদের মত করেই শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসকে যেভাবে আক্রমন করতে দেখা গেল বহরমপুরের সাংসদকে, তাতে করে বর্তমানে জোর জল্পনা শুরু হয়েছে বাংলার রাজনৈতিক পটভূমিতে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, মুর্শিদাবাদ জেলার 35 নম্বর রাধিকা মোহন সেন রোড এলাকায় অবস্থিত বহরমপুর ভারতীয় জনতা পার্টির কার্যালয় এদিন ব্যাপক পরিমাণে ভাঙচুর চালানো হয়। চলে বেপরোয়া লুটপাট। ঘটনায় অভিযুক্ত করা হয়েছে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসকে। আর এর প্রতিবাদ জানিয়ে বহরমপুর লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ তথা রাজ্যের প্রাক্তন কংগ্রেস সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরী সরাসরি আক্রমণ করে বসেন রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসকে। তিনি বলেন, “রাজনৈতিক দলের অফিস ভাআর অধিকার কারো নেই। রাজনৈতিক বিরোধ আমাদের চলছে, চলবে।” আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - পাশাপাশি ভারতীয় জনতা পার্টির সঙ্গে তাদের যে দীর্ঘদিনের লড়াই রয়েছে, সেকথা প্রকাশ করতেও বাদ দেননি অধীরবাবু। তিনি বলেন, “এই বিরোধ শতাব্দীপ্রাচীন। তবে তার মানে এই নয় যে, আমাকে বিজেপির সদরদপ্তর ভাঙতে হবে।* এই ধরনের ঘটনাকে কার্যত গুন্ডামি বলে কটাক্ষ করেন মুর্শিদাবাদের রবিনহুড নামে খ্যাত অধীর চৌধুরী। তার মতে, এই ঘটনা গুন্ডামি এক ধরনের মস্তানি। তৃণমূল কংগ্রেসের দিকে সরাসরি আক্রমণ করে লোকসভায় কংগ্রেসের বিরোধী দলনেতার মত এই ধরনের কাজ শাসকদলই করতে পারে শাসক দলের কাজ বলে অনুমান করছি। শাসকদল ছাড়া এই কাজ করা সম্ভব নয়। এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। শুধু অধীররঞ্জন চৌধুরী নয়, বহরমপুরে ভারতীয় জনতা পার্টির কার্যালয় ভাঙচুর করার তীব্র প্রতিবাদ জানান বিজেপি নেতারা। এই বিষয়ে ভারতীয় জনতা পার্টির সাধারণ সম্পাদক তপন চন্দ্র বলেন, “শাসক দল তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতিরাই পরিস্থিতি উত্তপ্ত করতে আমাদের জেলার প্রধান দলীয় কার্যালয় ভাঙচুর ও লুটপাট চালিয়েছে। আমরা এর প্রতিবাদ জানাচ্ছি। অবিলম্বে গ্রেপ্তার করতে হবে।” এই বিষয়ে এদেরকে গ্রেফতার না করা হলে গুরুতর আন্দোলনে নামার হুঁশিয়ারি দেন ভারতীয় জনতা পার্টির সাধারণ সম্পাদক। তিনি বলেন, “তা না করা হলে বিক্ষোভ শামিল হব। তবে তৃণমূল কংগ্রেসের থেকে অবশ্য এই ঘটনাকে ভারতীয় জনতা পার্টির অভ্যন্তরীণ গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের বহিঃপ্রকাশ বলে দাবি করা হয়েছে। তবে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, কোনো বিরোধী রাজনৈতিক দলের সঙ্গে নিজেদের মতাদর্শ স্থাপন করা যায় না, রাজনৈতিক শক্তি ও বৃদ্ধি করা যায় না। বরং এই ধরনের ঘটনা ঘটলে শাসকদলের ছবি খারাপ হয়। কারণ মূলত রাজ্য প্রশাসন শাসক দলের হাতে। আর বিরোধী রাজনৈতিক দলের জেলা কার্যালয় ভাঙচুর হওয়া প্রশাসনের ব্যর্থতা প্রকাশ করে। যা রাজ্যের সরকারের কাছে অত্যন্ত লজ্জাস্কর। সেই কারণে একদিকে ভারতীয় জনতা পার্টির জেলা কার্যালয় ভাঙচুর করার মত ঘটনা, অন্যদিকে এই প্রসঙ্গে বিজেপির সহাবস্থান নিয়ে শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসকে অধীর রঞ্জন চৌধুরীর আক্রমণ জোর জল্পনা সৃষ্টি করে দিয়েছে রাজনৈতিক মহলের অন্দরে। আপনার মতামত জানান -