প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – তৃণমূলের পক্ষ থেকে সব সময় দাবি করা হয়, তাদের নেত্রীর নাম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেক্ষেত্রে বিজেপি যতই বাংলার ক্ষমতা দখলের চেষ্টা করুক না কেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি মানুষ ভরসা রাখবে। অর্থাৎ রাজ্যের শাসক শিবির তাদের সর্বময় নেত্রীকে সামনে রেখেই প্রতিটা নির্বাচনের বৈতরণী পার হওয়ার চেষ্টা করে। সেদিক থেকে 2021 এ বিজেপি রাজ্যের ক্ষমতা দখলের চেষ্টা করলেও তাদের মুখ কে! এই প্রশ্ন করে গেরুয়া শিবিরকে বারবার অস্বস্তিতে ফেলে দেওয়ার চেষ্টা করে তৃণমূল বাহিনী। তবে এবার তৃণমূলকে চাপে রাখতে কাঁটা দিয়ে কাঁটা তুলতে চাইছে ভারতীয় জনতা পার্টি।

বিশেষ সূত্র মারফত খবর, বাংলার সকলের প্রিয় মহারাজ তথা দাদা সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে বিজেপির ঘনিষ্ঠতা ক্রমশ বাড়তে শুরু করেছে। ইতিমধ্যেই রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করার পর আজ সোমবার এক অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং সৌরভ গাঙ্গুলীর। যার ফলে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় এবার বিজেপির হয়ে আগামী বিধানসভা নির্বাচনের আগে বাংলায় বড় ভূমিকা পালন করতে পারেন বলে দাবি করছেন একাংশ।

আর এই সমীকরণ যদি বাস্তবের মাটিতে সত্যি হয়ে দাঁড়ায়, তাহলে তৃণমূল কংগ্রেস মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে মুখ করেও খুব একটা ভালো ফল করতে পারবে না বলে দাবি করছেন গেরুয়া শিবিরের একাংশ। বলা বাহুল্য, সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় বাঙালির সকলের আবেগ। তার দাদাগিরি বাংলার যুব সমাজের কাছে উজ্জীবনের এক নতুন অঙ্গ। সেদিক থেকে তৃণমূল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে মুখ করে যতই ভালো ফল করার চেষ্টা করুক না কেন, বাংলার আবেগের কথা মাথায় রেখে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় যদি বিজেপিতে নাম লেখান এবং বিজেপির হয়ে আগামী বিধানসভা নির্বাচনে লড়াই করেন, তাহলে তৃণমূলের অনেকেও শুধুমাত্র আবেগের জন্য সেই সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়কে সমর্থন করবেন বলে দাবি করা হচ্ছে।

একাংশ বলছেন, দশ বছর ধরে একটি সরকার চলার কারণে তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে একটি প্রতিষ্ঠান বিরোধী হওয়া কাজ করছে। সেদিক থেকে এমনিতেই এবার বাংলায় বিজেপির প্রভাব বাড়তে শুরু করেছে। তবে বিজেপির প্রধান দুর্বলতার কারণ, এখনও পর্যন্ত তারা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে কোনো মুখ দাঁড় করাতে পারেননি। বিজেপির পক্ষ থেকে বারেবারেই দাবি করা হয়েছে, নির্বাচনের পর তারা এই ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে। কিন্তু তৃণমূলের পক্ষ থেকে বিজেপির এই দূর্বলতার দিকটি তুলে ধরেই তাদের সঠিক মুখ নেই বলে প্রশ্ন ছুড়ে দেওয়া হচ্ছে।

আর এই পরিস্থিতিতে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় যদি বিজেপিতে নাম লেখান, তাহলে তাকে মুখ করেই তৃণমূলের অস্বস্তি বাড়িয়ে দিতে পারে ভারতীয় জনতা পার্টি বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। কেননা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই দেওয়ার মত বিজেপির পক্ষ থেকে একটি গ্রহণযোগ্য, স্বচ্ছ এবং জনপ্রিয় মুখ প্রয়োজন। আর সেদিক থেকে সবথেকে বিবেচ্য মান মুখ সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। তাই তাকে যদি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে নিজেদের টিমের হয়ে ক্যাপ্টেন হিসেবে নামিয়ে দেয় ভারতীয় জনতা পার্টি, তাহলে বিজেপির সাফল্য যে শুধু সময়ের অপেক্ষা, সেই ব্যাপারে নিশ্চিত একাংশ।

অনেকে বলতে শুরু করেছেন, সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় বিজেপির হয়ে ময়দানে নামলে যুবসমাজের সিংহভাগ বিজেপির দিকে আসতে শুরু করবে। কেননা রাজনীতিতে অতটা সড়গড় নন সৌরভ গাঙ্গুলী। কিন্তু তিনি বিজেপিতে আসলে খেলার মাঠের অনুরাগী থেকে শুরু করে বাংলার সাধারন মানুষ শুধুমাত্র তার টানেই গেরুয়া শিবিরের প্রতি আকৃষ্ট হতে শুরু করবেন। তাই তৃণমূলের নানা নেতা নেত্রীর বিরুদ্ধে যখন দুর্নীতি সহ একাধিক অভিযোগ উঠতে শুরু করেছে, তখন বিজেপি যদি সৌরভ গাঙ্গুলীকে মুখ্যমন্ত্রী মুখ করে দেয়, তাহলে তৃণমূলের চাপ ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাবে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

পাশাপাশি সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় সরাসরি রাজনীতির ময়দানে বিজেপির হয়ে ব্যাটিং করতে শুরু করলে তৃণমূল হিট উইকেটে আউট হয়ে যাবে বলে দাবি গেরুয়া শিবিরের। তবে এখনও পর্যন্ত সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন বা রাজনীতির ময়দানে নামছেন, এরকম কোনো খবর পাওয়া যায়নি। কিন্তু ঘটনার পরম্পরা যেদিকে এগিয়ে যাচ্ছে, তাতে তার সঙ্গে বিজেপি যোগের জল্পনা ক্রমাগত বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছে। সব মিলিয়ে গোটা পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।