প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – আর হাতে কয়েকটা মাস বাকি। তারপরই বাংলার বিধানসভা নির্বাচন হতে চলেছে। ইতিমধ্যেই বাংলায় তৃণমূল কংগ্রেসের সরকারকে সরিয়ে বিজেপির সরকার প্রতিষ্ঠা করতে রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের পক্ষ থেকে বারবার বৈঠক করা হচ্ছে। কোন কোন ইস্যু নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসকে চাপে রাখা যায় এবং মানুষের সমর্থন পাওয়া যায়, তার জন্য ব্লু প্রিন্ট তৈরি করছে ভারতীয় জনতা পার্টি। বাংলার সব থেকে শ্রেষ্ঠ উৎসব শারদ উৎসব। তাই এবার সেই শারদ উৎসবকে পাখির চোখ করেই দর্শনার্থীদের বিজেপি পরিবারের সদস্য করতে পারায় পারায় কাউন্টার তৈরি করার পরিকল্পনা নিল পদ্ম শিবির।

একাংশ বলছেন, ইতিমধ্যেই উত্তরপ্রদেশে দুর্গাপুজো নিয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে সরব হতে দেখা গেছে তৃণমূল কংগ্রেসকে। যেখানে বিজেপি দুর্গাপুজোর সময় ছুটি দিচ্ছে না বলেও অভিযোগ করা হচ্ছে। স্বাভাবিকভাবেই এই ঘটনায় কিছুটা হলেও কোণঠাসা ভারতীয় জনতা পার্টি। কিন্তু সামনেই বিধানসভা নির্বাচনের আগে দুর্গাপূজার সময় দর্শনার্থীদের নিজেদের দিকে টানতে এবার বিজেপির পক্ষ থেকে পাড়ায় পাড়ায় কাউন্টার করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হল বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।

জানা গেছে, বড় পুজো মণ্ডপ কিংবা যে সমস্ত এলাকায় বেশি ভিড় থাকবে, সেখানে বিজেপির পক্ষ থেকে স্টল তৈরি করা হবে। আর দর্শনার্থীরা গেলেই তাদের হাতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির চিঠি পৌঁছে দেবেন বিজেপির নেতা কর্মীরা।শুধু তাই নয়, বিজেপির সদস্য হওয়ার জন্য পুজোর সময় পাড়ায় পাড়ায় বিজেপির পক্ষ থেকে থিম সং বাজানো হবে বলেও খবর। অর্থাৎ বাংলার শ্রেষ্ঠ উৎসব শারদ উৎসবকে মাথায় রেখে বিজেপি দুর্গাপুজোর পর বাংলায় যে ভোট উৎসব আসতে চলেছে, সেখানে যাতে সকলে শামিল হয় এবং ভারতীয় জনতা পার্টির দিকে যাতে সকলের সমর্থন থাকে, তার জন্যই এই উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে বিজেপির তরফে।

বিজেপির একাংশ বলছেন, ইতিমধ্যেই কেন্দ্রের পক্ষ থেকে রাজ্য বিজেপিকে টার্গেট বেঁধে দেওয়া হয়েছে যে, তিন কোটি সদস্য সংগ্রহ করতে হবে। কিন্তু তা যে খুব একটা সহজ ব্যাপার নয়, তা ভালোই উপলব্ধি করতে পেরেছে রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব। আর তাই শারদ উৎসবকে সামনে রেখে বাংলার মানুষকে বিজেপির দিকে টানতে এবং বিজেপির সদস্য সংগ্রহ অভিযান সফল করতে গেরুয়া শিবিরের পক্ষে থেকে এইরকম অভিনব উদ্যোগ নেওয়া হল। কেননা এই উদ্যোগের মাধ্যমে উৎসব মুখর জনসাধারণকে আরও বেশি করে বিজেপিকে টানার চেষ্টা করবেন পদ্ম শিবিরের নেতারা। আর তার ফলেই সাফল্য মিলবে বলে দাবি করছেন একাধিক বিজেপি নেতৃত্ব।

এদিন এই প্রসঙ্গে রাজ্য বিজেপি সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু বলেন, “পুজোর সময় সারা রাজ্যজুড়ে হাজারের বেশি বুক স্টল থাকবে. সেখানে এবং বিভিন্ন জায়গায় আলাদা কাউন্টার করে দর্শনার্থীদের আমরা আবেদন জানাব। বিজেপি পরিবারের সদস্য হওয়ার জন্য মিসড কল করেও ফর্ম ফিলাপ করে সদস্য করা হবে। দর্শনার্থীদের হাতে লিফলেট দেওয়া হবে। প্রধানমন্ত্রীর চিঠি থাকবে। কেন্দ্রীয় সরকার কি কি জনকল্যাণমূলক কাজ করছে, তার উল্লেখ থাকবে সেই চিঠিতে।” রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আগামী বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের মুখ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেদিক থেকে বিজেপির পক্ষ থেকে কে মুখ হবেন, তা এখনও চূড়ান্ত করা হয়নি।

অমিত শাহ বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্বকে জানিয়ে দিয়েছেন, বিধানসভা নির্বাচনের আগে তিনি গোটা বাংলার সমস্ত ব্যবস্থা তদারকি করবেন। তবে পুজোর মধ্যে বিজেপির পক্ষ থেকে আরও বেশি করে সদস্য সংগ্রহ অভিযান সফল করতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির চিঠি বাংলার মানুষের হাতে তুলে দিয়ে গেরুয়া শিবির মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তৃণমূল কংগ্রেসকে আরও বেশি চাপে রাখার কৌশল নিল বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা। সব মিলিয়ে শারদ উৎসবের পুণ্যলগ্নে বিজেপির পক্ষ থেকে নিজেদের সংগঠনকে বাড়ানোর জন্য এই উদ্যোগ কতটা সফলতা পায়, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।