এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > বিজেপির পথেই মমতা! সৌরভকে নিয়ে গদগদ দিদিমণি, প্রবল খোঁচা বিজেপির!

বিজেপির পথেই মমতা! সৌরভকে নিয়ে গদগদ দিদিমণি, প্রবল খোঁচা বিজেপির!


 

প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট- সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়কে নিয়ে আহ্লাদে গদগত হয়ে যাচ্ছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এক সময় তৃণমূলের অনেক নেতাই বলেছেন, সৌরভ নাকি বামপন্থী ঘরের ছেলে। বিজেপি যখন তাকে ত্রিপুরা রাজ্যের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর করেছে, তখন তাকে যা ইচ্ছে তাই বলে আক্রমণ করেছেন তৃণমূলের একের পর এক মুখপাত্ররা। আবার সেই সৌরভকেই কিছুদিন আগে শিল্প টানতে বিদেশে নিয়ে গিয়ে সেখান থেকে সৌরভবাবু লগ্নি করবেন বলে তার মুখ দিয়ে বলতে বাধ্য করিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। বিরোধীদের দাবি এমনটাই।

আর এসবের মাঝেই এবার রাজ্যে যে ঘটা করে, বলা ভালো টাকা নষ্ট করেই এক প্রকার বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন শুরু হলো, সেখানে আবার সেই সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়কে বড় দায়িত্ব দিয়ে বসলেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি ঘোষণা করলেন যে, সৌরভ তোমাকে বাংলার ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডরের দায়িত্বটা নিতে হবে। নিঃসন্দেহে এটা বাংলা, বাঙালি তথা গোটা রাজ্যবাসীর কাছে অত্যন্ত খুশির খবর। কিন্তু যে বিজেপিকে দিনরাত গালিগালাজ করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, সেই বিজেপির দেখানো পথেই তো হাঁটতে হলো তাকে।

কিন্তু কেন এইরকম প্রশ্ন উঠছে? এই প্রশ্ন উঠছে, তার কারণ, তৃণমূলের নেতারা যখন ত্রিপুরার ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর সৌরভ গাঙ্গুলীকে করা হয়, তখন অনেক বড় বড় কথা বলেছিলেন। অনেকে তো এটাও বলতে ছাড়েননি যে, সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়কে নাকি বিজেপি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মুখ করে ভবিষ্যতে এগোবে! কিন্তু সেরকম কোনো কিছুই দেখা যায়নি। উল্টে বাংলার মহারাজাকে কি করে নিজেদের দিকে টানা যায়, কি করে তাকে সবকিছু দিয়ে খুশি রাখা যায়, তার চেষ্টা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শুরু করে দিয়েছিলেন। আর আজ বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনের মঞ্চ থেকে সেই অতীতে কটাক্ষ করা সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের কাঁধেই তিনি বাংলার ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডরের দায়িত্বটা দিয়ে দিলেন। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, দায়িত্ব তো দিলেন। কিন্তু সেই দায়িত্বটা আবার শাহরুখ খান বা দীপক অধিকারী ওরফে দেবের মত হবে না তো? সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় তো একাধিক দায়িত্বে রয়েছেন। ফলে বাংলায় নিজের রাজ্যের উন্নতির জন্য তিনি সময় দিতে পারবেন তো? তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে বিরোধীরাও।

ইতিমধ্যেই গোটা বিষয়ে খোঁচা দিতে শুরু করেছে রাজ্যের বিরোধী দল ভারতীয় জনতা পার্টি। তাদের দাবি, তৃণমূল এবং বাংলার মহারাজার মধ্যে হয়ত দেওয়া-নেওয়ার সম্পর্ক তৈরি হয়েছে। কিছুদিন আগেই মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বিদেশে গিয়ে সেখান থেকে বাংলায় বিনিয়োগের কথা বলে লোক হাসিয়েছেন বাংলার মহারাজা। তার কাছ থেকে এটা বাংলার মানুষ আশা করে না। কিন্তু বাংলাতে থেকেই বাংলার মানুষের জন্য ঘোষণা করতে পারতেন। তার জন্য বিদেশ থেকে ঘোষণার কোনো প্রয়োজন ছিল না। আর সব থেকে বড় কথা, ঘোষণা তো হয়েছে, মুখ্যমন্ত্রীও তো অনেক কিছু ঘোষণা করেন। কিন্তু তার বাস্তবায়ন হয় কি? তাই সৌরভবাবু যে ঘোষণা বিদেশ থেকে করেছেন, তার বাস্তবায়ন কবে হবে? সেটা নিয়েও একটা প্রশ্ন রয়েছে। আর এসবের মধ্যেই তিনি আবার বাংলার ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হয়ে গেলেন, দিদিমণি বলে দিয়েছেন যখন, তখন তিনি দায়িত্বও নিয়ে নিলেন। ফলে ক্ষমতা ভোগ না করে বাংলার সন্তান অন্তত বাংলার জন্য কাজ করবেন। দিদিমণি যে চুরির রাজত্ব পশ্চিমবঙ্গে শুরু করেছেন, তা থেকে তাকে সরিয়ে আনতে অন্তত পরামর্শ দেবেন এই ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর। এমনটাই আশা করছে গেরুয়া শিবির।

পর্যবেক্ষকদের মতে, তৃণমূলের বিরুদ্ধে, তৃণমূলের স্বেচ্ছাচারী শাসনের বিরুদ্ধে লড়াই করা তো আর চারটি খানি কথা নয়। যারা সোনার চামচ মুখে নিয়ে জন্মেছেন, তারা সেই লড়াই করতে পারবেন না। মাটির হয়ে যারা চিন্তা-ভাবনা করেন, যারা মাটির মানুষ, তারাই মেরুদন্ড সোজা রেখে এই তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াই করতে পারবেন। ফলে অনেকে অনেক বড় বড় জায়গা পেয়ে যাচ্ছেন। কেউ হয়ে যাচ্ছেন ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর, কিন্তু এক্ষেত্রে মানুষের কোনো লাভ হচ্ছে না। যে তিমিরে পশ্চিমবঙ্গের মানুষ পড়ে থাকছেন, যে বেকারদের চোখের জল পড়ছে, তারা সেই তিমিরাই পড়ে থাকবেন। ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডরের আক্ষরিক অর্থ সেদিনই পশ্চিমবঙ্গের মানুষ বুঝতে সক্ষম হবে, যেদিন গোটা তৃণমূল সরকারকে উৎখাত করে রাজনৈতিকভাবে বঙ্গোপসাগরে নিক্ষেপ করবেন পশ্চিমবঙ্গের জনতা জনার্দন। দিনের শেষে তেমনটাই বলছেন রাজনৈতিক সমালোচকরা।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!