ব্যবসায়ীদের সহজ শর্তে ব্যাঙ্ক ঋণ দিতেও উঠছে ঘুষের অভিযোগ, জেনে নিন! উত্তরবঙ্গ রাজ্য October 19, 2020 প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – করোনা সংক্রমনের ফলে দেশজুড়ে ব্যবসা-বাণিজ্য যথেষ্ট বিধ্বস্ত হয়েছে। ক্ষতির মুখে পড়েছেন বহু ব্যবসায়ী। তাদের আর্থিক সমস্যার কিছুটা সমাধান করতে ও করোনা কালে ব্যবসা বৃদ্ধি করতে ব্যবসায়ীদের সহজ শর্তে ঋণ দেবার কথা কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে তাদের করোনা প্যাকেজে ঘোষণা করা হয়েছিল। কিন্তু এই প্রকল্পে ঋণ চাওয়ায়, ঘুষ দিতে হচ্ছে বলে শিলিগুড়ির জনৈক ব্যবসায়ী জিতেন জানা অভিযোগ জানালেন এক রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের বিরুদ্ধে। পোশাকে প্রিন্টের কাজ করা ব্যবসায়ী জিতেন জানা শিলিগুড়ির একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের বিরুদ্ধে এমনই গুরুতর অভিযোগ নিয়ে এলেন। ব্যবসায়ী জিতেন জানা জানিয়েছেন যে, গত কুড়ি বছর ধরে তিনি টি-শার্ট, জার্সি ইত্যাদি পোশাকে প্রিন্টের কাজ করছেন। ম্যানুয়াল পদ্ধতিতেই এতকাল তিনি এই কাজ করে আসছিলেন। কিন্তু ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে কাজ করতে গেলে সময় ও পরিশ্রম দুটোই বেশি খরচ হয়। সম্প্রতি করোনা পরিস্থিতির কারণে ব্যবসায় ঘাটতি এসেছে, অন্যদিকে বাজারে প্রতিযোগিতা অত্যাধিক ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। এ কারণে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে তিনি উন্নত আধুনিক মেশিন কেনার সিদ্ধান্ত নেন। এ কারণে, তিনি ঋণের জন্য আবেদন জানিয়েছিলেন। এ বিষয়ে তিনি আরও জানিয়েছেন যে, জেলা শিল্প কেন্দ্রের পরামর্শমতো তিনি সমস্ত কিছু করেছিলেন। প্রসঙ্গত, গত ১৭ ই মে ডিআইসির মাধ্যমে অনলাইনে ১০ লক্ষ টাকা ঋণ পেতে তিনি শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদ চত্বরে থাকা রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট শাখায় আবেদন জানিয়েছিলেন। তিনি অভিযোগ করেছেন, ” ১ অক্টোবর পরিদর্শনের সময় ম্যানেজার বলেন, এই স্কিমে কেন আবেদন করেছেন। তাঁকে জানাই এই প্রকল্পে সরকারি অনুদান রয়েছে। তখন তিনি দাবি করেন, ওই অনুদানের অর্ধেক টাকা তাঁকে দিতে হবে। আমি রাজি না-হওয়ায় তিনি ঋণ অনুমোদন করছেন না।’’ আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - তবে, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের সেই শাখার ম্যানেজার মণীশ কুমার ব্যবসায়ী জিতেন জানার এই অভিযোগকে সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছেন। এ প্রসঙ্গে তাঁর বক্তব্য, ” ইচ্ছে মতো কেউ কোনও অভিযোগ করতে পারেন। অভিযোগ ভিত্তিহীন। কিন্তু অভিযোগ তুলে প্রভাব খাটিয়ে ঋণ অনুমোদন করিয়ে নেবেন, সেটা কখনওই হয় না।’’ ম্যানেজার মণীশ কুমার জানিয়েছেন যে, এই ব্যাংক শাখার যিনি ঋণ আবেদনকারীদের প্রকল্প পরিদর্শনের কাজ করেন। তিনি অসুস্থ হয়ে পড়ায় ব্যাংকের অপর একজন কর্মীকে সঙ্গে নিয়ে তিনি নিজেই তাঁর কারখানা দেখতে গিয়েছিলেন। সেখানে গিয়ে বেশ কিছু অসংগতি তাঁর নজরে পড়ে ছিল। এমনকি তিনি বুঝতে পেরেছিলেন যে, তাঁর কারখানায় কাজ বন্ধ হয়ে গিয়েছে। তিনি আরও জানিয়েছেন যে, করোনা পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় সরকার ব্যবসায়ীদের সাহায্যে যে প্রকল্পের কথা ঘোষণা করেছে, এই বিষয়টি সেই প্রকল্পের মধ্যে পড়ে না। তবুও তিনি এ বিষয়ে সব কিছু ঠিকঠাক করে নিতে পরামর্শ দিয়েছিলেন তাঁকে। কিন্তু, তিনি অভিযোগ করেছেন যে, ঠিক ঠাক না করে নিজের প্রভাব খাটিয়ে জায়গা থেকে ফোন করে ঋণ অনুমোদনের চেষ্টা করেছেন ব্যবসায়ী জিতেন জানা। শেষ পর্যন্ত, এই রাষ্ট্রয়ত্ত ব্যাংকের নামে অভিযোগ জানিয়ে গত মঙ্গলবার শিলিগুড়ির পানিট্যাঙ্কি মোড় পুলিশ ফাঁড়িতে অভিযোগ করলেন ব্যবসায়ী জিতেন জানা। তাঁর এই অভিযোগ প্রসঙ্গে শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনার ত্রিপুরারী অথর্ব জানিয়েছেন, ” অভিযোগ দেখে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ অন্যদিকে এই ঘটনা প্রসঙ্গে জেলা শিল্প কেন্দ্রের শিল্প উন্নয়ন আধিকারিক বিশ্বজিৎ গোস্বামীর বক্তব্য, ” ব্যাঙ্ক কাকে ঋণ দেবে, সেটা তাদের বিবেচনার বিষয়। তবে যারা উদ্যোগী, তাদের আবেদন করতে সহায়তা করা হয়। ডিআইসি দফতর স্পনসর হিসেবে বা প্রকল্পের নথিভুক্ত করে সেটা ব্যাঙ্কের কাছে পাঠিয়ে থাকে।’’ আপনার মতামত জানান -