এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > সিএবি বিক্ষোভের আগুনে নেতৃত্ব দেওয়ার অভিযোগ অভিনেতা বাদশা মৈত্রর বিরুদ্ধে! পাল্টা দিলেন তিনিও

সিএবি বিক্ষোভের আগুনে নেতৃত্ব দেওয়ার অভিযোগ অভিনেতা বাদশা মৈত্রর বিরুদ্ধে! পাল্টা দিলেন তিনিও


 

সংসদের দুই কক্ষ থেকে পাস হওয়ার পরে রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের সইয়ের পরে আইনে পরিণত হয়েছে সিটিজেনশিপ আমেন্ডমেন্ট বিল। কিন্তু ইতিমধ্যেই দেশের উত্তর-পূর্ব অঞ্চলের রাজ্যগুলির পাশাপাশি বাংলাতেও এর প্রতিবাদে বিভিন্ন জায়গায় সহিংস আন্দোলনে নামতে দেখা যায় একাধিক সংগঠনকে। মালদা থেকে শুরু করে মুর্শিদাবাদ, উত্তর 24 পরগনা, হুগলি, হাওড়া, শিয়ালদহ, মহানগরী কলকাতা সর্বত্রই আন্দোলনে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়তে থাকে।

রেলস্টেশনে অবরোধ, মুর্শিদাবাদের লালগোলাতে ট্রেনে আগুন দেওয়া, বাস জ্বালিয়ে দেওয়া, রাস্তায় আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন, একাধিক ঘটনায় রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি কার্যত চ্যালেঞ্জের মুখে দাঁড়িয়ে যায়। কিন্তু এসব কিছুর মধ্যেও আন্দোলন উত্তরোত্তর হিংস্র হতে থাকে।

এরকম পরিস্থিতিতে যখন রাজ্যের একাধিক সুশীলসমাজের ব্যক্তিত্ব অপর্ণা সেন থেকে শুরু করে শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়, বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত থেকে শুরু করে শুভাপ্রসন্নদের তরফ থেকে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে এবং শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করতে ও রাজ্যের শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার আবেদন করা হয়। সেই সময় বিশিষ্ট অভিনেতা তথা বামপন্থী যুব নেতা হিসেবে পরিচিত বুদ্ধিজীবী সমাজের একজন বাদশা মৈত্রের বিরুদ্ধে রীতিমতো আন্দোলনে উপস্থিত থেকে হিংসা গতিবিধির নেতৃত্ব দেওয়ার অভিযোগ উঠতে থাকে সোশ্যাল মিডিয়ার বিভিন্ন জায়গায়।

গত শনিবার সিটিজেনশিপ আমেন্ডমেন্টের বিরুদ্ধে সারগাছি স্টেশন চত্বরে ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল। আর সেখানেই বিক্ষোভকারীদের মধ্যে ফোন হাতে দেখা যাচ্ছিল বাদশা মৈত্রকে। যে ছবি ফেসবুক থেকে শুরু করে অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়াতে ভাইরাল হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই বাদশা মৈত্রকে ঘিরে রীতিমতো সমালোচনার ঝড় উঠতে শুরু করে। কি কারণে তিনি ওখানে উপস্থিত ছিলেন! সেই বিষয়ে কোনোরকম খোঁজ খবর না নিয়ে বিভিন্ন জায়গা থেকে তার উদ্দেশ্যে কটুক্তি, অশ্লীল মন্তব্য এবং রীতিমত প্রাণে মেরে ফেলার হুমকিও আসতে থাকে বলে খবর।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

পরবর্তীতে সাংবাদিকদের তরফ থেকে বাদশা মৈত্রের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, “বহরমপুর, ডোমকল এলাকায় ডিওয়াইএফআইয়ের জেলা সম্মেলনে যোগ দেওয়ার জন্য রওনা দিয়েছিলাম। কিন্তু রাস্তাতেই সারগাছির কাছে বিক্ষোভ প্রদর্শন এবং পথ অবরোধ চলতে থাকায় সেখানে নেমে আমি প্রথমে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করি দেখি যে, কোনোভাবে গাড়ি নিয়ে সেই এলাকা পার করা যায় কিনা।

তারপর সেটা না হওয়ায় ডিওয়াইএফআইয়ের ছেলেদেরকে ফোন করি। ওরা এসে আমায় গ্রামের ভেতরে অন্য রাস্তা দিয়ে বের করে নিয়ে যায়। ওই যে আমি ওখানে দাঁড়িয়ে কথা বলছিলাম, আর আমার মাথায় একটা টুপি ছিল। সেইসব জুড়েই এইভাবে দেখানো হয় যে আমি সেই বিক্ষোভে নেতৃত্ব দিচ্ছি এবং সেটাকে কেন্দ্র করে অসংখ্য কদর্য মন্তব্য করা হয় সোশ্যাল মিডিয়ায়। এমনকি আমাকে শেষ করে দেওয়ার হুমকিও দেওয়া হয়।”

এদিন সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজের বিরুদ্ধে হওয়া অপপ্রচারের বিরুদ্ধে তিনি সাইবার সেলে অভিযোগ জানিয়েছেন বলেও জানান বাদশা মৈত্র। শুধু তাই নয়, সিটিজেনশিপ আমেন্ডমেন্ট বিলের বিরোধিতা করে এদিন কেন্দ্রীয় সরকারকে একহাত নেন বাদশা মৈত্র। স্পষ্টতই তিনি বলেন, “আমি ভীষণভাবে ধর্মীয় মেরুকরণের বিরুদ্ধে। কিন্তু যেভাবে আন্দোলন চলছে, সেটা তাদেরই ভীত শক্ত করছে, যারা এই সিএবির নেপথ্যে। রাজ্যের অন্যান্য বুদ্ধিজীবীদের পাশাপাশি এদিন বাদশা মৈত্রও আন্দোলনের নামে যে কোনো ধরণের ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ থেকে মানুষদেরকে বিরত থাকার অনুরোধ করেন। তিনি বলেন, “প্রতিবাদ হোক গণতান্ত্রিক পথে। শান্তিপূর্ণভাবে ট্রেন জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে নয়। ঠান্ডা মাথায় ভাবুন।”

পাশাপাশি যেভাবে বাদশাবাবুর মাথার টুপি ঘিরে ফেসবুক এবং বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়াতে বিভিন্ন রকমের উস্কানিমূলক কথা ছড়িয়ে পড়ে। সেই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “পোশাক খাদ্যাভাসের সঙ্গে ধর্মকে গুলিয়ে ফেলা উচিত নয়। যারা এসব করছেন, তাদের চিন্তা ভাবনা দৈন, রসবোধের অভাবের বাইরে। বোধহয় তারা কিছুই ভাবতে পারছে না। এটা তাদের দুর্ভাগ্য।”

রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় যেভাবে বৈষম্যের ভিত্তিতে সোশ্যাল মিডিয়ার বিভিন্ন জায়গা থেকে অপপ্রচার বা কুরুচিকর মন্তব্য ছুটে আসছে, অচিরেই এইসব না থামানো হলে রাজ্যের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি এবং পরিস্থিতি আরও ঘোরালো হতে পারে।

ইতিমধ্যেই অবশ্য রাজ্য প্রশাসনের তরফ থেকে আন্দোলনকারীদের কড়া বার্তা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আন্দোলনের নামে কোনোরকম অগ্নিসংযোগ বা ভাঙচুর যে সরকার মেনে নেবে না, তা স্পষ্ট করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু যেভাবে বিভিন্ন ছবি বা ব্যক্তির নামে সোশ্যাল মিডিয়া বা অন্যান্য জায়গায় উত্তেজনা ছড়াচ্ছে, তা যথেষ্ট উদ্বেগের বিষয় বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!