এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > চূড়ামনির মন্ত্রিত্ব যাওয়া নিয়ে দলের মধ্যেই উঠছে প্রশ্ন

চূড়ামনির মন্ত্রিত্ব যাওয়া নিয়ে দলের মধ্যেই উঠছে প্রশ্ন


মঙ্গলবার থেকেই সময় খুব একটা ভালো যাচ্ছে না চূড়ামনি মাহাতোর। ঝাড়গ্রামের আমলাচটির গ্রামে ইতিমধ্যেই খবর পৌছেছে যে রাজ্যের মন্ত্রীত্ব খুইয়েছেন তিনি।আর তার পর থেকেই তাঁর এই বাড়িতে ভিড় কমতে শুরু করেছে লোকজনের। এসেছে কয়েকজন তবে  সহানুভুতি দেওয়ার জন্যে। এবারে জঙ্গলমহলের জেলাগুলিতে খুব একটা ভালো ফল করেনি তৃনমূল। অনেকে মনে করছেন, ঝাড়গ্রামে দলের খারাপ ফলাফলের জন্যই মন্ত্রীত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হল চূড়ামনি মাহাতোকে। তবে এনিয়ে প্রকাশ্যে মুখ খুলেছেন দলের অনেক কর্মী। তাঁদের মতে, “জেলার দায়িত্বে একজন অথচ শাস্তি হল অন্যজনের।” তৃনমূল সূত্রে খবর, 2015 সালের নভেম্বর মাস থেকে 2017 র অক্টোবর পর্যন্ত ঝাড়গ্রাম জেলার তৃনমূল সভাপতির দায়িত্ব সামলান চূড়ামনি মাহাতো। এরপরই সাত মাস আগে এই জেলার তৃনমূলের দায়িত্ব দেওয়া হয় অজিত মাইতিকে। তাহলে শুধু কেন চূড়ামনি মাহাতোর ওপরেই নিমল খাঁড়া?

আরো খবর পেতে চোখ রাখুন প্রিয়বন্ধু মিডিয়া-তে

 

বুধবার পরনে গেঞ্জি ও লুঙ্গি পড়ে প্লাষ্টিকের চেয়ারে নিজের বাড়িতে বসে ছিলেন চূড়ামনি মাহাতো। বারান্দায় বসে তাঁর সাথে গল্প করতে করতে তৃনমূল নেতা হিকিম হেমব্রম বলেন, “মন্ত্রী করেছিল সেন্টার খেলার জন্য। আর যারা হাফে খেলছিল, সেই সব অঞ্চল, ব্লক সভাপতিরা ঠিকঠাক বল সামলাতে না পারলে গোল তো হবেই। এতে সেন্টারে যে খেলছে তাঁর দোষ কোথায়?”

জানা গেছে, এবারের পঞ্চায়েতে ঝাড়গ্রামের চারটি বিধানসভাতেই তৃনমূলের ফল খুব একটা ভালো হয়নি। চূড়ামনির গোপীবল্লভপুরে 23 টি অঞ্চলের মধ্যে তৃনমূল পেয়েছে 15 টি। সুকুমার হাসদার ঝাড়গ্রামে 14 টির মধ্যে শাসকদল পেয়েছে 7 টি। এদিকে দুলাল মুর্মুর নয়াগ্রাম বিধানসভায় 22 টি অঞ্চলের মধ্যে ঘাসফুল শিবিরের ঝুলিতে এসেছে 11 টি। এমনকী শুধু তাই নয়, ঝাড়গ্রাম জেলা পরিষদের 13 জন প্রার্থী নিজেদের অঞ্চলেই জেতাতে পারেনি দলকে। এ প্রসঙ্গে তৃনমূলের জামবনি ব্লক সভাপতি জগদীশ মাহাতো বলেন, “আমার বিরুদ্ধে যুব তৃনমূলের লোকেরা পাইকারি হারে মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছিল। তৃনমূলের ভোট ভাগ হলে তো বিজেপি জিতবেই। নিজেদের গোষ্টীদ্বন্দ্বের জেরেই হারতে হয়েছে আমাদের।” এদিকে চূড়ামনির মন্ত্রিত্ব চলে যাওয়ায় তাঁকে নিয়ে ঝাড়গ্রামের প্রসেনজিৎ দে ফেসবুকে লিখেছেন,  ‘পঞ্চায়েতের সাইড এফেক্ট- চূড়ামনি মাহাতোকে মন্ত্রিসভা থেকে সরালেন দিদিমনি।’ এই পোষ্টেই আবার এক শিক্ষক অপূর্বলাল সামুই লিখেছেন, ‘শুধু একজন কেন , অনেকের জন্য রেজাল্ট খারাপ, তাদের পদাবনতি করা হোক। সর্বোপরি জেলা সভাপতি। তার দায়িত্ব সবথেকে বেশি। অনেক ব্লক প্রেসিডেন্টও আছেন।’

এ প্রসঙ্গে তৃনমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতি বলেন, “এটা সম্পূর্ন প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত। মুখ্যমন্ত্রী এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।আমাদের কিছু জানা নেই।” ঝাড়গ্রাম জেলা পরিষদের প্রাক্তন সভাধিপতি সমায় মান্ডি বলেন, ” পার্থ চট্টোপাধ্যায় যখন ঝাড়গ্রামে এসেছিলেন, তখন দলে পর্যালোচনা হয়েছে। কিন্তু যে যার দায় এড়ানোর কথা বলেছেন। দল আজ কী মূল্যায়ন করল?” তবে যাকে নিয়ে এত কিছু  সেই মন্ত্রীত্ব খোয়ানো চূড়ামনি মাহাতো নিজস্ব ভঙ্গিমায় বলেন, ” মঙ্গলবার দলীয় নির্দেশ পাওয়ার পরই নবান্নে মুখ্যমন্ত্রীর দপ্তরে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছি। জননেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হলেন দলের অভিভাবক।আর আমরা দলের সৈনিক। উনিই আমাকে প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে রাজ্যের মন্ত্রী করেছিলেন। আগামী দিনে তিনি যে দায়িত্ব দেবেন, তাই পালন করব।”

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!