সিএম মমতা, তবে সুপার সিএম কি অভিষেক! ভাইপো রাজের চরম আভাস নবান্নে! তৃণমূল রাজনীতি রাজ্য September 3, 2023 প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-শুধুমাত্র নামেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তৃণমূল দলের সুপ্রিমো এবং রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর ক্ষমতায় রয়েছেন। তবে দল এবং প্রশাসন পরিচালনার ক্ষেত্রে পেছন থেকে কলকাঠি নাড়েন তার ভাইপো অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। যে কারণে বিরোধীরা অভিযোগ করেন, ভাইপোরাজ এবং পরিবারবাদের কারণেই একদিন বিনাশ হবে তৃণমূল কংগ্রেসের। কিন্তু অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, তিনি নাকি প্রশাসনের কোনো সিদ্ধান্তের পেছনে নেই। তবে পেছনে না থাকলেও এবার যে সামনাসামনিই তিনি প্রশাসনকে পরিচালনা করছেন, তা হয়তো স্পষ্ট করে দিলেন তৃণমূলের সেকেন্ড ইন কম্যান্ড। ধুপগুড়ি বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনের প্রচারে গিয়ে তিনি সরাসরি ঘোষণা করলেন, 31 ডিসেম্বরের মধ্যে ধুপগুড়িকে মহকুমা ঘোষণা করা হবে। এখানেই প্রশ্ন, কি করে তিনি এই ঘোষণা করতে পারেন! তাহলে কি সিএম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হলেও, সুপার সিএম অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়!প্রসঙ্গত, এদিন ধুপগুড়ি বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনের প্রচারে যান অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। আর সেখানেই তিনি ঘোষণা করেন, আগামী 31 ডিসেম্বরের মধ্যে ধুপগুড়িকে মহকুমা হিসেবে ঘোষণা করা হবে। কিন্তু অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় তো সরকারের কেউ নন! এমনকি তিনি কোনো বিধায়কও নন। তিনি ডায়মন্ডহারবারের সাংসদ। ফলে মুখ্যমন্ত্রীর অনুপস্থিতিতেই কি করে দলীয় সভা থেকে এত বড় ঘোষণা করে দিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়! অনেকে বলছেন, মুখ্যমন্ত্রীও দলীয় মঞ্চ আর সরকারি মঞ্চের মধ্যে কোনো ভেদাভেদ মানেন না। অনেক সময় দলীয় মঞ্চ থেকেই সরকারি ঘোষণা করে দেন তিনি। হয়তো সেই পথেই হাঁটলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু এখানে একটি পার্থক্য রয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামের আগে মুখ্যমন্ত্রী শব্দ রয়েছে। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের তো সেটা নেই। ফলে তিনি এই ঘোষণা করার অধিকার পেলেন কোথা থেকে! বিরোধীদের কটাক্ষ, যে যাই বলুন না কেন, এটা তো পরিষ্কার যে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এখন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথা মতোই সব সিদ্ধান্ত গ্রহণ করছেন। দল হোক বা প্রশাসন, সবকিছুই পেছনের দরজা দিয়ে পরিচালনা করছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এতদিন তিনি প্রশাসনিক সিদ্ধান্তের কথা প্রকাশ্যে বলতেন না। কিন্তু বিরোধীরা অভিযোগ করত, পুলিশ প্রশাসনকে পরিচালনা করছে ক্যামাক স্ট্রিটের অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের অফিস। সেখান থেকে যেভাবে বলে দেওয়া হচ্ছে, সেভাবেই প্রশাসনকে পরিচালনা করা হচ্ছে। আর এবার ধুপগুড়ির দলীয় সভা থেকে যেভাবে মহাকুমা করার ঘোষণা করে দিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, তাতে স্পষ্ট হয়ে গেল যে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সিএম, তবে সুপার সিএম অভিষেকবাবু। বিশেষজ্ঞদের মতে, বিরোধীদের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়, প্রশাসনিক বৈঠকে বিরোধী জনপ্রতিনিধিরা সামান্য আমন্ত্রণ টুকু পান না। সেখানে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সেই প্রশাসনের কেউ না হয়েও এত বড় ঘোষণা করে দিলেন! আসলে তৃনমূলের আমলে সবটাই চলছে দলীয় উপকরনের আঙ্গিকে। দলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাশ ক্রমশ হালকা হচ্ছে। সবটাই তিনি তুলে দিচ্ছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ওপর। দলের অন্দরে কান পাতলে এমনটাই শোনা যাচ্ছে বলে খবর। আর এবার সেই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় যে সুকৌশলে প্রশাসনের ভেতরেও ধীরে ধীরে প্রবেশ করছেন, তা মহকুমা করার ঘোষণার মধ্যে দিয়ে পরিষ্কার বলেই মনে করছেন একাংশ। তবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এখন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সিদ্ধান্তকে গ্রহণ করে ধুপগুড়িকে ঘোষণা করেন, নাকি বুঝিয়ে দেন যে, তিনি মুখ্যমন্ত্রী আছেন, সুতরাং তার সিদ্ধান্তই শেষ কথা! তবে ভাইপোর কথার ঊর্ধ্বে উঠে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় “সিএম মমতাই শেষ কথা, সুপার সিএম নয়” একথা বলার ক্ষমতা কতটা দেখাতে পারেন, সেদিকে অবশ্যই নজর থাকবে পর্যবেক্ষকদের। আপনার মতামত জানান -