প্রধানমন্ত্রী-মুখ্যমন্ত্রী বৈঠকে বক্তার তালিকায় নেই বাংলা! বৈঠকে নাও থাকতে পারেন মমতা নিজে কলকাতা জাতীয় রাজ্য June 16, 2020 প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – দেশে দ্রুত বাড়ছে করোনা সংক্রমণের হার। লকডাউন কিছুটা শিথিল করে দেওয়া হয়েছে। আর এই পরিস্থিতিতে লকডাউন এবং করোনা পরিস্থিতি নিয়ে প্রতিটি রাজ্যের সঙ্গে বৈঠকে বসতে চলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কিন্তু আশ্চর্যজনক ভাবে প্রধানমন্ত্রীর সাথে ভিডিও কনফারেন্সে বৈঠকে বাংলাকে ডাকলেও, বলার সুযোগ না দেওয়ায় তীব্র চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। জানা গেছে, মঙ্গলবার এবং বুধবার দু’ভাগে বিভিন্ন রাজ্যকে ভাগ করে মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠক করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বুধবারের বৈঠকে বাংলার উপস্থিতির কথা উল্লেখ রয়েছে। কিন্তু নবান্নের কাছে কেন্দ্রের তরফ থেকে যে তালিকা এসে পৌঁছেছে, তাতে বক্তার তালিকায় বাংলার নাম নেই। ফলে বলার সুযোগ না থাকায় বাংলার মুখ্যমন্ত্রীকে সেই বৈঠকে আহ্বান জানালেও, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আদৌ সেখানে উপস্থিত থাকবেন কিনা, তা নিয়ে তৈরি হয়েছে সংশয়। একাংশের প্রশ্ন, যেখানে করোনা পরিস্থিতি মারাত্মক আকার ধারণ করছে, সেখানে বৈঠকে ডেকেও কেন বাংলাকে বলতে দেওয়া হবে না? কেন্দ্রের তরফে এই ব্যাপারে অবশ্য অন্য যুক্তি দেওয়া হচ্ছে। তাদের দাবি, এই নিয়ে ষষ্ঠবার প্রধানমন্ত্রী রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠক করছেন। প্রত্যেকবার কোনো না কোনো মুখ্যমন্ত্রী বলার সুযোগ পেয়েছেন। যারা সুযোগ পান না, তাদের সকলকে প্রধানমন্ত্রীর চিঠি লিখে মতামত জানানোর অনুরোধ করেন। ফোনে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ কথা বলেন। এক্ষেত্রে বৈঠকের দ্বিতীয় দিনে মহারাষ্ট্র, তামিলনাডু, কর্নাটকের করোনা সংক্রমণ বাড়তে থাকায় সেই রাজ্যগুলিকে বলার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি বিহার, উত্তরপ্রদেশকেও বলার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এই সমস্ত রাজ্যগুলোতে যেমন করোনা সংক্রমণ বাড়ছে, ঠিক একইভাবে কলকাতাতেও তো তা বাড়তে শুরু করেছে। তাহলে কেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রীকে সেখানে বক্তার তালিকায় রাখা হল না? আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশ বলছেন, যে সমস্ত বিজেপি বিরোধী রাজ্য আছে, সেই সমস্ত রাজ্যকে একদিনে বৈঠকে ডাকেনি কেন্দ্রীয় সরকার। অর্থাৎ কেন্দ্রের পক্ষ থেকে এই ব্যাপারে সূক্ম পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। যাতে সমবেতভাবে বিরোধীদের প্রশ্নের মুখে প্রধানমন্ত্রী না পড়েন, তার জন্যই এই কৌশল বলে দাবি করছে বিজেপি বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো। তাই এমন পরিস্থিতিতে বলার সুযোগ না থাকায় পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রধানমন্ত্রীর ডাকা এই বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন না বলেই নিশ্চিত বিশেষজ্ঞরা। এদিকে বক্তার তালিকায় বাংলার নাম না থাকায় ইতিমধ্যেই কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে বাম এবং কংগ্রেস। এদিন এই প্রসঙ্গে সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, “খুব দুর্ভাগ্যজনক। বাংলায় করোনা মোকাবিলা নিয়ে অনেক প্রশ্ন আছে। সেই জন্য তো বাংলার কথা শোনার প্রয়োজন ছিল কেন্দ্রের। তাহলে কি ধরে নিতে হবে, বাংলায় কি হচ্ছে, তা নিয়ে কেন্দ্র মাথা ঘামাচ্ছে না। নাকি তারা নিজেদের মত ছাড়া অন্য কিছু শুনতেই চায় না!” একইভাবে এই ব্যাপারে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি সোমেন মিত্র। তিনি বলেন, “করোনা মোকাবিলায় রাজ্যগুলো প্রথম সারিতে থেকে লড়াই করলেও, তাদের কোনো দাবিদাওয়া মানেনি। কেন্দ্র মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে বিরোধী দলগুলোর সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক হলেও, সমস্যার কোনো সুরাহা হয়নি। এখন কোন কোন রাজ্য কথা বলবে, সেটাও তো আলোচনা করে ঠিক হচ্ছে না। গোটা প্রক্রিয়াটিই অর্থহীন হয়ে যাচ্ছে।” বিশেষজ্ঞদের প্রশ্ন, যেখানে সমস্ত রাজ্যকে করোনা মোকাবিলার জন্য বৈঠকে আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে, সেখানে বক্তার তালিকায় কেন বাংলাকে রাখা হবে না? এতে কি বাংলার মুখ্যমন্ত্রী অপমানিত বোধ করবেন না! আর এই অপমান বোধ থেকেই তিনি কেন্দ্রের সেই বৈঠকে তিনি অনুপস্থিত থাকবেন। যার ফলে কেন্দ্রের সঙ্গে রাজ্যের দূরত্ব আরও প্রকট হবে বলেই আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। সব মিলিয়ে এখন পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়, বলার সুযোগ না থাকলেও বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উপস্থিত থাকেন, নাকি প্রতিনিধি পাঠিয়ে দায় সারেন, তার দিকেই নজর থাকবে সকলের। আপনার মতামত জানান -