কমিশনের একের পর এক কড়া পদক্ষেপ আসলে বিজেপিকে সুবিধা, ক্ষোভে ফুঁসছেন মমতা জাতীয় রাজ্য May 16, 2019 কমিশনের পক্ষ থেকে রাজ্যে সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন পরিচালনার জন্য নানা পদক্ষেপ নেওয়া হলেও প্রথম থেকেই রাজ্য প্রশাসন ও রাজ্যের শাসক দল তৃণমূলের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলতে দেখা গিয়েছিল বিরোধীদের। আর বিরোধীদের অভিযোগ মত বাংলার নির্বাচন প্রক্রিয়ার দিকে কড়া নজরদারি রেখেছিল কমিশন। আর ষষ্ঠ দফার নির্বাচন শেষে যখন সপ্তম তথা শেষ দফার নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে গোটা দেশ, যখন জোর প্রচারে মেতেছে সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলো, ঠিক তখনই গত মঙ্গলবার কলকাতায় বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহের রোড শোকে ঘিরে তীব্র সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে তৃণমূল বনাম বিজেপি কর্মী সমর্থকরা। এমনকি আশ্চর্যজনকভাবে বিদ্যাসাগর কলেজে রাখা ঐতিহ্যমন্ডিত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের মূর্তিও ভেঙে ফেলা হয়। যা নিয়ে উত্তাল হয়ে ওঠে রাজ্য রাজনীতি। আর এই গোটা ঘটনায় রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। অমিত শাহের রোড শো চলার সময় কেন রাজ্য প্রশাসন ব্যবস্থা নিল না তা নিয়ে অনেকের মনেই বড়মাপের প্রশ্নচিহ্ন তৈরি হয়। আর রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা অবনতির কথাকে তুলে ধরেই এবার সপ্তম তথা শেষ দফার নির্বাচনী প্রচারে রাশ টানল নির্বাচন কমিশন। গতকালই এই ব্যাপারে সাংবাদিক সম্মেলন করে বাংলায় সংবিধানের 324 ধারা প্রয়োগ করার কথা জানিয়েছেন ডেপুটি নির্বাচন কমিশনার সুদীপ জৈন। যেখানে সপ্তম তথা শেষ দফার নির্বাচনে শুক্রবার পর্যন্ত প্রচারের সময়সীমা থাকলেও তা বৃহস্পতিবার মধ্যেই শেষ করতে হবে বলে জানানো হয়েছে। আর এবার সংবিধানের 324 ধারা প্রয়োগের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে নিজের ক্ষোভ উগরে দিলেন তৃণমূল নেত্রী তথা বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি একই দিনে কমিশনের পক্ষ থেকে রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিব অত্রি ভট্টাচার্য্যকে সরিয়ে দেওয়া এবং রাজীব কুমারকে কেন্দ্রের স্বরাষ্ট্রসচিবের অফিসে নিয়ে আসার সিদ্ধান্তেরও প্রবল বিরোধিতার সুর শোনা গেছে তৃণমূল নেত্রীর গলায়। জানা গেছে, গতকাল রাতে যখন সাংবাদিক বৈঠক করে কমিশনের পক্ষ থেকে এই সিদ্ধান্তের কথা জানানো হল, তখন নির্বাচনী প্রচারে উত্তর কোলকাতা থেকে বাড়ি ফিরছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর পথেই কমিশনের এহেন সিদ্ধান্তের কথা জানতে পেরে ক্ষোভে ফেটে পড়েন তিনি। তড়িঘড়ি বাড়ি ফিরে নিজের কালীঘাটের বাড়ি থেকে সাংবাদিক বৈঠক করে গোটা ব্যাপারে নিজের মতামত জানান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - এদিন তিনি বলেন, “গোড়া থেকেই রাজ্যের বাহিনীকে অন্ধকারে রেখে কমিশনের পক্ষ থেকে কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে ভোট করানো হচ্ছে। নির্বাচনের কাজে যে সমস্ত পর্যবেক্ষকদের আনা হয়েছে তারা সবাই অবসরপ্রাপ্ত। সার্ভিস থাকা অফিসারদের বিরুদ্ধে তাদের পদক্ষেপ নেওয়ার কোনো অধিকারই নেই। এভাবে এসব করা যায় নাকি!” এদিকে প্রচারের সময়সীমা কমিয়ে দেওয়া নিয়ে কমিশনের বিরুদ্ধে তোপ থেকে তৃণমূল নেত্রী বলেন, “আসলে গোটা ব্যাপারটি পরিকল্পিত। বৃহস্পতিবার নরেন্দ্র মোদীর সভা রয়েছে। আর সেই সভার সুযোগ করে দেওয়া হল। যদি প্রচারের সময়সীমা কমাতে হয় তাহলে বুধবার করল না কেন! আসলে এদের মূল লক্ষ্য মমতার প্রচার আটকানো।বাংলাকে এভাবে অপমান করার জবাব মানুষ ভোটেই দেবে। আর এসব বিধি-নিষেধ চাপিয়ে আমাকে আটকানো যাবে না।” অন্যদিকে এদিনের সাংবাদিক সম্মেলন থেকে মঙ্গলবার অমিত শাহের রোড শোতে অশান্তির ঘটনার কথা উল্লেখ করে ফের বিজেপির বিরুদ্ধে সরব হন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “বাইরে থেকে লোক নিয়ে এসে অমিত শাহ গোলমাল করলেন, অন্যায় করলেন, তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হল না। ওনাকে শোকজ করা হল না। কটা গোলমাল হয়েছে বাংলায়! একটা ঘাটালে আর একটা ব্যারাকপুরে। বাকি যা হয়েছে সে তো সেন্ট্রাল ফোর্স করিয়েছে। কতগুলো জায়গায় ওরা গুলি চালিয়েছে, তা তো সবাই দেখেছে।” তবে কমিশনের পক্ষ থেকে 324 ধারা প্রয়োগ করার কথা জানানোর পরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কমিশনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেওয়া নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে রাজনৈতিক মহলের অনেকেই। বিশেষজ্ঞদের একাংশ বলছেন, যদি গণতন্ত্রের উপর বিশ্বাসই থাকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের, তাহলে কমিশনের এই পদক্ষেপে তিনি ক্ষোভ উগরে দিচ্ছেন কেন! তাহলে কি আতঙ্ক থেকেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রচার এর সময়সীমা কমিয়ে দেওয়ার নিয়ে কমিশনের বিরুদ্ধে এহেন নজিরবিহীন তোপ দাগলেন! প্রশ্ন রাজনৈতিক মহলের অন্দরে। আপনার মতামত জানান -