এখন পড়ছেন
হোম > জাতীয় > পদ্মবনে ক্রমশ চওড়া হচ্ছে হাত – জিতেই ২০১৯ নিয়ে হুঙ্কার শুরু রাহুল গান্ধীর

পদ্মবনে ক্রমশ চওড়া হচ্ছে হাত – জিতেই ২০১৯ নিয়ে হুঙ্কার শুরু রাহুল গান্ধীর

২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনের আগে – একসঙ্গে ৫ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচন কার্যত অ্যাসিড টেস্ট ছিল সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে। এরমধ্যে, বিজেপির মূল লক্ষ্য ছিল ‘মিশন উত্তর-পূর্ব’। ইতিমধ্যেই উত্তর-পূর্বের বাকি সব রাজ্যে একে একে ফুটেছে পদ্ম – বাকি ছিল সবেধন নীলমনি মিজোরাম। কিন্তু, সেখানে এবার প্রবল প্রতিষ্ঠান বিরোধিতার হাওয়া – আর সেই হাওয়াকে কাজে লাগিয়ে গেরুয়া শিবির ঝাঁপিয়েছিল ওই রাজ্যকে নিজেদের দখলে আনতে।

আর তাই, গো-বলয়ের তিন বড় রাজ্যে, বিজেপির বিরুদ্ধে পাল্টা প্রতিষ্ঠান বিরোধিতার হাওয়াকে কাজে লাগিয়ে তা নিজেদের দখলে আনতে মরিয়া ছিল কংগ্রেস শিবির। কেননা, রাহুল গান্ধী শিবির – খুব ভালো করে জানতেন – এইরকম প্রবল প্রতিষ্ঠান বিরোধিতার হাওয়াকে কাজে লাগিয়েও যদি এই তিন রাজ্যে ভালো ফল করা না যায়, তাহলে কিন্তু ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে নরেন্দ্র মোদীর অশ্বমেধের ঘোড়াকে থামানো কার্যত অসম্ভব।

দিনের শেষে নির্বাচনী বিশেষজ্ঞরা মেনে নিচ্ছেন – কংগ্রেস জিতেছে ঠিকই। কিন্তু, এরকম বেকায়দায় পড়া বিজেপির বিরুদ্ধে যে দাপটের জয় ভাবা হয়েছিল তা কোথায়? উল্টে, গেরুয়া শিবির প্রবল প্রতিষ্ঠান বিরোধিতার হওয়া সামলেও কংগ্রেসের সঙ্গে যে সমানে সমানে টক্কর দিয়েছে – দিনের শেষে নজর কেড়েছে সেটাই। কিন্তু, জয় সবসময়েই জয়। আর তাই দিনের শেষে যখন সাংবাদিক বৈঠকে পাওয়া গেল রাহুল গান্ধীকে – তখন বেশ ফুরফুরে মেজাজে। আর হবে নাই বা কেন?

একে তিন-তিনটি রাজ্য বিজেপির কাছ থেকে ছিনিয়ে নেওয়া গেছে – তার উপরে এদিনই ছিল তাঁর কংগ্রেস সভাপতি হওয়ার বর্ষপূর্তি। আর সেই বিশেষ দিনে বিশেষ উপহার পেয়ে কংগ্রেস সেনাপতিকে পাওয়া গেল এক্কেবারে ফিফথ গিয়ারে। কংগ্রেস-কর্মীদের এই জয় উৎসর্গ করে তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন – আজ যেমন বিজেপিকে হারিয়েছেন, ২০১৯-এও সেই একই ফল উপহার দেবেন। এদিন সাংবাদিক বৈঠক শুরু করলেন – হেরে যাওয়া দুই রাজ্য মিজোরাম ও তেলেঙ্গানার মানুষ ও কংগ্রেস-কর্মীদের ধন্যবাদ জানিয়ে। এমনকি ধন্যবাদ জানাতে ভুললেন না সেখানকার জয়ী প্রার্থীদেরও।

ফেসবুকের কিছু টেকনিকাল প্রবলেমের জন্য সব খবর আপনাদের কাছে পৌঁছেছে না – তাই আরো খবর পেতে চোখ রাখুন প্রিয়বন্ধু মিডিয়া-তে

এবার থেকে প্রিয় বন্ধুর খবর পড়া আরো সহজ, আমাদের সব খবর সারাদিন হাতের মুঠোয় পেতে যোগ দিন আমাদের হোয়াটস্যাপ গ্রূপে – ক্লিক করুন এই লিঙ্কে

এরপরেই তিনি এলেন জয় পাওয়া তিন রাজ্যের কথায়। একবাক্যে মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান ও ছত্তিশগড়ের কংগ্রেস কর্মী, যুবক, কৃষক, ছোট ব্যবসায়ীদের জয় বলে আখ্যা দিলেন এদিনের বিজয়কে। একইসঙ্গে, সেখানকার বিদায়ী বিজেপি মুখ্যমন্ত্রীদের ধন্যবাদ জানাতেও ভুললেন না। এই জয়ের পরে কংগ্রেসের দায়িত্ত্ব বেড়ে গেল দাবি করার পাশাপাশি স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন, প্রধানমন্ত্রীর কাছে স্পষ্ট বার্তা গেল মানুষ জিএসটি ও নোটবন্দি নিয়ে মোটেও খুশি নন। একইসঙ্গে তাঁর অঙ্গীকার, বিজেপির একটি ভাবমূর্তি আছে, আমরা সেই ভাবমূর্তিকে হারাতে চাই। আজ হারিয়েছি – ২০১৯ সালেও হারাব।

যতই মমতা বান্দ্যোপাধ্যায়ের মত অন্যান্য দলের শীর্ষ নেতা-নেত্রীরা এই সাফল্যের পিছনে রাহুল গান্ধীকে কৃতিত্ত্ব দিতে না চান – কপিল সিব্বালের মত বর্ষীয়ান কংগ্রেসি নেতা কিন্তু স্পষ্ট জানাচ্ছেন, এটি রাহুল গান্ধীর জয় – এটা কংগ্রেস, দলের কর্মীদের জয়। আর দলের অগ্রজদের কথার রেশ ধরেই এদিন প্রত্যয়ী রাহুল গান্ধী দাবি করেন, প্রধানমন্ত্রী নিজের দেওয়া প্রতিশ্রুতি রাখেননি। অর্থনৈতিক বিষয় নিয়ে প্রশ্ন করেও প্রধানমন্ত্রীর প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায় না। মানুষের কথা, তরুণ প্রজন্মের কথা, কৃষকের কথা প্রধানমন্ত্রী শুনতে পাচ্ছেন না।

আজকের সাংবাদিক বৈঠক থেকেই কার্যত ২০১৯-এর দামামা বাজিয়ে দিলেন সর্বভারতীয় কংগ্রেস সভাপতি। আর ২০১৯-এর যুদ্ধ জিততে বিরোধী ঐক্য, বিজেপির ব্যর্থতার পাশাপাশি ইভিএমও যে যথেষ্ট গুরুত্ত্ব পাবে রাহুল গান্ধীদের কাছে তা একপ্রকার স্পষ্ট। তিনি, বিরোধী নেতা-নেত্রীদের দিল্লিতে মহাবৈঠক প্রসঙ্গ বেশ গুরুত্ত্বের সঙ্গে সাংবাদিক বৈঠকে তোলেন। পাশাপাশি তিনি জানান, ইভিএমে এখনও সমস্যা আছে – ইলেকট্রনিক যন্ত্রের ভিতরে চিপ আছে, তা বদলালেই ভোটে প্রভাব পড়ে।

তবে এদিনের সাংবাদিক বৈঠকে মিশন-২০১৯-এ তাঁর দলের কাছে কৃষকরা যে সবথেকে বেশি গুরুত্ত্ব পেতে চলেছে, তা তিনি আবারো স্পষ্ট করে দেন। একইসঙ্গে, দেশের প্রধান সমস্যা যে বর্তমানে রোজগার ও কৃষকদের সমস্যা – তা মনে করিয়ে দিয়ে তীব্র আক্রমন হানেন বিজেপির উদ্দেশ্যে। তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দেন, কংগ্রেস গোটা দেশকে বিজেপির স্বরূপ দেখিয়ে দিয়েছে। মানুষ যা চেয়েছে, বিজেপি সেটা দেশকে দিতে পারেনি। আর সেদিকেই নজর দিয়ে ২০১৯-এর জন্য দামামা বাজিয়ে দিলেন রাহুল গান্ধী।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!