এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > তৃণমূল > নিজের বাড়িতেই নিরাপদ নন মমতা? কপালে চোট পেতেই উঠছে কড়া প্রশ্ন!

নিজের বাড়িতেই নিরাপদ নন মমতা? কপালে চোট পেতেই উঠছে কড়া প্রশ্ন!


 

প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট- তিনি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। তিনি সবাইকে নিরাপত্তা দেবেন। কারণ তিনি পুলিশ মন্ত্রীও বটে। মাঝেমধ্যেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখ থেকে শোনা যায়, তিনি এই বাংলার অতন্দ্র পাহারাদার। কিন্তু সেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজের বাড়িতেই নিরাপদ নন? বৃহস্পতিবার সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের মূর্তি উন্মোচনের পর তিনি নাকি নিজের বাড়িতে গিয়েছিলেন। তারপর সেখানে নিজের ঘরে হঠাৎ করেই পড়ে যান তিনি। আর তার মাথা থেকে অঝোরে রক্ত পড়তে শুরু করে। ইতিমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়া একটি ছবি ভাইরাল করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। যেখানে দেখা যাচ্ছে যে, মুখ্যমন্ত্রী এসএসকেএম হাসপাতালের বেডে শুয়ে রয়েছেন। আর তার কপাল ফেটে রক্ত পড়ছে। পরবর্তীতে তার ট্রিটমেন্ট করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বাড়ি যাওয়ার অনুমতি দিয়েছেন। কিন্তু তাকে বিশ্রাম নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। তবে এত পর্যন্ত সবকিছু ঠিকঠাক থাকলেও, দিনের শেষে বেশ কিছু প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।

যেখানে মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবন, সেখানে তো তার ভাই, ভাই বউয়েরাও থাকে, তার একজন ব্যক্তিগত নিরাপত্তা রক্ষীও তো আছে। তাহলে মুখ্যমন্ত্রীর খেয়াল কেন তারা রাখবেন না? কেন মুখ্যমন্ত্রী এইভাবে চোট পাবেন! আর যদিও বা তিনি চোট পেয়েছেন, তাহলে তার প্রাথমিক চিকিৎসা করার মত বাড়িতে কোনো ব্যবস্থা ছিল না? ওই রক্ত লাগা অবস্থায় মুখ্যমন্ত্রীকে বাড়ি থেকে বের করে হাসপাতালে আনতে হলো? এত বড় অবব্যবস্থা একজন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তায় থাকা ব্যক্তিরা কি করে করতে পারলেন! কোথায় ছিলেন তার পরিবারের সদস্যরা? তা নিয়ে কিন্তু বেশ কিছু প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। প্রশ্ন উঠছে এই কারণে, কারণ যারা এই প্রশ্ন তুলছেন, তারাও রাজনৈতিক কারণে হয়ত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পছন্দ করেন না। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সুস্থ শরীরে, নিরাপদ ভাবে রাজ্যের দায়িত্বভার সামলান, এটা সকলেই চান। দিনের শেষে তো এই মুখ্যমন্ত্রী সকলের মুখ্যমন্ত্রী। তাই তার নিরাপত্তায় এত বড় গাফিলতি নিয়ে বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।

প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মুখ্যমন্ত্রীর কপাল ফেটে রক্ত ঝরছে এবং তিনি এসএসকেম হাসপাতালের বেডে শুয়ে রয়েছেন, এই রকম ছবি তৃণমূল কংগ্রেসের পেজ থেকে পোস্ট করা হয়। আর তারপর থেকেই বিভিন্ন প্রশ্ন তৈরি হয়। মুখ্যমন্ত্রীর যারা শুভাকাঙ্ক্ষী, তারাও এই প্রশ্ন তুলতে শুরু করেন যে, কি করে বাড়িতে থাকা অবস্থায় মুখ্যমন্ত্রী এইভাবে চোট পেলেন? পরিবারের সদস্যরা মুখ্যমন্ত্রীর কপালে আঘাত দেখার পরেও, কেন প্রাথমিক চিকিৎসাটুকু করলেন না? কেন তার মাথায় তুলো দিয়ে সেই রক্ত মুছে দেওয়া হলো না? কারণ মুখ্যমন্ত্রী তো এটা বলেন যে, তার পরিবার মানুষের পরিবার। কিন্তু তিনি তো দিনের শেষে একটা বাড়িতে থাকেন, সেখানে তো তার পরিবারের অনেক সদস্য থাকে। শোনা যায় যে, তার ভাই বউয়েরা তাকে অত্যন্ত ভালোবাসেন। তাহলে তারা তখন কি করছিল? নাকি শুধুমাত্র মুখ্যমন্ত্রীর কপাল ফেটে রক্ত ঝরছে, এই ছবিটা দেখে ভোটের মুখে প্রচার পাওয়াটাই সব থেকে বড় কাজ ছিল তৃণমূল কংগ্রেসের?

তবে এই সমস্ত প্রশ্ন উঠলেও, আমরা, আপনারা সকলেই গোটা রাজ্যবাসী চাইছেন যে, দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠুন এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। তার এই অবস্থা, তার শুভাকাঙ্ক্ষী বলুন বা বিরোধী মতামত দেওয়া মানুষজন বলুন, কেউ কিন্তু সহ্য করতে পারছেন না। কারণ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে, তার মতের সঙ্গে রাজনৈতিক পার্থক্য থাকতে পারে। কিন্তু ব্যক্তিগত শত্রুতা তার সঙ্গে কারওর নেই। তাই তার এই ধরনের পরিণতি দেখার পর নিরাপত্তা রক্ষীদের ভূমিকা নিয়ে যেমন প্রশ্ন উঠছে, ঠিক তেমনই তার পরিবারের সদস্যরা, যারা তখন বাড়িতে ছিলেন, তাদের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন একাংশ।

পর্যবেক্ষকদের মতে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অন্য কেউ নন। তিনি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জেট ক্যাটাগরীর নিরাপত্তা পান, তারপরেও তিনি পড়ে গেলেন, তিনি আঘাত পেলেন, অথচ তাকে প্রাথমিক সেবাটুকু করার মত মানুষজন দেখা গেল না? তাহলে নিন্দুকরা যেটা বলছেন যে, ভোট এলেই চোট পান রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী, সেটাই কি ঠিক? তবে আমরা কিছুই জানি না। আমরা রাজ্যের মানুষ হিসেবে শুধু এই রাজ্যের পুলিশ, প্রশাসন এবং মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্বে থাকা নিরাপত্তারক্ষীদের উদ্দেশ্যে কয়েকটা প্রশ্ন করতে চাই। আমরা বলতে চাই যে, রাজ্যের মানুষের নিরাপত্তা তো নেই। পুলিশ তো আজকে অপরাধীদের ধরতে ভুলে গেছে। কিন্তু এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী, যিনি প্রশাসনিক প্রধান, তার নিরাপত্তা টুকু কেন দিতে পারে না এই পুলিশ? কোথায় ছিলেন মুখ্যমন্ত্রীর ব্যক্তিগত দেহরক্ষী?

তবে হ্যাঁ, এটাও ঠিক যে, কোনো আঘাত বলে আসে না। হয়ত দুর্ভাগ্যজনক ভাবে মুখ্যমন্ত্রী আঘাত পেয়েছেন। কিন্তু তারপর ব্যক্তিগত নিরাপত্তারক্ষী বা পরিবারের সদস্যরা তো অন্তত তার কপালে তুলোটা লাগিয়ে দেবেন, তার রক্তটা মুছে দেবেন, সেটা কেন করা হলো না? তাহলে কি এই ছবিটা দেখিয়ে ভোটের মুখে একটা রাজনৈতিক ফায়দা তোলার চেষ্টা? জনগণের কাছে পরিত্যাগ হয়ে যাওয়ার ভয়েই কি সিমপ্যাথি আদায়ের চেষ্টা? এই সমস্ত প্রশ্ন বিরোধী শিবিরের পক্ষ থেকে তোলা হচ্ছে। তবে দিনের শেষে আবারও আমরা চাই, দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠুন রাজ্যের মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!