এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > তৃণমূল > লোভী নই, মমতার তত্ত্ব খারিজ ভাই বাবুনের! আরও চাপে তৃনমূল!

লোভী নই, মমতার তত্ত্ব খারিজ ভাই বাবুনের! আরও চাপে তৃনমূল!


 

প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-হাওড়ায় প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়কে টিকিট দেওয়া নিয়ে হঠাৎ করেই আপত্তি জানাতে দেখা যায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাই বাবুন বন্দোপাধ্যায়কে। আর তা নিয়েই গতকাল থেকে চর্চিত ছিল রাজনৈতিক মহল। শেষ পর্যন্ত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রকাশ্যে জানিয়ে দেন যে, তার এই ভাইয়ের সঙ্গে আজ থেকে তিনি সমস্ত সম্পর্ক ছিন্ন করছেন। এমনকি বাবুনবাবুকে কেউ যেন তার ভাই বলে পরিচয় না দেন, সেটাও জানিয়ে দেন তৃণমূল নেত্রী। তবে এর কিছু সময় পরেই বাবুন বন্দোপাধ্যায় সুর নরম করে দিদি যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, সেটাই চূড়ান্ত। তিনি দিদির বিরুদ্ধে যাবেন না বলে নিজের মতামত ব্যক্ত করেন। তবে দিদি-ভাইয়ের এই গন্ডগোল লোকসভা নির্বাচনের মুখে স্ক্রিপ্টেড নাকি সত্যি, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে বিরোধীদের। আর এসবের মাঝেই দিদির বকুনির পর এবং সম্পর্ক ছেদের পর সুর নরম করলেও, কলকাতায় নেমে নিজের জেদে বহাল থাকতে দেখা গেল বাবুন বন্দ্যোপাধ্যায়কে। যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তার ভাইকে লোভী বলে আক্রমণ করেছেন, তার সেই ভাই বিমানবন্দরে নেমে বুঝিয়ে দিলেন, তিনি লোভী নন। আর এর ফলে যদি ব্যানার্জি পরিবারে এটা প্রকৃত গন্ডগোল হয়, তাহলে তা মারাত্মক আকার নিতে পারে বলেই মনে করছেন একাংশ।

প্রসঙ্গত, বুধবার সকাল থেকেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাই বাবুন বন্দোপাধ্যায় বিদ্রোহী হতে শুরু করেন। তার একটাই আপত্তি যে, হাওড়াতে প্রসূন বন্দোপাধ্যায়কে টিকিট দেওয়া নিয়ে। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দলের সিদ্ধান্তকে অপরিবর্তিত রেখে ভাইয়ের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার পাশাপাশি যাকে ছোটবেলা থেকে বড় করেছেন, সে বড় হয়ে লোভী হয়ে গিয়েছে বলেও মন্তব্য করেন। তবে শেষ পর্যন্ত দিদির রাগের কাছে মাথা নত করে সুর নরম করে কলকাতায় ফিরেই বাবুন বন্দোপাধ্যায় আবার নিজের মতামত স্পষ্ট করেন। এক্ষেত্রে প্রসূন বন্দোপাধ্যায়কে টিকিট দেওয়া নিয়ে তার যে আপত্তি ছিল এবং থাকবে, সেটাও জানিয়ে দেন তিনি। পাশাপাশি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাকে লোভী বলে আক্রমণ করার পরিপ্রেক্ষিতে বাবুন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আমি লোভী নই অভিমানী।” আর এখানেই একাংশের দাবি, তৃণমূল যদি এই গন্ডগোলকে নাটক হিসেবেও, দেখানোর চেষ্টা করে তাহলেও কিন্তু তারা আসল ইস্যু থেকে মুখ ঘোরাতে পারবে না। বরঞ্চ তৃণমূলের বিরুদ্ধে যাওয়া বিভিন্ন ইস্যুর সঙ্গে যুক্ত হবে ব্যানার্জি পরিবারের এই কলহ ইস্যুটিও। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে নিজের পরিবারের মধ্যেই কন্ট্রোল রাখতে পারছেন না, তারা একের পর এক সিদ্ধান্ত নিয়ে যে পরিবারের মধ্যেই প্রশ্ন উঠছে, সেটা তিনি ভাইয়ের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে মুখ বাঁচাতে চাইলেও মানুষ কিন্তু ভালোই বুঝতে পারছেন। তাই আগামী দিনে রাজ্যের কন্ট্রোল যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত থেকে এভাবেই বেরিয়ে যাবে, সেই সম্পর্কে দ্বিমত নেই সমালোচকদের মধ্যে।

পর্যবেক্ষকদের মতে, দিদি ভাইকে কথা দিয়েছিলেন যে, তাকে সাংসদ পদে টিকিট দেবেন। কিন্তু সেটা না করার জন্যই ভাই রেগে গিয়েছেন। আর সেই কারণে হাওড়া তৃণমূল প্রার্থীর বিরুদ্ধে তিনি কথা বলতে শুরু করেছিলেন। তবে সেটা বলার পরেই যখন দিদি ক্ষুব্ধ, তখন দিদিমনি যাতে তার বিরুদ্ধে চলে না যায়, তার জন্যই সুর নরম করেছেন ভাই। কিন্তু দিদি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে ভাই আপাতত চুপ করে গেলেও, কলকাতায় নেমে তার সাংবাদিকদের সামনে করা মন্তব্য কিন্তু অন্য কথা বলছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাকে লোভী বলে আক্রমণ করেছেন ঠিকই। কিন্তু তিনি যে লোভী নন, তিনি যে অভিমান করে আছেন, সেটা স্পষ্ট করেছেন বাবুন বন্দ্যোপাধ্যায়। তাই আজকে ক্ষমতার জোরে হয়ত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজের ভাইকে পাত্তা দিলেন না, তাকে ত্যাজ্য ভাই হিসেবে পরিণত করলেন, কিন্তু ক্ষমতার বদল হলে যে কোনো সময় দিদির প্রতি বাবুনবাবুর রাগের চরম বহিঃপ্রকাশ হতে পারে। দিনের শেষে তেমনটাই বলছেন রাজনৈতিক সমালোচকরা।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!