প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – খেলা কি এবার অবশেষে ঘুরতে শুরু করল? শুভেন্দু অধিকারী, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের মত হেভিওয়েট তৃণমূল কংগ্রেসের নেতারা যখন বিজেপিতে যোগ দিতে শুরু করেছেন এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণ করছেন, ঠিক তখনই বেশ কিছুদিন আগে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যাওয়া দুই হেভিওয়েট বিধায়ক এবার দেখা করলেন সেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে।

বিশেষ সূত্র মারফত খবর, আজ সোমবার 16 তম রাজ্য বিধানসভার অধিবেশন শেষ দিন অধিবেশন কক্ষে এক অন্যরকম ছবি দেখতে পাওয়া গেল। যেখানে তৃণমূল থেকে বিজেপিতে যোগ দেওয়া বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করেন। আর তারপরেই সেই বিশ্বজিৎ দাস এবং বিজেপিতে যাওয়া আরেক বিধায়ক সুনীল সিং মুখ্যমন্ত্রীর ঘরে চলে যান।

যেখানে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, তৃণমূল বিধায়ক পার্থ ভৌমিকের মত হেভিওয়েটরা। জানা গেছে, তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যাওয়া এই দুই বিধায়কের সঙ্গে প্রায় কুড়ি মিনিট কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী। স্বাভাবিকভাবেই এই সাক্ষাৎকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক মহলের জল্পনা ক্রমশ বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছে। অনেকেই বলতে শুরু করেছেন, তাহলে কি আবার ঘর ওয়াপসি দেখতে চলেছে বাংলা?

বিধানসভা নির্বাচনের আগে এবার কি বিজেপিতে যাওয়া সুনীল সিং এবং বিশ্বজিৎ দাস আবার ফিরতে চলেছেন তাদের পুরনো দল তৃণমূল কংগ্রেসে? তাহলে কি তারা আবার ঘাসফুল শিবিরে নাম লেখাতে চলেছেন? এই প্রসঙ্গে বিশ্বজিৎবাবু এবং সুনীলবাবু অবশ্য সমস্ত জল্পনা উড়িয়ে দিয়েছেন। তাদের বক্তব্য, উন্নয়ন নিয়ে কথা বলার জন্যই তারা মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন।

কিন্তু যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সম্পর্কে উঠতে-বসতে অনুন্নয়নের অভিযোগ করে ভারতীয় জনতা পার্টি, সেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে উন্নয়নের দাবি নিয়ে তৃণমূল থেকে বিজেপিতে যাওয়া দুই বিজেপি বিধায়ক দেখা করবেন, এটা ঠিকমত হজম করতে পারছেন না পর্যবেক্ষকরা। যার ফলে স্বাভাবিক নিয়মেই এই দুই বিজেপি বিধায়কের ফের তৃণমূলে ফেরার জল্পনা তীব্র থেকে তীব্রতর হতে শুরু করেছে।

পর্যবেক্ষকরা বলছেন, সুনীলবাবু এবং বিশ্বজিৎবাবু উন্নয়নের ব্যাপারে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলার জন্য দেখা করেছেন বলে দাবি করেছেন। কিন্তু তাদের এই দাবি যে অনেকটাই অমূলক, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। কেননা হাতে আর মাত্র কিছুদিন বাকি। তারপরই নির্বাচনী নির্ঘণ্ট ঘোষণা হয়ে যাবে। আর নির্বাচনী নির্ঘণ্ট ঘোষণা হয়ে গেলে নির্বাচনী বিধি লাগু হয়ে যাবে। তখন স্বাভাবিক নিয়মেই কোনো উন্নয়নমূলক কাজ করা যাবে না।

আর এইটুকু সময়ের মধ্যে নির্বাচন ঘোষণা হওয়ার আগে কেন হঠাৎ করে উন্নয়নের কথা মনে পরার পরে স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রীর সঙ্গে দেখা করতে গেলেন দুই বিজেপি বিধায়ক, তা নিয়ে প্রশ্ন ক্রমশ বাড়তে শুরু করেছে। অনেকে বলছেন, তৃণমূল থেকে যখন হেভিওয়েট নেতারা বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন, তখন তৃণমূলের অনেক নেতারা দাবি করছেন, তাদের সঙ্গেও বিজেপির অনেকে যোগাযোগ রাখছেন।

আর এই পরিস্থিতিতে 16 তম রাজ্য বিধানসভার অধিবেশনের শেষ দিনে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে তৃণমূল থেকে বিজেপিতে যাওয়া দুই বিধায়কের সাক্ষাৎ রীতিমত আলোড়ন ফেলে দিয়েছে রাজ্য রাজনীতিতে। তবে শুধুমাত্র উন্নয়নের জন্য এই সাক্ষাৎ, নাকি ভবিষ্যতে এই সাক্ষাতের মধ্যে দিয়ে আবার তৃণমূল কংগ্রেসের পতাকা হাতে তুলে নেন সুনীলবাবু এবং বিশ্বজিৎবাবু, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।