এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > বর্ধমান > ঘুরপথে ‘ঘনিষ্ঠদের’ পুরসভায় নিয়োগ আটকে গেল ডিএলবির হস্তক্ষেপে? বাড়ছে জল্পনা

ঘুরপথে ‘ঘনিষ্ঠদের’ পুরসভায় নিয়োগ আটকে গেল ডিএলবির হস্তক্ষেপে? বাড়ছে জল্পনা

বর্ধমান পুরসভার চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান সহ বেশ কিছু কাউন্সিলরের কাজের মেয়াদ শেষ হওয়াকে কেন্দ্র করে ১৬ জন কর্মীর নিয়োগ নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। ২০১৩ সালের ২৩ শে অক্টোবর তাঁরা কাজে যোগ দিয়েছিলেন। সেই হিসাবে এ বছর ২২ অক্টোবর তাঁদের কাজের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা। কিন্তু তার আগেই ১৩ অক্টোবর থেকে সরকারি দপ্তরে পুজোর ছুটি শুরু হয়ে গিয়েছে। সমস্যা হল, পুজোর ছুটি শেষ হয়ে অফিস যখন খুলবে তখন বোর্ডের মেয়াদ আর থাকবে না।

অর্থাৎ গত শুক্রবারই বর্তমান বোর্ডের মেয়াদ একপ্রকার শেষ। তাই পুর কর্তৃপক্ষ চাইছে, এরমধ্যেই ১৬ জন কর্মীর হাতে নিয়োগপত্র তুলে দিক ডিএলবি (ডাইরেক্টরেট অব লোকাল বডিস)। কিন্তু তাঁদের তরফ থেকে এখনো কোনো সবুজ সংকেত না আসায় রীতিমতো অস্বস্তিতে পড়েছেন পুরসভার কয়েকজন কর্তা। জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যে পুর কর্তৃপক্ষের কয়েকজন আধিকারিক ডিএলবিতে বার কয়েক তাগাদাও দিয়েছেন। পুরসভার এক অফিসার দুবার কলকাতা ডিএলবি অফিসে গিয়ে তদ্বিরও করেন। কিন্তু সংশ্লিষ্ট আধিকারিকরা বেশ কিছু প্রশ্নের সন্তোষজনক উত্তর দেওয়ার অসমর্থ থাকায় ডিএলবি তৎক্ষণাৎই অনুমোদন অস্বীকার করেন।

প্রসঙ্গত, বর্ধমান পুরসভায় ক্লার্ক, ড্রাইভার, স্যানিটারি অ্যাসিস্ট্যান্ট এবং অ্যাসিস্ট্যান্ট ক্যাশিয়ার সহ মোট ১৬ টি পদের জন্য লিখিত পরীক্ষা হয়েছিল গত ৫ ই আগস্ট। ৯ টি ক্লার্ক পদের জন্য ৭,২৯২ জন, ৪ টি ড্রাইভার পদের জন্য ২১৩ জন, ৩ টি স্যানিটারি অ্যাসিস্ট্যান্ট পদের জন্য ১,০০৬ জন এবং ১ টি অ্যাসিস্ট্যান্ট ক্যাশিয়ার পদের জন্য ২৫৪ জন প্রার্থী ছিলেন। লিখিত পরীক্ষার আগে প্রত্যেক প্রার্থীর নাম ও ঠিকানা পুরসভার ওয়েবসাইটে ছিল। তারপর লিখিত পরীক্ষার কোনওরকম ফল প্রকাশ না করেই অপ্রত্যাশিতভাবে ইন্টারভিউয়ের চিঠি পাঠিয়ে দেয় পুরসভা। এনিয়ে বেশ জলঘোলা হয় পুরসভায়।

ফেসবুকের কিছু টেকনিকাল প্রবলেমের জন্য সব খবর আপনাদের কাছে পৌঁছেছে না – তাই আরো খবর পেতে চোখ রাখুন প্রিয়বন্ধু মিডিয়া-তে

এবার থেকে প্রিয় বন্ধুর খবর পড়া আরো সহজ, আমাদের সব খবর সারাদিন হাতের মুঠোয় পেতে যোগ দিন আমাদের হোয়াটস্যাপ গ্রূপে – ক্লিক করুন এই লিঙ্কে

তারপর ২৮ শে সেপ্টেম্বর ৭৮ জন প্রার্থীর ইন্টারভিউ নেওয়া হয়। তবে ইন্টারভিউ শেষে চূড়ান্ত পর্যায়ের নির্বাচিত প্রার্থীদের নামও গোপন রাখা হয়। শুধু তাই নয়, পুরসভার কাউন্সিলারদের কাছেও সেই বাছাই করা প্রার্থীদের তালিকাও অপ্রকাশিত রাখা হয়। দু-তিনজন কর্তাব্যক্তির হাতেই ওই তালিকা ঘোরাফেরা করতে থাকে। এদিকে, ইন্টারভিউয়ের শেষে ফল প্রকাশ করার কথা চেয়ারম্যান আগাম জানালেও কার্যক্ষেত্রে তা করা হয়নি। গোটা বিষয়টিকেই লুকিয়ে রাখা হয়। ২৮ তারিখ ইন্টারভিউ হয়ে যাওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই ২৯ তারিখ প্যানেল তৈরি করে সেইদিন বোর্ডে মিটিংয়ে পাশ করিয়ে ডিএলবিতে অনুমোদনের জন্য পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল নিয়ম না মেনেই বলে অভিযোগ উঠেছে।

যুক্তি, নিয়মে রয়েছে, যে কোনও পুরসভায় কর্মী নিয়োগের আগে ডিএলবি-র অনুমোদন নিতে হবে। কিন্তু, সে নিয়ম অনুসরণ না করেই নিজেদের মর্জি মতোই কর্মী নিয়োগ করেছে পুরসভা। এমনটাই অভিযোগ জানিয়েছে ডিএলবি অফিসারেরা। এ প্রসঙ্গে, এব্যাপারে ডিএলবি-র যুগ্ম অধিকর্তা সাগর সিনহা জানিয়েছেন, বর্ধমান পুরসভায় কর্মী নিয়োগের বিষয়ে এখনও পর্যন্ত অনুমোদন দেওয়া হয়নি। এর পাশাপাশি, লিখিত পরীক্ষা এবং ইন্টারভিউ পরবর্তী প্যানেল প্রকাশ করা নিয়েও ক্ষুব্ধ রয়েছেন অনেকেই। নিয়োগের স্বচ্ছতা আনার ক্ষেত্রে তাঁরা ডিএলবি অফিসারদেরই সমর্থন করছেন।

অনেকেই চাইছেন এভাবে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় যেন ডিএলবি অফিসারেরা অনুমোদন না দেন। তাছাড়া অভিযোগ রয়েছে, চাকরির প্যানেলে নাম রয়েছে পুরসভার কর্তাদের ঘনিষ্ঠমহলের। তাই কিছু সংখ্যক মানুষের এভাবে নিয়োগ নিয়ে যথেষ্ট আপত্তি রয়েছে। সবমিলিয়ে বর্ধমান পুরসভায় ১৬ জন কর্মী নিয়োগ নিয়ে রীতিমত জট তৈরি হয়েছে। পুজোর মধ্যে এই জট মেটার কোনো সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। সবটাই রয়েছে ডিএলবি অফিসারদের হাতে। তাঁরা কী সিদ্ধান্ত নেন সেদিকেই তাকিয়ে বর্ধমান পুরসভা।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!