এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > উত্তরবঙ্গ > করোনা আবহেই ভারী বর্ষনের জেরে বাংলায় তৈরী হচ্ছে বন্যা পরিস্থিতি! ঘুম উড়ছে প্রশাসনের?

করোনা আবহেই ভারী বর্ষনের জেরে বাংলায় তৈরী হচ্ছে বন্যা পরিস্থিতি! ঘুম উড়ছে প্রশাসনের?


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – মরণব্যাধি করোনা ও সেইসঙ্গে আম্ফান ঝড় পশ্চিমবঙ্গের বহু মানুষকে বিপর্যস্ত করেছে, এবার তার ওপরেই দেখা দিচ্ছে বন্যার ভ্রুকুটি। প্রসঙ্গত মাসখানেক আগেই প্রবল বর্ষণের ফলে উত্তরবঙ্গের বেশ কিছু স্থান জলমগ্ন তথা বন্যাকবলিত হয়ে পড়েছিল। এবার একই চিত্র দেখা যাচ্ছে দক্ষিণবঙ্গের পূর্ব মেদিনীপুর জেলায়।

প্রসঙ্গত, বঙ্গোপসাগরের উপরে একটি বিরাট শক্তিশালী নিম্নচাপ অক্ষ সম্প্রতি অবস্থান করছে। যা কিছু দিন ধরে স্থায়ী হবে বলে আবহাওয়া দপ্তর থেকে জানানো হয়েছে। আর এই নিম্নচাপের অবস্থানের কারণে পশ্চিমবঙ্গের উপকূলবর্তী জেলা গুলিতে ব্যাপক বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে। নিম্নচাপের ফলে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি ও জোয়ারের জলে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার বহু এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়েছে।

সেইসঙ্গে শুরু হয়েছে সমুদ্র উপকূল এলাকায় ব্যাপক ভাঙ্গন। বন্যার ও ভাঙ্গনের পরিস্থিতি বিচার করে পূর্ব মেদিনীপুর রামনগর রামনগর ১ ব্লকের চাঁদপুর ও জলধা মাল্টিপারপাসের পক্ষ থেকে সাইক্লোন সেল্টার খোলা হয়েছে, সেইসঙ্গে জলধা প্রাথমিক বিদ্যালয় এর তরফ থেকে ট্রেন শিবিরের আয়োজন করা হয়েছে। বন্যার আশঙ্কায় আগামীকাল রবিবার পর্যন্ত মৎস্য শিকার বা অন্য কোন উদ্দেশ্যে জনগণকে সমুদ্রে যেতে বারণ করেছে স্থানীয় প্রশাসন।

গত দুদিন ব্যাপী প্রবল বর্ষণের ফলে রূপনারায়ন নদীর জল বৃদ্ধি পেয়ে তা তমলুক ও কোলাঘাট অঞ্চলের বেশকিছু এলাকাকে প্লাবিত করেছে। সেইসঙ্গে ময়নার বলাইপন্ডা অঞ্চলের চন্ডীয়া নদীর বাধে সৃষ্টি হয়েছে এক বিরাট ফাটলের, যা দেখে ভীষণ আতংকিত হয়ে পড়েছেন স্হানীয় এলাকাবাসী। গতকাল শুক্রবার শেষ দপ্তরের অধিবাসীরা অফিসার এই এলাকা পরিদর্শন করেছেন। আতংকিত জনগণকে আস্বস্ত করে তারা জানিয়েছেন যে, সমুদ্রের জল কিছুটা নেমে গেলেই তাঁরা বাঁধের মেরামতের কাজ শুরু করে দেবেন।

বাঁধ বাঁচাতে বিভিন্ন স্থানে বস্তায় করে বালি ফেলা হয়েছে বাঁধের উপরে। আবার রামনগর ১, ২, কাঁথি ১, দেশপ্রাণ, খেজুরি ২ ব্লকেও সমুদ্রের বাঁধ বহুলাংশে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে জেলার সেচ দপ্তরের পক্ষ থেকে ব্ল্যাক স্টোন ও বোল্ডার ফেলা হয়েছে বাঁধের ক্ষতিগ্রস্থ অংশগুলিতে। অন্যদিকে প্রবল বর্ষণে কোলাঘাট ব্লকের বাবুয়া মৌজার অন্তর্গত রূপনারায়ণ নদীবাঁধে গত বৃহস্পতিবার ভয়ঙ্কর ফাটল দেখা গিয়েছিল।

অন্যদিকে, প্রবল বর্ষণের ফলে রসুলপুর নদীর জল পূর্ব মেদিনীপুর জেলার দেশপ্রাণ ব্লক এর আউরাই, আমতলিয়া, বসন্তিয়া,দারিয়াপুর গ্রাম, কাঁথি৩ ব্লকের অন্তর্গত কানাইদিঘি, কুমিরদা গ্রাম পঞ্চায়েত, ভগবানপুর -২ ব্লকের বরোজ, অর্জুননগর, খেজুরি ১ ব্লকের টিকাশি, বীরবন্দর, খেজুরি ২ ব্লকের জনকা, নিচকসবা গ্রাম ইত্যাদি এলাকাকে ব্যাপকভাবে পর্যুদস্ত করেছে।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

এই গুলিতে বহু কৃষিজমি, মাছ চাষের ভেড়ি, ধানক্ষেত, সবজির খেত সম্পূর্ণ রূপে প্লাবিত । অন্যদিকে আবার ব্যাপক জলপ্লাবনে এই জেলার রামনগর ১ ও ২, কাঁথি১ , দেশপ্রাণ, খেজুরি ২ ব্লকে সমুদ্র বাঁধের বিরাট ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এর উপরে গতকালের সমুদ্র জোয়ার শঙ্করপুর এলাকার বহু গ্রামকে ভাসিয়ে নিয়ে গেছে।

আবার গত বৃহস্পতিবার পূর্ব মেদিনীপুরের চাঁদপুর, জলধা মৌজায় বহু ঘরবাড়ি প্লাবনে ভেসে গেছে। এলাকায় বসবাসকৃত প্রায় ২০০০ মানুষকে দ্রুত অন্যত্র নিয়ে যাবার কাজে ব্যস্ত হয়েছে জেলা প্রশাসন। প্রশাসন ৪০০ জনকে ইতিমধ্যে স্থানান্তর করতে পেরেছে। প্রয়োজনে এই এলাকা থেকে সমস্ত অধিবাসীকে অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হতে পারে বলে জেলা প্রশাসনের তরফ থেকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

এই অঞ্চলগুলির বন্যাদুর্গতদের শুধু স্থানান্তরিত করাই নয়, তাদের দুবেলা খবরের ঘোষণা করা হয়েছে জেলা প্রশাসনের তরফ থেকে। ইতিমধ্যে দুর্গতদের সাহায্যার্থে ২০০০ পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে। অন্যদিকে বৃষ্টির ও জোয়ারের জলে প্লাবিত হল পূর্ব মেদিনীপুর জেলার এগরা পুরসভার অন্তর্গত ২, ৩, ৮, ১১ নম্বর ওয়ার্ডের বেশ কয়েকটি স্থান ।

এলাকাবাসীদের অভিযোগ, এলাকায় নিকাশি ব্যবস্থার দুরবস্থার কারণেই এলাকার এই জলপ্লাবন। অন্যদিকে দুর্যোগের ফলে পাঁশকুড়া পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের বেশ কিছু স্থানে জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। অন্যদিকে জোয়ারের কালে পাঁশকুড়া পুরসভার অন্তর্গত, ৬,৮ নম্বর ওয়ার্ডের বেশ কিছু স্থান সম্পূর্ণ জলমগ্ন হয়ে যায়।এই স্থানগুলি থেকে জগগনকে অন্যত্র সরিয়ে নেয়া হয়েছে। এছাড়া সংশ্লিট এলাকায় নদীর বাঁধে ত্রিপল বিস্তার করে সেখানে অধিবাসীদের অস্থায়ীভাবে রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়াও পাঁশকুড়া পুরসভার পক্ষ থেকে বন্যাদুর্গতদের রান্না করা খাবার পরিবেশনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

এদিকে জনপ্লাবনে কারণে যখন বহু মানুষ বিপদগ্রস্থ ও আতঙ্কিত, তখনই আবার উত্তাল সমুদ্রের দৃশ্য উপভোগ করতে গত বৃহস্পতিবার রাতে সমুদ্রের নিকটে হাজির হতে দেখা গেল বহু পর্যটককে। প্রসঙ্গত এদিন জোয়ারের সময় সমুদ্র ভয়ঙ্কর আকার ধারণ করেছিল। সমুদ্রের সেই দৃশ্য টিভিতে দেখার পর মেদিনীপুর, হাওড়া থেকে বহু মানুষ গাড়ি ও বাইকে করে সে দৃশ্য দেখতে গভীর রাতে দীঘায় ভিড় জমান।

প্রসঙ্গত, গত শুক্রবার এই জনপ্লাবনে দৃশ্য দেখতে সমুদ্রপৃষ্ঠ পর্যটকেরা এতটাই ভিড় করেন যে তাদের সামলাতে গলদঘর্ম হয় পুলিশ। বারবার তাদের নিরাপদ দূরত্বে সরে যাবার জন্য মাইকে নির্দেশ জানায় পুলিশ। এদিন বিশ্ববাংলা পার্কের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা মেচেদার জনৈক ব্যবসায়ী নন্দন চক্রবর্তী, পাঁশকুড়ার অধিবাসী সোমনাথ মান্না এ প্রসঙ্গে জানিয়েছেন, ” এরকম দৃশ্য চোখে দেখার মজাই আলাদা। তাই উত্তাল সমুদ্রকে প্রত্যক্ষ করতে দীঘায় চলে এসেছি।”

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!