এখন পড়ছেন
হোম > অন্যান্য > করোনা ভাইরাস নিজের দেহেই করে চলেছে অনবরত মিউটেশন! চিন্তায় ঘুম উড়ছে চিকিৎসা বিজ্ঞানীদের!

করোনা ভাইরাস নিজের দেহেই করে চলেছে অনবরত মিউটেশন! চিন্তায় ঘুম উড়ছে চিকিৎসা বিজ্ঞানীদের!


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – আনলক পর্ব শুরু হয়েছে, সেই সঙ্গে করোনার বাড়াবাড়িও বেড়েছে। যেখানে আগে মৃত্যু হার বেশি ছিল, সেটা কমলেও বর্তমানে বেড়েছে আক্রান্তের সংখ্যা। সেই সঙ্গে উপসর্গহীন আক্রান্তেরা বাড়াচ্ছে বেশি ভয়। এমন পরিস্থিতিতে মানুষের মনে স্বাভাবিক ভাবেই তৈরি হচ্ছে নানা প্রশ্ন। উঠে আসছে নানা দুশ্চিন্তা। সেই সঙ্গে ধীরে ধীরে সব কর্মসংস্থান খুলে যাওয়ায় মানুষকে বেরতেও হবে। তাই ভয় একটা কাজ করছেই। তবে কি কি জানলে আপনার সুবিধে হবে, সেকথা বলা দরকার।

একটু পিছিয়ে গিয়ে যাওয়া যাক একেবারে করোনা হানার শুরুর সময়ে। করোনা পরিস্থিতি সামাল দিতে মার্চ মাস থেকে লকডাউন শুরু হয়েছিল ভারতে। সম্পূর্ণ নতুন এই ভাইরাসটি সম্পর্কে বিজ্ঞানী ও চিকিৎসকের কাছে সেভাবে কোনও তথ্য ছিল না। ফলে সাধারণ মানুষের কাছেও সঠিক তথ্য পৌঁছচ্ছিল না। তাই বহু মানুষ এটা কি তাই নিয়েই ভেবে উঠতে পারছিলেন না। সেই সঙ্গে মানুষের মধ্যে সচেতনতাও তৈরি হচ্ছিল না। ফলে উপসর্গ থাকা সত্ত্বেও অনেক মানুষ পরীক্ষা করাচ্ছিলেন না।

শারীরিক পরিস্থিতি জটিল হওয়ার পরেই অসুস্থরা হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছিলেন। তাই কেবল হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীদের থেকেই করোনা আক্রান্তের সংখ্যা পাওয়া যাচ্ছিল। অন্যদিকে, রাজ্যে সেইসময় করোনা পরীক্ষাকেন্দ্রের সংখ্যাও কম ছিল। পরীক্ষাও হচ্ছিল কম। তাই মোট করোনা আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা প্রথমদিকে পাওয়া সম্ভব হয়নি। তাই স্বাভাবিকভাবেই প্রাণহানির হারও বেশি ছিল। সংখ্যাটা দাঁড়িয়েছিল প্রায় ১৭ থেকে ১৮ শতাংশ।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

এরপর ধীরে ধীরে ভাইরাসের সম্পর্কে পরিচয় হতেই দেশে আরও টেস্ট সেন্টারের অনুমোদন দেওয়া হয়। টেস্ট-এর সংখ্যা বাড়ানো হয়। মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়লে তারা নিজেরাই সচেতন হয়ে পরীক্ষা করাতে থাকেন। ফলে আক্রান্তের সংখ্যাও বাড়তে থাকে। অন্যদিকে সঠিক সময়ে চিকিৎসা হওয়ায় মোট আক্রান্তের তুলনায় প্রাণহানির হার কমতে দেখা যায়। শুধু তাই নয়, সামনে আসে উপসর্গহীন আক্রান্তের তথ্যও। এরই মধ্যে আনলক পর্ব শুরু হতেই বহু কর্ম সংস্থান খুলে যায়। অফিসের নিয়ম অনুসারে কর্মীরা নিজের কোভিড টেস্ট করাতে থাকেন।

সেই সঙ্গে অসংখ্য উপসর্গহীন ব্যক্তির কোভিড পজিটিভ হওয়ার রিপোর্ট পাওয়া যায়। সেই সঙ্গে বহু মানুষ সচেতন হয়ে নিজেরাই পরীক্ষা করান। বর্তমানে সারা দেশে রোজ প্রায় ১২ লাখ পরীক্ষা করানো হচ্ছে। ফলে দেশে মৃত্যুহার কমে হয়েছে ১.৭ শতাংশ। সেই সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গে এখন রোজ ৪৫ হাজারের বেশি পরীক্ষা হচ্ছে বলেই জানা গেছে। এদের মধ্যে পজিটিভ রোগীর সংখ্যা আটকে আছে ৩ হাজার বা তার চাইতে সামান্য কিছু বেশি সংখ্যার মধ্যে। প্রতিদিন প্রাণহানি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ জনের। প্রাণহানির হার ১.৯ শতাংশ।

তবে এত কিছুর মধ্যে সব থেকে বড় প্রশ্ন হল, ভাইরাস কিভাবে আটকানো যাবে। আদৌ কি মিউটেশন কোনো কাজে আসবে? নাকি ভ্যাকসিন না বেরোনো পর্যন্ত অপেক্ষা করে যেতে হবে। এখানে জানা গেছে, যে ভাইরাসের সংক্রমণে প্রাণহানির হার বেশি, সেই ভাইরাসের সংক্রমণের হার কম। যেহেতু নোভেল করোনা ভাইরাস বেশি সংক্রামক, তাই এতে প্রাণহানির হার কম। এটি একজন থেকে চারজনের মধ্যে রোগ ছড়াতে পারে। অন্যদিকে পরীক্ষায় দেখা গেছে করোনা ভাইরাসের জিনোম সিকোয়েন্স-এর পরিবর্তন হয়েছে এবং বেশ কতগুলি মিউটেশন হয়ে গিয়েছে।

তবে মিউটেশন হওয়ার পরে ভাইরাস যে দুর্বল হয়েছে, এমন মনে করাটা ভুল হবে। মিউটেশনের আগে ও সংক্রমণের পরে কোনও ব্যক্তির দেহে যেমন ধরনের শারীরিক উপসর্গ দেখা যাচ্ছিল, মিউটেশনের পরেও একই ধরনের উপসর্গ কিন্তু দেখা যাচ্ছে। তাই আসল কথা হল, ভাইরাস দুর্বল হয়েছে বলেই যে মৃত্যুহার কমেছে, এমন নয়। বরং পরীক্ষার সংখ্যা বেড়েছে বলেই প্রকৃত আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে। সেই কারণেই মৃত্যুহার কমেছে। এমনই মনে হচ্ছে। তবে এখানে একটা প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে যে, ভ্যাকসিন কি তাহলে ভরসা? বস্তুত, আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা ‘অ্যান্টিবডি’ দিয়ে এই ধরনের ভাইরাস পুরোপুরি প্রতিহত করতে পারে না।

বরং সেল মিডিয়েটেড ইমিউনিটি দিয়ে রোগ আটকানোর চেষ্টা করে। ব্যাপারটা হচ্ছে, এই ধরনের ইমিউনিটি’র কিছু মেমরি সেল রয়ে যায় শরীরে। ফলে পরবর্তীকালে ওই একই গোত্রের ভাইরাস বা ওই ভাইরাস শরীরে প্রবেশ করলে সেই মেমরি সেলগুলি সতর্ক হয়ে গিয়ে ভাইরাসকে প্রতিহত করে। যে কারণে কোনও ব্যক্তিকে ভ্যাকসিন দেওয়া হলে, তার দেহে কিছু ‘মেমরি টি সেল’ ওই ভাইরাসের বিরুদ্ধে কাজ করে। তবে এগুলি কতদিন অ্যাক্টিভ থাকে, সে বিষয় এখনও পরীক্ষা নির্ভর। তাই ভ্যাকসিন যতদিন না আবিষ্কার হচ্ছে, ততদিন স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে হলে আপাতত সামাজিক দূরত্ববিধি মেনে চলা, মাস্ক পরাকেই আসল ওষুধ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!