প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – বিশ্বজুড়ে করোনা পরিস্থিতি এই মুহূর্তে মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, করোনার প্রতিষেধক ছাড়া এই অবস্থা থেকে কোনো মুক্তি নেই। ইতিমধ্যেই বিশ্বের অধিকাংশ দেশে করোনার প্রতিষেধক প্রস্তুতিতে কর্মযজ্ঞ শুরু করেছে। অন্যদিকে রাশিয়া ইতিমধ্যে ঘোষণা করে দিয়েছে তাঁদের আবিষ্কৃত করোনার প্রতিষেধক নিয়ে। কিন্তু প্রথম থেকেই রাশিয়ার এই করোনা প্রতিষেধক নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, যেকোন টিকা আবিষ্কারের ক্ষেত্রে প্রয়োজন তিনটি ট্রায়াল।

সে জায়গায় রাশিয়া ট্রায়াল পিরিয়ড সম্পূর্ণ করেনি বলে জানা গেছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও শত বিতর্ককে সরিয়ে রেখে রাশিয়ার করোনা প্রতিষেধককে গ্রিন সিগন্যাল দিয়েছেন সে দেশের প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। কিন্তু রাশিয়ার ভ্যাকসিন নিয়ে এবার আশঙ্কাজনক কথা শোনালেন রাশিয়ার স্বাস্থ্যমন্ত্রী মিখাইল মুরাশকো। তিনি জানিয়েছেন, স্পুটনিক ফাইভের যখন ট্রায়াল চলছিল, তখন প্রতি সাত জনের মধ্যে একজনের শরীরে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা গিয়েছে।

প্রায় 40,000 ভলেন্টিয়ার এর মধ্যে 300 জনের শরীরেই ভ্যাকসিন পরীক্ষিত হয়েছে। এবং তার মধ্যে 14% ব্যক্তির শরীরে ভ্যাকসিন গ্রহণের পরবর্তী 24 ঘন্টায় দেখা গিয়েছে পেশিতে ব্যথা এবং শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি। যদিও তিনি এটি খুব স্বাভাবিক ঘটনা বলেই ব্যাখ্যা করেছেন। অন্যদিকে সূত্রের খবর, 21 দিনের মধ্যে ওই ভলেন্টিয়ারদের শরীরে দ্বিতীয় দফার ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা হবে। তবে সবথেকে বিতর্কিত বিষয় রাশিয়া সরকার এই প্রতিষেধককে মান্যতা দিলেও এখনো পর্যন্ত কিন্তু এই ভ্যাকসিনের ক্লিনিকাল ট্রায়াল সম্পূর্ণ হয়নি।

এ মাসের গোড়ায় তা হবে বলে জানা গেছে। অন্যদিকে ভারতের করোনা পরিস্থিতিও তথৈবচ। রাশিয়ার করোনা ভ্যাকসিন ভারতে নিয়ে আসার কথা হয়েছে আগেই। ডা. রেড্ডিজ ল্যাবরেটরির এই দায়িত্ব নিতে চলেছে বলে জানা গেছে। সম্ভবত বছরের শেষেই ভারতে প্রবেশ করতে চলেছে রাশিয়ার করোনা ভ্যাকসিন স্পুটনিক 5। অন্যদিকে ভারত বিশ্বের সমস্ত দেশ, যারা করোনার প্রতিষেধক প্রস্তুতিতে মগ্ন- তাদের দিকে লক্ষ্য রেখেছে। এর মধ্যে রাশিয়া অন্যতম। এ প্রসঙ্গে আইসিএমআর এর ডিরেক্টর জেনারেল ড. বলরাম ভার্গভ ইতিমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছেন, রাশিয়ার করোনা ভ্যাকসিনের দিকে একটি উচ্চ পর্যায়ের সরকারি কমিটি নজর রেখেছে ক্রমাগত।

তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, রাশিয়ায় যে করোনা ভ্যাকসিন আবিষ্কৃত হয়েছে, তা নিয়ে তীব্র বিতর্ক রয়েছে। সে দেশের মানুষের শরীরেই পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া যখন দেখা গেছে, তখন তা পুরোপুরি সঠিক নয় বলেই মনে করা হচ্ছে। সুতরাং সেই ভ্যাকসিন ভারতে আসার পর ভারতের মানুষের ওপর প্রয়োগ করলে তার ফল যে কি হবে, তার কোনো ঠিক নেই। কিন্তু করোনা পরিস্থিতিতে বাঁচতে সাধারণ মানুষ এখন হাতের সামনে যা পাবেন, তাই আঁকড়ে ধরবেন বলে মনে করা হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে নজর রয়েছে ভারতের ভ্যাকসিন প্রস্তুতকারক সংস্থা সেরাম ইনস্টিটিউট এর উপর।