এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > বর্ধমান > দিদিকে বলোই আসল মুশকিল আসান? পুরভোটের আগে বড়সড় সিদ্ধান্ত ঘাসফুল শিবিরের

দিদিকে বলোই আসল মুশকিল আসান? পুরভোটের আগে বড়সড় সিদ্ধান্ত ঘাসফুল শিবিরের

2019 সালের লোকসভা নির্বাচনে ভারতীয় জনতা পার্টির কাছ থেকে জোরালো চ্যালেঞ্জ পাওয়ার পরে প্রশান্ত কিশোরকে রাজ্যের শাসক দল নির্বাচনের রননীতিকার হিসেবে নিযুক্ত করেন। আর এরপরই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে কাজ শুরু করে দেন বিশিষ্ট রণনীতিকার প্রশান্ত কিশোর। রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসকে মানুষের কাছে পুনরায় প্রতিষ্ঠা করার উদ্দেশ্যে প্রশান্ত কিশোর “দিদিকে বলো” কর্মসূচি নামে একটি জনসংযোগ কর্মসূচি করার পরামর্শ দেন শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসকে।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তৎক্ষণাৎ সেই কর্মসূচিকে অনুমোদনের ফলে পশ্চিমবঙ্গের সর্বোচ্চ তৃণমূলের জনপ্রতিনিধি থেকে শুরু করে দলীয় নেতৃত্ব, সকলকে ঝাঁপিয়ে পড়তে দেখা যায় এই কর্মসূচি পালন করতে। দলের তরফ থেকে তো বটেই, পিকের টিমের পক্ষ থেকে মূলত তদারকি করা হচ্ছিল এই কর্মসূচির। আর তার কয়েক মাস কাটতে না কাটতেই রাজ্যের উপনির্বাচনের ফলাফলে সামনে এসে প্রমাণ করে দিয়েছে, “দিদিকে বলো” কর্মসূচির মাধ্যমে জনগণের মধ্যে জনপ্রিয়তা বাড়াতে সক্ষম হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস।

আর এবার তাই এই কর্মসূচিকে হাতিয়ার করেই পৌরসভা ভোটে শেষ হাসি হাসতে চায় শাসকদল। এক্ষেত্রে পূর্ব বর্ধমান জেলায় “দিদিকে বলো” কর্মসূচিকে সামনে রেখে ব্লক সভাপতি থেকে শুরু করে টাউন সভাপতি, যুব সভাপতি প্রত্যেকেই দূর্গাপূজার পর থেকে ইতিমধ্যে বড় কর্মসূচি পালন করতে শুরু করে দিয়েছে। লক্ষ্যমাত্রা সাড়ে তিন হাজার বুথে এই কর্মসূচিকে পালন করা। ইতিমধ্যেই জেলা নেতৃত্বের তরফ থেকে প্রত্যেকটি বুথে গিয়ে “দিদিকে বলো” কর্মসূচির মধ্য দিয়ে ব্লক সভাপতি, যুব সভাপতি এবং টাউন সভাপতিদেরকে জনসংযোগ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

রাজ্যের তরফ থেকে বিধায়কদেরকে পাঁচটি করে “দিদিকে বলো” কর্মসূচি পালন করতে বলা হয়েছিল। বিধায়কদের তরফ থেকে তাদের কর্মসূচি ইতিমধ্যেই সম্পন্ন হয়েছে। সেজন্য দলীয় নেতৃত্বদেরকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে জনসাধারনের সঙ্গে সংযোগের ধারাকে অব্যাহত রাখার। কারণ আগামী পৌরসভা ভোটের সামনে এই কর্মসূচি দলের মূল হাতিয়ার হতে চলেছে। প্রসঙ্গত, বর্ধমান জেলার বর্ধমান, মেমারি, গুসকরা, কালনা, কাটোয়া, দাঁইহাট এই 6 টি পৌরসভা রয়েছে। যার মধ্যে গুসকরা এবং বর্ধমান পৌরসভার মেয়াদ ইতিমধ্যেই সম্পন্ন হয়েছে।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

কিন্তু বাকি চারটি পৌরসভা তৃণমূল কংগ্রেসের দখলে রয়েছে। বর্ধমান এবং গুসকরাতে প্রশাসক বসিয়ে কাজ চালানো হচ্ছে। দলের তরফ থেকে সবকটি পৌরসভার কাউন্সিলরদেরকে কর্মসূচি পালনের জন্য মাঠে নামার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। শুধু তাই নয়, পৌরসভার চেয়ারম্যান থেকে শুরু করে ভাইস চেয়ারম্যান, প্রত্যেকেই কর্মসূচি পালনের দায়িত্ব নেবেন বলে জানা যাচ্ছে। এছাড়াও যে সমস্ত পৌরসভার মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে গিয়েছে, সেখানে প্রাক্তন চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান এবং কাউন্সিলররা ওই কর্মসূচি পালন করবেন।

এই বিষয়ে রাজ্য কমিটির তরফ থেকে নির্দেশিকা চলে আসলেই তাদেরকে কাজ শুরু করতে হবে বলে জানা যাচ্ছে। যা নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রস্তুতি গ্রহণ করতে শুরু করে দিয়েছেন জেলা নেতৃত্ব। এদিন এই বিষয়ে পূর্ব বর্ধমান জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি রাজ্যের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ বলেন, “দিদিকে বলো কর্মসূচিতে বিধায়ক, ব্লক সভাপতি, সহ সভাপতি, যুব সভাপতি এলাকায় এলাকায় গিয়েছে। এলাকার সাধারণ মানুষ তাদেরকে নানান দাবিদাওয়া জানাচ্ছেন। এক্ষেত্রে অনেক দাবিদাওয়া মেটানো সম্ভব হয়েছে। অনেক সমস্যা দলীয় নেতৃত্বকে জানানো হয়েছে‌।”

তিনি আরও জানান, “মানুষ মন খুলে তাদের কথা বলতে পারছেন। আমরা সবার বক্তব্য নথিভুক্ত করছি। এবার দলীয় নেতৃত্ব আমাদের প্রত্যেকটি পৌরসভার কাউন্সিলরদের এই কর্মসূচিতে মাঠে নামতে বলেছেন। তার রূপরেখা তৈরি হচ্ছে। শীঘ্রই তারা মাঠে নামবেন।” বর্ধমান জেলা তৃণমূল সূত্রের খবর, ইতিপূর্বে দলের তরফ থেকে যে দিদিকে বলো কর্মসূচি পালন করা হয়েছিল, তাতে সাধারণ মানুষের তরফ থেকে অনেক অভিযোগ এসেছে। যেগুলো অভিযোগ এলাকায় বসে সমাধান করা সম্ভব হয়নি।

সেই বিষয়ে ঊর্ধ্বতন নেতৃত্বের কাছে ইতিমধ্যেই অভিযোগ পত্র পাঠানো হয়েছে। সেই মোতাবেক সমস্যার সমাধান সম্পর্কে তৃণমূল কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্ব কি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন! তার জন্য অপেক্ষা করতে হবে। আবার আগামী দিনে দলের কাউন্সিলরদের থেকে শুরু করে চেয়ারম্যান এবং ভাইস চেয়ারম্যানরা দিদিকে বলো কর্মসূচি পালন করবেন। সেই কর্মসূচিতে সাধারণ মানুষের তরফ থেকে কি কি অভিযোগ উঠে আসে সেটাও দেখার। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই কর্মসূচির মধ্য দিয়ে সাধারণ মানুষ মন খুলে নিজেদের অভিযোগের কথা তৃণমূল নেতৃত্বকে বলতে পারে।

2019 সালের আগে সাধারণ মানুষের দলীয় নেতৃত্বের সঙ্গে যোগাযোগের রাস্তা প্রায় বন্ধ ছিল। তবে এই কর্মসূচির মাধ্যমে মানুষ তাদের মনের রাগ, দুঃখ, অভিমান সবকিছু খোলাখুলি শাসক দলের নেতৃত্বের কাছে বলতে পারছেন। যার কারণে মানুষের কাছে তৃণমূল কংগ্রেস অনেকটা বেশি জায়গা করে নিতে পারছে বলেও মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। এখন এই কর্মসূচি আগামী দিনে পৌরসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসকে বিজয়ের ক্ষেত্রে সহযোগিতা করতে পারে কিনা! সেদিকেই নজড় থাকবে সকলের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!