জেলা সভাপতি বদল হতে না হতেই শাসক দলের গোষ্ঠীসংঘর্ষে উত্তপ্ত বালুরঘাট উত্তরবঙ্গ রাজ্য June 7, 2019 লোকসভা নির্বাচনে বালুরঘাট লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থী অর্পিতা ঘোষের জয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল দক্ষিণ দিনাজপুরের জেলা তৃণমূলের প্রাক্তন সভাপতি বিপ্লব মিত্রর ওপর। কিন্তু ফলাফল প্রকাশের পর বিপ্লববাবুর গড় গঙ্গারামপুর এবং বালুরঘাট থেকে রেকর্ড ভোটে পিছিয়ে পড়েন অর্পিতা দেবী। যার কারণে চারটি বিধানসভা কেন্দ্রে আশাতিরিক্ত এগিয়ে থাকা সত্ত্বেও বালুরঘাট, তপন এবং গঙ্গারামপুরের ঠেলা সামলাতে পারেনি তৃণমূল। স্বাভাবিক কারণেই এই সমস্ত এলাকায় বিজেপির উত্থান মেনে নিলেও গোষ্ঠী কোন্দল এবং অন্তর্ঘাত একটা বড় কারণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশ। তাই ভোট মিটতেই বিরোধী গোষ্ঠির প্রতি একরাশ ক্ষোভ উগরে দেয় তৃণমূল প্রার্থী। যার কারণে সাংগঠনিক পদ পরিবর্তন এনে জেলা সভাপতি পরিবর্তন করে দেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর এর পরেই গোষ্ঠী কোন্দলের চিত্র ধরা পড়ে জেলাসদর বালুরঘাটে। সূত্রের খবর, বালুরঘাটের সাহেবকাছারী এলাকায় স্থানীয় বাসিন্দা বিমল কুন্ডুর আত্মীয় ঋষি কুন্ডুর সাথে সম্প্রতি বালুরঘাট কলেজের ছাত্র পিংকু ঘোষের একটি বিবাদ হয়। আর যে ঘটনায় সমর্থন দেওয়ার অভিযোগ ওঠে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের কর্মী বলে পরিচিত সৃঞ্জয় সান্যালের বিরুদ্ধে। আর এরপরই ধীরে ধীরে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হতে শুরু করে। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - গত মঙ্গলবার সাহেবকাছারি এলাকায় সৃঞ্জয় এবং আরও বেশ কয়েকজনকে মারধর করার অভিযোগ ওঠে বিমল কুন্ডুর বিরুদ্ধে। আর তারপরই সন্ধ্যেবেলা তৃণমূল ছাত্র পরিষদের কর্মী বলে পরিচিত সৃঞ্জয় সান্যাল এবং 20 থেকে 30 জন যুবক স্থানীয় একটি ক্লাবে থাকা বিমল কুন্ডুকে আক্রান্ত করতে উদ্যত হয় এবং সেই ক্লাব ভাঙচুর করে। আর এই ঘটনায় সৃঞ্জয় এবং তার দলবলকে প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ ওঠে বালুরঘাট শহর তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি দেবাশীষ মজুমদারের বিরুদ্ধে। এদিকে সেই সময় সেই ক্লাবেই উপস্থিত ছিলেন সাহেবকাছারি এলাকার বাসিন্দা তথা বালুরঘাট শহর তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদিকা শাশ্বতী দাস সরকারের স্বামী অসীম সরকার। অভিযোগ, দেবাশিস মজুমদারের দলবল সৃঞ্জয় এবং আরও বেশ কয়েকজন সেই ক্লাবে ভাঙচুর চালানোর পাশাপাশি এলাকায় তৃণমূল কর্মী বলে পরিচিত সেই অসীম সরকারের ওপর আঘাত হানে। আর এরপরই সেই অসীম বাবুর স্ত্রী তথা তৃণমূলের বালুরঘাট শহরের নেত্রী শাশ্বতী দাস সরকার এবং পাড়ার মহিলারা মিলে দেবাশিস মজুমদারের বাড়িতে যায়। আর এতেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পরিস্থিতি। তৃনমূল নেত্রী শাশ্বতী দাস সরকার বলেন, “এলাকায় বরাবরই দুষ্কৃতীরাজকে প্রশ্রয় দেন দেবাশীষ মজুমদার। আমরা বিপ্লব মিত্রর অনুগামী বলে জেলা সভাপতি পরিবর্তন হয়ে যাওয়ার পর থেকেই তিনি আমাদের উপর প্রতিহিংসামূলক আচরণ করছেন। রোজ অর্পিতা ঘোষের লবি করতে হবে, তা না হলে মেরে ফেলা হবে বলেও হুমকি দেওয়া হচ্ছে। এই পরিস্থিতি আর কতদিন চলতে পারে!” অন্যদিকে শাশ্বতী দাস সরকারের করা অভিযোগকে সম্পূর্ণরূপে অস্বীকার করেছেন বালুরঘাট শহর তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি দেবাশীষ মজুমদার। তিনি বলেন, “শাশ্বতী দাস সরকার ও তাঁর স্বামী দলের ভাবমূর্তি নষ্ট করছে। ওরা বিজেপির হয়ে কাজ করে আমার নামে মিথ্যা অভিযোগ করছে।” রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, বালুরঘাট শহর তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি দেবাশীষ মজুমদার অর্পিতা ঘোষের ঘনিষ্ঠ হলেও তার বিরুদ্ধে প্রায়শই বালুরঘাটে সন্ত্রাসের অভিযোগ ওঠে। ভোটের ফলাফল পর সেই অর্পিতা ঘোষের হাতেই দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা সভাপতির দায়িত্ব আসলে দেবাশিস মজুমদার এলাকায় আরও বেশি করে সন্ত্রাস চালানোয় এবং বিরোধী গোষ্ঠির লোকেদের উপর মারধর করায় বালুরঘাটের সংস্কৃতি যে কার্যত অবক্ষয়ের মুখে যেতে বসেছে সেই ব্যাপারে একপ্রকার নিশ্চিত ওয়াকিবহাল মহল। অনেকে বলছেন, দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা তৃনমূলের নব্য সভাপতি অর্পিতা ঘোষ মুখে বার বার সততার পক্ষে রয়েছেন বলে দাবি করেন বললে তার ঘনিষ্ঠ ব্যক্তি দেবাশিস মজুমদার বালুরঘাটে সন্ত্রাস চালানোয় এখন তিনি দেবাশিবাবুর পক্ষে যান, নাকি তাকে ব্রাত্য রেখেই নেত্রীর আদর্শে সামিল হয়ে দলকে সঠিক পথে এগিয়ে নিয়ে যান এখন সেদিকেই তাকিয়ে সকলে। আপনার মতামত জানান -