এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > তৃণমূল > দলে বাড়ছে বেসুরোর সংখ্যা, ঠেলায় পড়ে কড়া বার্তা মমতার! কটাক্ষ বিজেপির!

দলে বাড়ছে বেসুরোর সংখ্যা, ঠেলায় পড়ে কড়া বার্তা মমতার! কটাক্ষ বিজেপির!


প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-বর্তমানে দল এবং সরকার, সবদিক থেকেই কার্যত বিড়ম্বনার মধ্যে রয়েছেন এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। দলে যেমন একের পর এক বেসুরোদের সংখ্যা বাড়ছে, ঠিক তেমনই সরকারের একের পর এক দুর্নীতি চলে আসছে। নেতা, মন্ত্রীরা জেলে যাচ্ছেন। ফলে লোকসভা নির্বাচনের আগে রীতিমতো চাপে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাই এবার নিজের হাতে দলের রাশ রাখার জন্য মেদিনীপুর নিয়ে বৈঠকে বাইরে যাতে কেউ মুখ না খোলেন, তার জন্য সকলকে সতর্ক করে দিলেন তৃণমূল নেত্রী। কিন্তু এসব সতর্কবাণী তো আগেও তিনি দিয়েছেন। তাতে কিছু লাভ হয়েছে কি? যদি তার কথা দলের ভেতরে কেউ মান্যতাই দিত, তাহলে পরবর্তীতে বিস্ফোরক মন্তব্য করার নেতাদের সংখ্যা বাড়ত না। কিন্তু যেভাবে তৃণমূলের মধ্যে ক্ষোভ, বিক্ষোভ বাড়ছে, তাতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই কড়া বার্তা দিলেও, লাভের লাভ কিছু হবে না বলেই দাবি করছেন একাংশ।

প্রসঙ্গত, বুধবার মেদিনীপুরের নেতাদের নিয়ে একটি বৈঠক করেন তৃণমূল নেত্রী তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যেখানে উপস্থিত ছিলেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও। আর সেখানেই তিনি সকলকে কড়া বার্তা দিয়েছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়ে দিয়েছেন যে, দলের বাইরে কেউ মুখ খুলবেন না। দলে যথেষ্ট গণতন্ত্র আছে। কেউ যদি কিছু বলার থাকে, তাহলে দলের ভেতরে বলবেন। আর দলের বাইরে যদি কেউ মন্তব্য করেন, তাহলে তার বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এদিকে তৃণমূল নেত্রীর এই সমস্ত বার্তা শুনে হাসছে সমালোচক মহল। তারা বলছেন, তৃণমূলে আবার গণতন্ত্র? যে তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর রাজ্যে গণতন্ত্রকে লুট করে, ভোট দিতে দেয় না সাধারণ মানুষকে, সেই দলে গণতন্ত্র থাকবে, এসব ভাবাও বৃথা! বয়সের ঊর্ধ্বসীমা নিয়ে পিসি ভাইপোর মধ্যেই যে পরিমাণ গন্ডগোল শুরু হয়েছে, তাতেই নেতাদের মধ্যে ভাগাভাগি শুরু হয়ে গিয়েছে। ফলে দলের নেতাদের বিদ্রোহ থামাতে এখন কড়া বার্তা দিয়ে পদ কেড়ে নেওয়ার ভয় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দেখাচ্ছেন। কিন্তু এসবে কেউ ভীত নয়। তৃণমূল নেতারাই এখন এই দলের উপর বিরক্ত। তাই নেত্রী বড় বড় কথা বললেও, সাহস করে অনেকেই লোকসভা নির্বাচনের আগে জার্সি বদল করে নেওয়ার মত সিদ্ধান্ত নিতে পারেন বলেই দাবি একাংশের।

ইতিমধ্যেই গোটা বিষয়ে কটাক্ষ করতে শুরু করেছে বিজেপিও। তাদের দাবি, রাজ্যকে উচ্ছন্নে পাঠিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এখন নিজের দলের অবস্থা দেখে তিনি ভয় পাচ্ছেন। তাই নেতাদের কড়া বার্তা দিচ্ছেন। কিন্তু কে তার এই কথা শুনবে? তাই এসব করে কোনো লাভ হবে না। হাজার সিস্টেম ফিরিয়ে আনলেও মানুষ তৃণমূলের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। তাই নেতারা বাইরে কথা বলছেন, না ভেতরে কথা বলছেন, সেসব নিয়ে সাধারণ মানুষ আগ্রহী নন। লোকসভা নির্বাচনে এই দলকে ছুঁড়ে ফেলবে পশ্চিমবঙ্গের জনতা বলেই দাবি গেরুয়া শিবিরের।

পর্যবেক্ষকদের মতে, তৃণমূলে এখন পিসি ভাইপোর মধ্যে ক্ষমতা দখল নিয়ে লড়াই শুরু হয়েছে। ফলে কোন দিকে পাল্লা ভারী, তা নিয়েই নেতা কর্মীরা চেয়ে রয়েছেন। তাই পিসি এখন বড় বড় কথা বলছেন ঠিকই, নিজের হাতে রাশ রাখার চেষ্টা করছেন ঠিকই। কিন্তু অনেকটাই দখল করে ফেলেছেন ভাইপো। একদিকে দুর্নীতি, নেতাদের জেল যাত্রা এবং অন্যদিকে বাইরে দলীয় নেতাদের একের পর এক মন্তব্য রীতিমত মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে। তাই সব দিক থেকেই বিপর্যস্ত হয়ে এখন তিনি ঠেলায় পড়ে কড়া বার্তা দিতে বাধ্য হচ্ছেন। তবে এসব করে দলের হাল তিনি ফেরাতে পারবেন না। যে পরিস্থিতি তার দলে তৈরি হয়েছে, যেভাবে দুর্নীতি গ্রাস করেছে গোটা তৃণমূল পরিবারকে, তাতে আগামী দিন লোকসভা নির্বাচনের লড়ার মত পরিস্থিতি এই দলের থাকবে কিনা, সেটাই লাখ টাকার প্রশ্ন। দিনের শেষে তেমনটাই বলছেন রাজনৈতিক সমালোচকরা।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!