ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নিয়ম কানুনে পরিবর্তন, দুর্নীতির অভিযোগ চাপা দিতেই কি এই পদক্ষেপ! রাজ্য হাওড়া-হুগলি June 21, 2020 প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – করোনা আবহে এবং আমফান পরবর্তীতে দুর্গতদের জন্য ত্রাণ বিলি নিয়ে একটা অভিযোগ উঠেছিল রাজ্যের সর্বস্তর থেকে। বিরোধীপক্ষ প্রথম থেকেই শাসক শিবিরের প্রতি অভিযোগ তুলেছিল, ত্রাণ নিয়ে দুর্নীতি চলছে বলে। তবে এবার দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযোগটি চাপা দিতে শাসক শিবিরের অন্যরকম পদক্ষেপ। আগে থেকেই ঠিক ছিলো, আমফান দুর্গতদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। এবার সেই ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নিয়ম কানুন নিয়ে বেশ কিছু কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে হুগলি জেলা প্রশাসন বলে জানা গেছে। সূত্রের খবর, এবার থেকে আমফানের ক্ষতিপূরণ চাইতে হলে প্রত্যেক আবেদনকারীকে অঙ্গীকারপত্রে সই করতে হবে এবং ছাপানো ফর্মে পরিষ্কার ভাষায় লেখা থাকছে, যদি আবেদনকারীদের ক্ষতিগ্রস্তের তথ্য ভুল দেওয়া হয়, তাহলে যিনি এই ভুল তথ্য দেবেন তাঁর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সূত্রের খবর, হুগলি জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সেখানকার সমস্ত পঞ্চায়েত এলাকায় এই মর্মে আবেদনপত্র ইতিমধ্যেই পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। পঞ্চায়েতগুলিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যত শীঘ্র সম্ভব এই ফর্ম ফিলাপ করে জমা দেওয়ার জন্য। সূত্রের খবর, আমফানে যাঁরা পূর্ণাঙ্গ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন কিংবা যারা আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, তাঁরা প্রত্যেকেই ফর্ম পূরণ করতে পারবেন। অন্যদিকে হুগলি জেলা প্রশাসনের কঠোর পদক্ষেপের কারণে উৎস সন্ধান করতে গিয়ে উঠে আসছে অন্য প্রসঙ্গ। জানা গিয়েছে, হুগলি জেলার গরলগাছা গ্রাম পঞ্চায়েতে সম্প্রতি ক্ষতিপূরণের টাকা নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ আসে। এছাড়াও বিভিন্ন জায়গা থেকে আবেদনপত্রের সঠিক তথ্য না দেওয়ার একটা অভিযোগ উঠতে থাকে। ঠিক একইভাবে প্রশাসনিক আধিকারিকরাও বুঝতে পারেন কোথাও কোন গন্ডগোল চলছে। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - বিশেষজ্ঞদের মতে, পুরো ব্যাপারটি যাতে পরিষ্কারভাবে সাধারণ মানুষের সামনে থাকে এবং কোন রকম দুর্নীতি যাতে না হয় সে কারণেই হুগলি জেলা প্রশাসন এই পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এ প্রসঙ্গে হুগলির জেলা প্রশাসক ওয়াই রত্নাকর রাও জানিয়েছেন, আমফান ক্ষতিপূরণ চাইতে গেলে একটি ছাপানো ফর্ম পূরণ করতে হবে আবেদনকারীকে। এবং সেই আবেদনপত্রে পরিষ্কার করে লেখা আছে, ভুল তথ্য দিলে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। কারণ সরকারি টাকা যাতে যথাযোগ্য জায়গায় যায়, তা নিশ্চিত করতেই এই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। অন্যদিকে হুগলির গুপ্তিপাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান বিশ্বজিৎ নাগ জানিয়েছেন, প্রশাসনের চিঠি এবং আবেদনের ছাপানো ফ্রম তাঁরা পেয়েছেন এবং পরবর্তীতে প্রশাসনের কথা অনুযায়ী তা জমা করা হবে। সূত্রের খবর, আমফান ক্ষতিগ্রস্তদের আগেই হাতে লিখে ক্ষতিপূরণের তালিকা জমা দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল। এবং সেই সঙ্গে এলাকার পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষকে বলা হয়েছিল, প্রত্যেকটি জায়গায় বিস্তারিত বিবরণ এলাকা ঘুরে ছবিসহ জমা দিতে হবে প্রশাসনকে। পূর্ণাঙ্গ ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ির ক্ষেত্রে এই তালিকা আগেই করা হয়ে গিয়েছিল। সম্প্রতি আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ির তালিকা তৈরী হচ্ছে বলে খবর। সেই অনুযায়ী আবেদন পত্র জমা নেওয়া শুরু করতে হবে। এইভাবে আপাতত প্রতিটি পঞ্চায়েতে ইমেইল পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। এবং সেখানে নতুন আবেদনপত্রে ভুল তথ্য দিলে যে শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে সে কথাও স্পষ্ট করে লেখা আছে। অন্যদিকে বিশেষজ্ঞদের মতে, হুগলি জেলা প্রশাসন যেভাবে ক্ষতিপূরণের দুর্নীতি আটকানোর ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন বর্তমান্ তা যথেষ্ট প্রশংসনীয়। তবে একইভাবে যদি রাজ্যের সর্বত্র এই নিয়ম চালানো হয়, তবে তা বেশি গ্রহণযোগ্য হবে বলে মনে করছেন বিশাষজ্ঞরা। অন্যদিকে বিরোধীদের দাবি, পুরো ব্যাপারটি দুর্নীতি আটকানোর জন্য নয়, দুর্নীতি চাপার জন্য করা হচ্ছে। আপাতত পুরো বিষয়টির ওপর নজর রাখছে রাজ্যের ওয়াকিবহাল মহল। আপনার মতামত জানান -