এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > মেদিনীপুর > এবার হেভিওয়েট দলীয় নেতার বিরুদ্ধে দুর্নীতির পোস্টার খোদ তৃণমূলেরই, তীব্র চাঞ্চল্য রাজ্যে !

এবার হেভিওয়েট দলীয় নেতার বিরুদ্ধে দুর্নীতির পোস্টার খোদ তৃণমূলেরই, তীব্র চাঞ্চল্য রাজ্যে !


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – বর্তমানে বিভিন্ন জায়গায় ভয়াবহ দুর্যোগ ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের সাহায্যের উদ্যোগ নিয়েছে রাজ্য সরকার। যেখানে ক্ষতিগ্রস্তদের বাড়ি তৈরীর জন্য রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে তাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে টাকা পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু এক্ষেত্রে বেশ কিছু জায়গায় দুর্নীতির খবর সামনে আসছে। যেখানে অভিযোগ উঠছে, তৃণমূলের নেতারা তাদের নিজেদের আত্মীয়-স্বজনকে ক্ষতিগ্রস্তদের টাকা পাইয়ে দিচ্ছেন। যার মাধ্যমে বঞ্চিত হচ্ছেন প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্থরা।

ইতিমধ্যেই এই ব্যাপারে দলের দুর্নীতি বন্ধ করবার জন্য সকলকে কড়া বার্তা দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু তা সত্ত্বেও দুর্নীতি যে কমেনি, তা কার্যত স্পষ্ট হয়ে গেল। এবার দুর্নীতির অভিযোগে জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ তৃণমূলের সোমনাথ বেড়ার বিরুদ্ধে পড়ল পোস্টার।

সূত্রের খবর, শনিবার সকালে তমলুকের পদুমপুর 1 পঞ্চায়েতের জয়কৃষ্ণপুর, বিনোদপুর, কালিকাপুর, বাড়বসন্ত গ্রামে বিভিন্ন পোস্টার পড়তে দেখা যায়। যেখানে তৃণমূলের পঞ্চায়েত প্রধান, গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য এবং তৃণমূলের একাধিক নেতার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ করা হয়। আর আশ্চর্যজনকভাবে তৃণমূল যুব কংগ্রেস এবং তৃণমূল বাঁচাও কমিটির নামে দেওয়া ওই পোস্টারে অভিযোগ করা হয়েছে তৃণমূল নেতা সোমনাথ বেরা এবং দ্বীপনারায়ন সাহুর বিরুদ্ধে।

আর দুই হেভিওয়েট তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে তৃণমূল যুব কংগ্রেস এবং তৃণমূল বাঁচাও কমিটির নাম করে ব্যানার দিয়ে অভিযোগ করায় এখন তীব্র চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে। গোটা ঘটনায় শাসকদল যে তীব্র অস্বস্তিতে পড়েছে, তা আর নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখে না।জানা গেছে, সেই পোস্টারে পদুমপুর 1 গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান রিঙ্কু মাইতির বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়ে বলা হয়েছে যে, তিনি তার স্বামী প্রশান্ত মাইতির নাম ক্ষতিগ্রস্ত পান বড়জ চাষীর তালিকায় রেখেছেন।

অন্যদিকে প্রধানের ভাসুর সুশান্ত মাইতির দোতলা বাড়ি থাকা সত্ত্বেও তিনি ক্ষতিগ্রস্ত তালিকায় নাম ঢুকিয়ে নিয়েছেন। ফলে পঞ্চায়েত প্রধানের বিরুদ্ধে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ উঠতে শুরু করেছে। যদিও বা এই ব্যাপারে তাঁর বিরুদ্ধে আনা সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন প্রধান রিংকু মাইতি। তিনি বলেন, “আমপানে ক্ষতিগ্রস্তদের প্রাথমিক তালিকায় কিছু ভুল থাকলে তা সংশোধন করে নয়া তালিকা তৈরি করা হয়েছে। আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে। ব্যানার দেওয়ার পেছনে তৃণমূলের কেউ জড়িত কিনা, বলতে পারব না।”

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

অন্যদিকে এই ব্যাপারে তৃণমূল নেতা তথা জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ সোমনাথ বেড়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ করলে, তা সম্পূর্ণরূপে ভিত্তিহীন বলে দাবি করেন তিনি। এই তৃণমূল নেতা বলেন, “ব্যানার দেওয়ার ঘটনায় বিজেপির লোকজন জড়িত। ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরি করেছে পঞ্চায়েত। এতে আমার কোনো ভূমিকা নেই। ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আমি আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করছি।” তবে যেভাবে তৃণমূল কংগ্রেসের নাম করে কেউ বা কারা পোস্টার দিয়েছে, তাতে তৃণমূলের কেউ কি নেতাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে এই পোষ্টার দিয়েছেন?

এদিন এই প্রসঙ্গে তমলুক ব্লক যুব তৃনমূলের সভাপতি অরূপ চক্রবর্তী বলেন, “ব্যানার দেওয়ার ঘটনায় কেউ জড়িত নয়। এতে বিজেপির লোকজনই জড়িত। আমরা দলীয়ভাবে এই বিষয়ে তদন্ত শুরু করেছি এবং জেলা যুব নেতৃত্বকে জানানো হয়েছে।” অন্যদিকে তৃণমূলের এই অভিযোগ সম্পূর্ণরূপে অস্বীকার করেছে ভারতীয় জনতা পার্টি। এদিন প্রসঙ্গে তমলুক জেলা বিজেপির সহ সভাপতি আশিস মণ্ডল বলেন, “ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা নিয়ে দুর্নীতি এবং স্বজনপোষণ হয়েছে। এই নিয়ে তৃণমূলের লোকেরাই পোস্টার দিয়েছে। এতে আমাদের দলের কেউ জড়িত নয়।”

রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বারবার তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বের পক্ষ থেকে দলকে সতর্ক করে বলা হচ্ছে, দুর্নীতির সঙ্গে কেউ জড়িত থাকবেন না। কিন্তু তা সত্ত্বেও বিভিন্ন জায়গায় দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্তদের টাকা নিয়ে নয়ছয়ের অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের প্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে। আর এবার তমলুকে যেভাবে তৃণমূল নেতাদের নাম করে তৃণমূল বাঁচাও কমিটির পক্ষ থেকে পোস্টার পড়ল, তাতে শাসক দলের ভেতরেই এই ব্যাপারে যে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে, তা কার্যত স্পষ্ট রাজনৈতিক মহলের কাছে। সব মিলিয়ে এখন গোটা পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!