এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > তৃণমূল > দুর্নীতি কাঁটা, তল্লাশি শেষে ভেঙে পড়লেন ফিরহাদ! সিমপ্যাথি আদায়ের চেষ্টা, কটাক্ষ বিজেপির!

দুর্নীতি কাঁটা, তল্লাশি শেষে ভেঙে পড়লেন ফিরহাদ! সিমপ্যাথি আদায়ের চেষ্টা, কটাক্ষ বিজেপির!


প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট- পৌর নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় তদন্ত করছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। সেই কারণেই রবিবার সাতসকালে প্রচুর কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে সিবিআই আধিকারিকরা পৌঁছে গিয়েছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী এবং কলকাতা পৌরসভার মেয়র ফিরহাদ হাকিমের বাড়িতে। প্রায় 9 ঘন্টার বেশি সময় তার বাড়িতে তল্লাশি করা হয়। তাকে জেরা করা হয়। তারপর সেখান থেকে বেরিয়ে আসেন সিবিআই আধিকারিকরা। আর এরপরেই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে যে সমস্ত কথা বললেন ববি হাকিম, তাতে একটা জিনিস স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে যে, তিনি এই দীর্ঘ তল্লাশিতে এবং জেরাতে কার্যত ভেঙে পড়েছেন। শুধু তাই নয়, তার ভবিষ্যৎ যে অত্যন্ত করুন, সেটাও তিনি বুঝতে পারছেন। তাই দিশা না পেয়ে সাংবাদিক বৈঠকে জোরে জোরে চিৎকার করে “আমি কি চোর!”, “আমি কি চোর!” এমন সব সিমপ্যাথেটিক কথা বলতে দেখা গেল তাকে। অনেকে বলছেন, মন্ত্রীর এই ধরনের বডি ল্যাঙ্গুয়েজ কখনই চোখে পড়েনি। যা এদিন সাংবাদিক বৈঠকে প্রকাশ্যে চলে এলো।

প্রসঙ্গত, রবিবার রাত্রিবেলা নয় ঘন্টা তল্লাশির পর ফিরহাদ হাকিমের বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসেন সিবিআই আধিকারিকরা। আর তারপরেই তার মেয়ে জানান যে, কিছুক্ষণ পরেই তার বাবা সাংবাদিকদের মুখোমুখি হবেন। অবশেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে কার্যত ভেঙে পড়তে দেখা যায় ফিরহাদ হাকিমকে। বারবার তিনি এটা বোঝানোর চেষ্টা করেন যে, তিনি দুর্নীতি করেননি। কিন্তু যিনি মঞ্চে বিজেপির বিরুদ্ধে এত বড় বড় কথা বলেন, যার একের পর এক ঘাম ঝরানো বক্তব্য শুনে অভ্যস্ত তৃণমূলের নেতা কর্মীরা, তিনি এই কয়েক ঘন্টার তল্লাশিতেই ভেঙে পড়লেন! তাহলে কি ভয়ে রয়েছেন রাজ্যের এই মন্ত্রী? প্রশ্ন তুলছে বিরোধীরা। অনেকে আবার এটাও বলছেন যে, ববি হাকিম খুব ভালো করেই জানেন, দলের ভেতরেই তার শত্রু রয়েছে। দলের এক যুবনেতার উত্থান তার চিন্তার ক্রমশ বাড়াচ্ছে। সেই যুবনেতাও চাইছেন, পুরোনো নেতাদের সাইড করে দিয়ে দলের রাশ নিজের হাতে নিতে। তাই দীর্ঘ তল্লাশির পর ফিরহাদ হাকিম ভেতর এবং বাইরের সব পরিস্থিতি বুঝেই নিজেকে আর ঠিক রাখতে পারেননি। তাই তার এই ধরনের বডি ল্যাঙ্গুয়েজ প্রকাশ্যে চলে এলো বলেই দাবি সমালোচকদের।

বিজেপির দাবি, কাঁপা কাঁপা গলায় ফিরহাদ হাকিম এদিন সাংবাদিক বৈঠকে অনেক বড় বড় কথা বলেছেন। কিন্তু তার বাড়িতে তল্লাশি হয়েছে, কারণ তার বিরুদ্ধে কোনো তথ্য পেয়েছে বলেই। তাতে এত রেগে যাওয়ার কি আছে? যদি তিনি চুরি নাই করে থাকবেন, যদি তিনি চোর নাই হন, তাহলে তা তো একদিন প্রমাণ হয়ে যাবে। কিন্তু এখন তদন্তে সহযোগিতা করতে আপত্তি কোথায় মন্ত্রী সাহেবের? আসলে তিনি নিজেও জানেন, দুর্নীতি হয়েছে। তাই সঠিক তদন্ত হলে তিনি ফেঁসে যেতে পারেন। যার ভয়ে দীর্ঘ তল্লাশির পর ভবিষ্যৎ করুন দেখে সিমপ্যাথি আদায়ের চেষ্টা করেছেন ববি হাকিম। তবে এইসব নাটক করে রেহাই পাওয়া যাবে না বলেই কটাক্ষ পদ্ম শিবিরের।

পর্যবেক্ষকদের মতে, তৃণমূলের কাছে সামনের দিনগুলো অত্যন্ত ভয়ের। আর এই সরল সত্যটা ববি হাকিমের মতো মন্ত্রীও বুঝতে পেরেছেন। দীর্ঘ তল্লাশির পর তিনি সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে অনেক বড় বড় কথা বলেছেন ঠিকই। কিন্তু এর দুটো কারণ হতে পারে। এক, তার কোনো ভয় নেই। আর এক, তিনি প্রচন্ড ভয় রয়েছেন। যার জন্য ঘরে, বাইরে প্রবল চাপ থেকেই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে নিজের আবেগ আর ধরে রাখতে পারেননি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্ত্রিসভার এই গুরুত্বপূর্ণ সৈনিক। তবে আর যাই হয়ে যাক না কেন, তাকে তদন্তের মুখোমুখি হতেই হবে। তিনি যদি ভাবেন, এই তল্লাশির পর কাপা কাপা গলায় বিজেপির বিরুদ্ধে কথা বলবেন, আর তদন্তকারী সংস্থা ল্যাজ গুটিয়ে পালাবে, তাহলে তিনি ভুল করছেন। তাকে প্রয়োজনে যদি মনে করে তাহলে তদন্তকারী সংস্থা আবার ডাকতেও পারে। কিন্তু সেটা তাদের ব্যাপার। তাই সিমপ্যাথেটিক কথা বলে আসর জমানোর চেষ্টা করলেও, তাতে ডাহা ফেল ফিরহাদ হাকিম। দিনের শেষে তেমনটাই বলছেন রাজনৈতিক সমালোচকরা।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!