এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > বাংলায় সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন করাতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ নির্বাচন কমিশনের একসাথে চার বড় সিদ্ধান্ত

বাংলায় সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন করাতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ নির্বাচন কমিশনের একসাথে চার বড় সিদ্ধান্ত

আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে বঙ্গবাসীর একটাই বোধহয় মনের ইচ্ছা ছিল – তা হল বাংলার কৃষ্টি ও সংস্কৃতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে নির্বাচনের পর যেন কোনো রাজনৈতিক দল আঙুল তুলতে না পারে যে – নির্বাচন প্রক্রিয়া অবাধ ও সুষ্ঠু ভাবে হয় নি। কিছুদিন আগেই হয়ে যাওয়া পঞ্চায়েত নির্বাচনে যে অভিযোগটা উঠেছিল ভুরি ভুরি। সব বিরোধী দলই সমস্বরে জানিয়েছিল – পশ্চিমবঙ্গে নাকি নির্বাচন প্রক্রিয়াটাই সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হতে দেয় নি রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস। যদিও, স্বাভাবিক ভাবেই তৃণমূল কংগ্রেস জানিয়েছিল – এগুলি সবই বিরোধীদের অপপ্রচার, কয়েকটি ছোটোখাটো ঘটনা ছাড়া নির্বাচন হয়েছে স্বাভাবিকভাবেই। উল্টে, বিরোধীরা নাকি প্রার্থী খুঁজে না পেয়ে এইসব কুৎসা করে যাচ্ছে।

ঘটনা যাই হোক, মুখ পুড়েছিল নির্বাচন কমিশনের – সাধারণ মানুষের কোথাও গিয়ে যেন আস্থা উঠে গিয়েছিল এই স্বশাসিত সংস্থার উপর থেকে। আর তাই, আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে – সাধারণ মানুষ থেকে রাজনৈতিক দল, কাউকেই আর নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে দিতে রাজি নয় তারা। আর তাই, জরুরি ভিত্তিতে কলকাতা, বিধাননগর, ডায়মন্ড-হারবার ও বীরভূমের পুলিশ কমিশনারকে সরিয়ে দিয়ে পুলিশমহলে অত্যন্ত সৎ ও নির্ভীক হিসাবে পরিচিত চার নতুন আইপিএসকে দায়িত্ব দিল নির্বাচন কমিশন। সূত্রের খবর, গতকাল বিকালে ঘোষণা হওয়ার পর এই নতুন দায়িত্ব নেওয়ার জন্য মাত্র ২৪ ঘন্টা সময় দেওয়া হয়েছে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

সবথেকে বড় কথা, যে চার পুলিশ কমিশনারকে সরানোর নির্দেশ দেওয়া হল – সেই চার জায়গাতেই সবথেকে বেশি নির্বাচনী প্রতিবন্ধকতার অভিযোগ জমা পড়েছে। কলকাতার দুই লোকসভা কেন্দ্র – কলকাতা দক্ষিণে প্রচারের সময় প্রার্থীর সামনেই বিজেপি কর্মীদের বেধড়ক পেটানোর অভিযোগ উঠেছে। অন্যদিকে, উত্তর কলকাতায় বিজেপি প্রার্থী রাহুল সিনহার নির্বাচনী অফিসই বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। গেরুয়া শিবিরের অভিযোগ, উভয় ক্ষেত্রেই দেখা গেছে পুলিশি নিষ্ক্রিয়তা – আর তাই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী কিছুদিন আগেই অনুজ শর্মাকে কলকাতা পুলিশ কমিশনারের দায়িত্ব দেওয়ার পরেও তাঁর উপর আস্থা রাখতে পারল না কমিশন। অনুজবাবুর জায়গায় নতুন দায়িত্ব দেওয়া হল রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের এডিজি পদে থাকা ডঃ রাজেশ কুমারকে।

পাশাপাশি, বেআইনি অস্ত্র কারখানা নিয়ে বারবার অভিযোগ ওঠায় মুখ পুড়ছিল উত্তর ২৪ পরগনার পুলিশের। আর তাই বিধাননগরের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হল জ্ঞানবন্ত সিংকে, তাঁর জায়গায় নতুন দায়িত্ত্ব নিলেন এডিজি অ্যান্ড আইজি (অপারেশন) পদে থাকা নটরাজন রমেশবাবু। অন্যদিকে, কিছুদিন আগেই অভিযোগ উঠেছিল ডায়মন্ড হারবারে প্রকাশ্যে – বিধায়ক শোভন চট্টোপাধ্যায়ের বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়কে দুষ্কৃতীরা হুমকি দিয়েছিল। বৈশাখীদেবীর অভিযোগ ছিল – তিনি যদি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে ডায়মন্ড হারবারে প্রার্থী হন তাহলে তাঁকে প্রকাশ্যেই ধর্ষণ করা হবে বলে হুমকি দেয় দুষ্কৃতীরা ,বারবার পুলিশকে জানিয়েও কোনো লাভ হয় নি – পরবর্তীকালে মুকুল রায় দিল্লি থেকে এসপি ও ডিএমের সঙ্গে কথা বলে শোভনবাবু ও বৈশাখীদেবীকে দুষ্কৃতীদের হাত থেকে উদ্ধার করার জন্য কথা বলেন।

আর, তৃণমূল কংগ্রেসের বর্তমান অঘোষিত দুনম্বর নেতার কেন্দ্রে এই ধরনের গুরুতর অভিযোগের পর আর কোনো রকম ঝুঁকি নিতে রাজি ছিল না নির্বাচন কমিশন। তাই, ডায়মন্ড হারবারের পুলিশ জেলার সুপার সিলভা মুরুগানকে সরিয়ে সেখানে দায়িত্ব দেওয়া হল বর্তমানে কলকাতা আর্মড পুলিসের থার্ড ব্যাটেলিয়ানের ডিসি পদে শ্রীহরি পাণ্ডেকে। অন্যদিকে, রাজনৈতিক হানাহানি ও ‘চমকানির’ জন্য ‘বিখ্যাত’ বীরভূমেও এবার কড়া পদক্ষেপের পথে হাঁটল নির্বাচন কমিশন। সেখানকার জেলা তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি অনুব্রত মন্ডলের একাধিক বিতর্কিত কথায় রীতিমত আতঙ্কিত বিরোধীরা। পঞ্চায়েতের ‘উন্নয়ন দাঁড় করানোর’ তত্বের পর আসন্ন লোকসভা নির্বাচন উপলক্ষ্যে তাঁর ‘বাণী’ ছিল – নকুলদানা ও সিরিঞ্জ। আর তাই কোনো ঝুঁকি না নিয়ে বীরভূমের বর্তমান পুলিশ সুপার শ্যাম সিংকে সরিয়ে দিয়ে সেখানে দায়িত্ব দেওয়া হল বিধাননগর পুলিসের ডিসি (ডিডি) আভারু রবীন্দ্রনাথকে। সব মিলিয়ে সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন করাতে যে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ নির্বাচন কমিশন তা আবার প্রমাণিত হয়ে গেল বলেই মনে করছেন সংশ্লিষ্টমহল।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!