এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > একেই বলে, চাপের নাম বাপ! জাস্টিস গাঙ্গুলীর ঠেলায় সটান আদালতে মলয়!

একেই বলে, চাপের নাম বাপ! জাস্টিস গাঙ্গুলীর ঠেলায় সটান আদালতে মলয়!


প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট- পুলিশ দিয়ে বিরোধীদের কণ্ঠরোধ করা যায়। কিন্তু বিচারব্যবস্থার কন্ঠ করা যায় না। বারবার পশ্চিমবঙ্গের মাটিতে এটাই সত্য হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতে শুরু করেছে। আর সেই সত্যের যে এক দুই জন বিচারপতি পথ দেখাচ্ছেন, তাদের মধ্যে অন্যতম অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় এবং অমৃতা সিনহা। তাদের একের পর এক নির্দেশ সরকারের কাল ঘাম ছুটিয়ে দিচ্ছে। আর এবার বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এক কড়া নির্দেশেই রীতিমত আদালতের দরজায় গিয়ে উপস্থিত হতে বাধ্য হলেন রাজ্যের আইনমন্ত্রী মলয় ঘটক। যে সরকার, যে রাজ্যের প্রশাসন নিজেদের সর্বেসর্বা বলে দাবি করেন, তারা অবশেষে বিচার ব্যবস্থার কাছে মাথা নত করতে বাধ্য হলেন। অনেকে রসিকতা করে বলছেন, একেই বলে চাপের নাম বাপ।

 

প্রসঙ্গত, নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার ভূমিকা নিয়ে বারবার ক্ষোভ প্রকাশ করেছে কলকাতা হাইকোর্ট। আর এরই মাঝে সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতের বিচারককে পরিবর্তন করার নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট। কিন্তু সেই নির্দেশ বলবৎ না হওয়ার কারণে রীতিমতো ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেছিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। যার পরেই তার যত নির্দেশ দিয়ে ডেডলাইন বেঁধে দিয়েছিলেন বিচারপতি। বিকেল পাঁচটার মধ্যে আইনমন্ত্রী মলয় ঘটককে সশরীরে আদালতের এজলাসে উপস্থিত হওয়ার কথা বলেন তিনি। তারপর সকলের নজর ছিল যে, আইনমন্ত্রী বিচারপতির এই নির্দেশকে অমান্য করেন, নাকি মান্যতা দিয়ে এজলাসে উপস্থিত হন! তবে অবশেষে দেখা গেল, কার্যত বাধ্য ছেলের মত নির্দিষ্ট সময়ের আগেই হাইকোর্টে পৌঁছে গেলেন মলয় ঘটক।

বলা বাহুল্য, কয়লা কান্ডে বারবার কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার পক্ষ থেকে তলব করা হয়েছিল এই মলয় ঘটককে। কিন্তু তিনি সেখানে বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে উপস্থিত হননি। পাল্টা তার বিরুদ্ধে কোনো কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার মতো সাহস হয়নি কেন্দ্রীয় সংস্থার। কিন্তু বিচারপতি অন্য একটি ব্যাপারে কড়া নির্দেশ দিয়ে মলয় ঘটককে কার্যত বুঝিয়ে দিলেন যে, কেন্দ্রীয় সংস্থা নয় আদালত। আদালত যদি নির্দেশ দেয়, তাহলে সেই নির্দেশে আসতেই হবে। আর যদি তিনি আজকে না আসতেন, তাহলে যে বিচারপতি গাঙ্গুলির কড়া পদক্ষেপ মলয় বাবুকে জর্জরিত করে তুলত, তা হয়তো তিনি উপলব্ধি করতে পেরেছিলেন। যার কারণে কোনোরকম রিস্ক না নিয়ে হাইকোর্টে মলয়বাবু পৌঁছে গিয়ে বিচার ব্যবস্থাকে মান্যতা দিলেন।

পর্যবেক্ষকদের মতে, তৃণমূলের এমন অনেক মুখপাত্র আছেন, যারা নাম না করে এবং অনেক সময় নাম করে এই বিচারপতি গাঙ্গুলিকে আক্রমণ করেন। কিন্তু সামনাসামনি লড়ার মত ক্ষমতা তাদের নেই। মুখেই বড় বড় কথা। আর রাজ্যের আইন মন্ত্রী এদিন সেই বিচারপতি গাঙ্গুলীর নির্দেশকে মান্যতা দিয়ে বুঝিয়ে দিলেন যে, জাস্টিস গাঙ্গুলী অন্য জিনিস। অন্য ধাতুতে তৈরি তিনি। কোনো অন্যায়, কোনো অনিয়ম তিনি বরদাস্ত করেন না। তার কাছে শুধু প্রাধান্য পায় বেকারদের যন্ত্রনা, প্রাধান্য পায় হতদরিদ্র মানুষের কান্না। তাই সমস্ত দুর্নীতির আঁতুড় ঘর যেভাবে এক এক করে ভাঙতে শুরু করেছে আদালত, ঠিক সেই একইভাবে এদিন রাজ্যের আইনমন্ত্রীকেও এজলাসে উপস্থিত হতে বাধ্য করলেন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। দিনের শেষে তেমনটাই বলছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!