এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > তৃণমূল > নবান্ন চলোর ডাক শুভেন্দুর, পুলিশ দিয়ে আটকাবেন মমতা? তৈরি আছে বিরোধীরাও!

নবান্ন চলোর ডাক শুভেন্দুর, পুলিশ দিয়ে আটকাবেন মমতা? তৈরি আছে বিরোধীরাও!


 

 

প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট- রাজ্যের বুকে তৃণমূলের বিরুদ্ধে যদি সঠিকভাবে কেউ আন্দোলন করতে পারেন, তাহলে তার নাম শুভেন্দু অধিকারী। একা একটি মানুষ বিরোধী শক্তিকে একত্রিত করে খেলা দেখিয়ে দিচ্ছেন। বুঝিয়ে দিচ্ছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মত শক্তিকেও টাইট দেওয়া যায়। পুলিশ দিয়ে কতই না হেনস্থা করা হচ্ছে রাজ্যের বিরোধীদলের নেতা-নেত্রী থেকে শুরু করে বিরোধী দলনেতাকেও। কিন্তু তাতেও বিজেপি দমবার পাত্র নয়। এবার গ্রুপ ডি চাকরিপ্রার্থীদের মিছিলে উপস্থিত হয়ে নবান্ন চলো ডাক দিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা। আর শুভেন্দুবাবু যখন এই নবান্ন চলোর ডাক দিচ্ছেন, তখন তিনি নিজেও জানেন যে, এই অভিযানকে বাধাপ্রাপ্ত করতে সব রকম চেষ্টা করা হবে পুলিশকে দিয়ে। প্রশাসন এবং তৃণমূল যৌথ উদ্যোগে পুলিশকে কাজে লাগিয়ে ন্যায্য দাবি আদায়ের আন্দোলনরত চাকরিপ্রার্থীদের ওপর হয়তো গুলি চালাতেও দুবার ভাববে না। কিন্তু এসব করে যদি আন্দোলনকে দমন করার কথা ভাবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তার প্রশাসন তাহলে তারা মূর্খের স্বর্গে বাস করছেন। নবান্ন চলোর ডাক দেওয়ার মুহূর্তেই সেই বিষয়টি আচ্ছা করে এই সরকারের কানে ঢুকিয়ে দিয়েছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।

প্রসঙ্গত, ধীরে ধীরে শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে যারা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং এই সরকারের বিরোধী, তারা এক ছাতার তলায় আসতে শুরু করেছেন। ইতিমধ্যে গ্রুপ ডি চাকরিপ্রার্থীদের মিছিলে শুভেন্দু অধিকারীর পাশাপাশি হাঁটতে দেখা গিয়েছে কংগ্রেসের কৌস্তভ বাগচীকে। যদিও বা কৌস্তভবাবু দাবি করেছেন, এটা অরাজনৈতিক মিছিল। তাই মানুষের দাবি আদায়ের জন্য তিনি এই মিছিলে উপস্থিত হয়েছেন এবং আগামী দিনে আরও অনেকে এখানে সামিল হবেন। তবে আর যাই হোক, এই চিত্র উঠে আসতেই রাজ্যের রাজনৈতিক সমীকরণে বদলের গন্ধ আসতে শুরু করেছে। সকলে একটাই কথা বলছেন যে, শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে প্রত্যেকে একত্রিত হচ্ছেন ধীরে ধীরে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধেও যে লড়াই করা যায় এবং এই সরকারকে যে উৎখাত করার পথে সকলেই সঙ্গবদ্ধ, তা স্পষ্ট। তবে শুধু মিছিলে উপস্থিত হয়ে এখানেই সেই লড়াইকে থামিয়ে দেওয়া নয়। শুভেন্দু অধিকারী চাইছেন, এই লড়াই শেষ পর্যন্ত নবান্নের দরজা অবধি নিয়ে যেতে। তাই তিনি সেই মিছিলের পরেই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে চাকরিপ্রার্থীদের উদ্দেশ্যে এবং রাজ্যে যারা যারা বঞ্চনার শিকার, তাদের সকলকে একত্রিত হওয়ার আহ্বান জানালেন। শুধু তাই নয়, এক্ষেত্রে শুভেন্দু অধিকারী একটি তাৎপর্যপূর্ণ বার্তাও দিয়েছেন আন্দোলনকারীদের উদ্দেশ্যে। কেননা তিনি খুব ভালো মতো জানেন যে, পুলিশ দিয়ে সেই আন্দোলনকে আটকানোর সব চেষ্টা করা হবে। তাই পুলিশের গুলি যদি ছোড়া হয়, তাহলে সেটাও কম পড়ে যাবে বলে নবান্নকে রীতিমতো বিড়ম্বনায় ফেলে দিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা।

বিরোধীদের কটাক্ষ, এই রাজ্যের শাসক দল সম্পূর্ণরূপে পুলিশ নির্ভর হয়ে পড়েছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তার দলের নেতৃত্বদের থেকেও বেশি ভরসা করছেন প্রশাসনিক আধিকারিকদের ওপর। তাই শুভেন্দু অধিকারীর নবান্ন চলো অভিযান এমনিতেই ভাবিয়ে তুলেছে রাজ্য সরকারকে। হয়তো এখনও তার সময়, তারিখ কিছুই ঠিক হয়নি। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মনে একটা ভয়ের বাতাবরণ তৈরি করতে সক্ষম হয়েছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা। হয়তো শুভেন্দু অধিকারী যখন এই নবান্ন চলো অভিযানের ডাক দিয়েছেন, ঠিক তখনই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সমস্ত প্রশাসনিক কর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন যে, যেদিনই হোক আর যখনই হোক, সব সময় পুলিশকে তৈরি থাকতে হবে সমস্ত রকম মোকাবিলা করার জন্য। কিন্তু যদি মানুষের ন্যায্য দাবি নিয়ে তৈরি হওয়া এই নবান্ন অভিযান সংঘটিত হয় এবং তাতে পুলিশ বাধা দিতে আসে তাহলে সেটা সবথেকে বড় ভুল হবে এই সরকারের জন্য। আর তার ফলেই এই সরকারের পতনের রাস্তা প্রশস্ত হবে বলেই দাবি বিরোধী শিবিরের।

পর্যবেক্ষকদের মতে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তার প্রশাসন যদি ভেবে নেয়, পুলিশ দিয়ে সব সময় বিরোধীদের বাধা দেবে, তাহলে তারা ভুল করছে। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও সবরকম প্রটেকশন নিয়েই ময়দানে নেমেছেন। আর এই সরল সত্যটা শুভেন্দুবাবু খুব ভালোমতো বোঝেন যে, তিনি যদি এই বঞ্চিত চাকরি প্রার্থীদের নিয়ে নবান্ন অভিযান করেন, তাহলে সেখানে পুলিশের সব রকম চেষ্টা থাকবে। হয়তো এই পুলিশ সবকিছু ভুলে গিয়ে গুলি পর্যন্ত চালাতে বাধ্য হবে শুধুমাত্র নিজেদের আসনটুকু টিকিয়ে রাখার জন্য দমন-পীড়ন নীতি বলবৎ করতেও দুবার ভাববেন না এই রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান। তবে শুধুমাত্র ক্ষমতার প্রশাসন দিয়ে যদি সব কার্যসিদ্ধি করতে চায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তার সরকার, তাহলে তা ভুল‌। যদি প্রশাসনের পক্ষ থেকে এইরকম কোনো কাজ করা হয়, তাহলে তাকে বাধা দেওয়ার জন্য এবং মোকাবিলা করার জন্য যে বিরোধী শক্তিও তৈরি, তা এদিনই বুঝিয়ে দিয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী। কিন্তু তারপরেও এই সরকারের শিক্ষা হবে তো? লজ্জা হবে তো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশাসনের? প্রশ্ন তুলছে সমালোচক মহল।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!