এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > তৃণমূল > ফ্যাসিস্ট মমতার নয়া কীর্তি? প্রাক্তন বিধায়কদের চূড়ান্ত অপমান! অবহেলা নিয়ে সোচ্চার শুভেন্দু!

ফ্যাসিস্ট মমতার নয়া কীর্তি? প্রাক্তন বিধায়কদের চূড়ান্ত অপমান! অবহেলা নিয়ে সোচ্চার শুভেন্দু!


প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-এই রাজ্য সরকার মন্ত্রী, বিধায়কদের বেতন বৃদ্ধি করতে পারে। কিন্তু বামেদের যারা প্রাক্তন বিধায়ক, তাদের পেনশন বাড়ানোর দিকে কোনো মনোযোগ নেই রাজ্য সরকারের। বর্তমানে শুভেন্দু অধিকারী রাজ্যের বিরোধী দলনেতা। তিনি বিজেপির প্রতীকে নির্বাচিত হয়েছেন। তিনিও প্রবল বাম বিরোধী। কিন্তু তৃণমূল সরকার যখন বর্তমান মন্ত্রী বিধায়কদের বেতন বৃদ্ধি করছে, তখন প্রাক্তন বিধায়কদের কেন পেনশন দেওয়ার ক্ষেত্রে এই ঢিলেমি, তা নিয়েই প্রশ্ন তুলে দিলেন নন্দীগ্রামের বিজেপি বিধায়ক। যুক্তি সহকারে এদিন শুভেন্দু অধিকারী বিধানসভায় যে তথ্য তুলে ধরেছেন, তা রীতিমতো চমকে দেওয়ার মত। প্রবল বাম বিরোধী শুভেন্দুবাবুর বক্তব্য, এই সরকার প্রতিহিংসা পরায়ণ। বিরোধী শক্তিকে ন্যূনতম সম্মান দিতে জানে না। বামেদের যেহেতু একাধিক প্রাক্তন বিধায়ক রয়েছে, তাই তাদের পেনশন দেওয়ার দিকে এবং সেই পেনশন বৃদ্ধির দিকে এই সরকারের কোনো মনোযোগ নেই।

প্রসঙ্গত, এদিন বিধানসভায় মন্ত্রী, বিধায়কদের বেতন বৃদ্ধির জন্য একটি সংশোধনী বিল আনার চেষ্টা করেছিল রাজ্য সরকার। কিন্তু শেষ পর্যন্ত রাজ্যপালের সবুজ সংকেত না থাকায় তারা সেই বিল নিয়ে আলোচনা করতে পারেনি। যার ফলে তা আটকে গিয়েছে। আর সেই ব্যাপারেই মন্তব্য করতে গিয়ে বামেদের একাধিক প্রাক্তন বিধায়ক সম্পর্কে প্রতিক্রিয়া দেন রাজ্যের বর্তমান বিজেপির বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তিনি বলেন, “আমি এমন অনেক বাম নেতাকে চিনি, যারা সততার সঙ্গে রাজনীতি করেছেন। বামেদের পচন তো শেষ দিকে ধরেছে। কিন্তু এমন অনেক বামেদের প্রাক্তন বিধায়ককে আমি চিনি, যারা এখন ইনসুলিন কেনার টাকাটুকু পান না। ওষুধ কিনতে পারেন না। তাদের দিকে এই সরকারের নজর নেই। এতটাই এরা প্রতিহিংসাপরায়ণ! চরম ফ্যাসিস্ট মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।” এখন শুভেন্দুবাবুর এই কথা শুনে তৃণমূল অনেক কথা বলতে পারে। তারা বলতে পারে যে, শুভেন্দু অধিকারী এখন বামেদের সমর্থন পেতে তাদের প্রাক্তন বিধায়কদের জন্য গলা ফাটাচ্ছেন। কিন্তু বিষয় সেটা নয়। বিষয় অন্যখানে। শুভেন্দু অধিকারী বিরোধী দলনেতা। অর্থাৎ তিনি যেখানে যেখানে বিরোধীদের কণ্ঠস্বর রয়েছে, সেটাকে মিশে যেতে দেবেন না। প্রথম দিন থেকেই তিনি এই কর্তব্য এবং দায়িত্ব পালন করে এসেছেন। তাই বামেদের সঙ্গে, তাদের মতাদর্শের সঙ্গে শুভেন্দু অধিকারীর বিস্তর ফারাক হয়ত রয়েছে। তিনি সেই মতাদর্শকে সমর্থন করেন না। কিন্তু তাই বলে প্রাক্তন বিধায়কদের এইভাবে পেনশন কমিয়ে দিয়ে তাদের অসম্মান করবে রাজ্য, এটা বিরোধী দলনেতা হিসেবে তিনি মেনে নিতে পারবেন না। তাই মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে প্রবল বাম বিরোধিতা সত্ত্বেও এই সরকারের বিরুদ্ধে সোচ্চার হলেন শুভেন্দুবাবু।

বিজেপির দাবি, শুভেন্দু অধিকারীর এই কথার পরেও কি শিক্ষা নেবে বামেরা? তারা তো সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে এই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে এক টেবিলে বসে বিজেপিকে ক্ষমতাচ্যুত করার প্ল্যানিং করছেন। অথচ রাজ্যে সেই বামেদের প্রাক্তন বিধায়কদের কি করুণ দশা! সেই দিকে কি আলিমুদ্দিন স্ট্রিটের কোনো নেতার চোখ যায় না! কেন তাদের হয়ে গলা ফাটাতে হবে শুভেন্দু অধিকারীকে! কেন সিপিএমের মধ্যে সেই নেতা নেই, যারা এই যুক্তিসঙ্গত প্রশ্ন তুলে তৃণমূলের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে পারেন না? কেন তারা বলতে পারেন না যে, তাদের প্রাক্তন বিধায়কদের অবহেলা করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেন বেতন বৃদ্ধি করবেন বর্তমান বিধায়ক, মন্ত্রীদের? তবে বামেদের অবশ্য অনেক দায় রয়েছে, তাই তারা তাদের প্রাক্তন বিধায়কদের সম্পর্কে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে এই প্রশ্ন তুলতে পারবেন না। তবে সেই প্রশ্ন তুলে শুভেন্দু অধিকারী বামেদেরকে বুঝিয়ে দিয়েছেন যে, তিনি মতাদর্শকে সমর্থন না করলেও, বামেদের অনেক নেতাকে সম্মান করেন। যে কারণে তৃণমূলের বিরুদ্ধে তিনি শুধু রাজনৈতিক স্বার্থ নিয়ে নয়, সকলেরই সরকার বিরোধী আন্দোলনে যাতে ব্যক্তিস্বার্থ এবং মানবিক মূল্যবোধ অটুট থাকে, তার জন্য লড়াইটা লড়ছেন। তাই বামেদের যদি বিন্দুমাত্র মেরুদণ্ড থাকে, তাহলে শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে এই ব্যাপারে সহমত হওয়া উচিত বলেই দাবি গেরুয়া শিবিরের।

পর্যবেক্ষকদের মতে, শুভেন্দু অধিকারী যেদিন থেকে বিরোধী দলনেতা হয়েছেন, সেদিন থেকেই তিনি বুঝিয়ে দিয়েছেন, তিনি শুধু বিজেপির নেতা নন। রাজ্যে যে সমস্ত বিরোধী দল রয়েছে, তাদের সকলের পাশেই তিনি দাড়াবেন। কারণ বিজেপির প্রতীকে নির্বাচিত হলেও, তার পদটির অর্থ হলো, যেখানেই শাসকদলের দ্বারা কেউ আক্রান্ত হবে, তাদের পাশে দাঁড়ানো। তাই বিধায়ক, মন্ত্রীদের বেতন বৃদ্ধির জন্য সরকার যখন সিদ্ধান্ত নিচ্ছে, তখন আর্ত মানুষের কথা চিন্তা করেছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা। যারা বঞ্চনার শিকার, তাদের জন্য আওয়াজ তুলেছেন তিনি। সরকারের এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে তিনি জানিয়ে দিয়েছেন, এই বেতনের অংশটা দেওয়া হোক ডিয়ে কর্মচারীদের। দেওয়া হোক, যারা চার মাস ধরে গ্রামে কাজ করেও বেতন পাচ্ছেন না, তাদের সকলকে। পাশাপাশি প্রবল বাম বিরোধী শুভেন্দু অধিকারী বামেদের প্রাক্তন বিধায়কদের সঙ্গে এই রাজ্য যে প্রতিহিংসার আচরণ করছে, সেকথা তুলে ধরেও সরব হয়েছেন। তাই যদি বিন্দুমাত্র মূল্যবোধ থাকে, তাহলে শুভেন্দু অধিকারীর কাছে কৃতজ্ঞতা স্বীকার করা উচিত বামেদের। পাশাপাশি গোটা ঘটনায় লজ্জা পাওয়া উচিত এই ফ্যাসিস্ট সরকারের। দিনের শেষে তেমনটাই বলছেন রাজনৈতিক সমালোচকরা।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!