এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > তৃণমূল > ভাইপো রাজে অতিষ্ঠ তৃণমূল? বড়সড় বিপদে পুরোনো নেতারা! করুনা প্রকাশ শুভেন্দুর!

ভাইপো রাজে অতিষ্ঠ তৃণমূল? বড়সড় বিপদে পুরোনো নেতারা! করুনা প্রকাশ শুভেন্দুর!


 

প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট- যত দিন যাচ্ছে, তৃণমূলে একটা জিনিস স্পষ্ট হচ্ছে যে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ধীরে ধীরে হাল ছেড়ে দিতে শুরু করেছেন। এখন সবটাই চলে যাচ্ছে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে। দলের পুরনো নেতারা কার্যত গুরুত্বহীন হয়ে যাচ্ছেন। নতুন যুব নেতাদের হাতেই সব দায়িত্ব দিচ্ছেন সর্বভারতীয় ভাইপো। বিরোধীরা বারবার করে তেমনটাই অভিযোগ করছে। আর এই পরিস্থিতিতে তৃণমূলের অনেক দুর্দিনের নেতারা, যারা প্রথম থেকে তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে জড়িয়ে ছিলেন, তাদের পরিস্থিতি দেখে করুনা প্রকাশ করলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। এক্ষেত্রে তৃণমূলের বর্তমান রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সীকে নিয়ে এমন একটি কথা বললেন শুভেন্দুবাবু, যাতে তৃণমূলের অনেকেই হতবাক হয়ে গিয়েছেন, অনেকে আবার চরম অস্বস্তিতে পড়ে গিয়েছেন বিরোধী দলনেতার এই বক্তব্যে। অনেকে বলছেন, এখন তো তৃণমূল দলের সব সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন ভাইপো। ভবিষ্যতে হয়তো পিসির সিংহাসনে অর্থাৎ প্রশাসনিক চেয়ারেও তিনি বসে পড়বেন। আর সেই সময় আসতে খুব বেশি দেরি নেই। যার ফলে তৃণমূলের পুরনো নেতারা ধীরে ধীরে সাইড হয়ে যাবেন বলেই কটাক্ষ বিরোধী শিবিরের।

প্রসঙ্গত, এদিন তৃণমূলের রাজ্য সভাপতিকে নিয়ে শুভেন্দু অধিকারীকে একটি প্রশ্ন করা হয়। আর সেই প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে তিনি তৃণমূলের ঘরের খবর সামনে এনে দেন। শুভেন্দুবাবু বলেন, “তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী খাতায়-কলমে রয়েছেন। কিন্তু সবকিছু ভাইপোই করছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তার ভাইপোর হাতে সবকিছু তুলে দিয়েছেন। তাই নামে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থাকলেও, এই কোম্পানির মালিক হচ্ছে ভাইপো। সুব্রত বক্সি, সৌগত রায় এই সমস্ত বয়স্ক মানুষদের জন্য আমার করুণা হয়। যারা পুরাতন আদি তৃণমূলের নেতা, তারা আজকে এই হাঁটুর বয়সী, নাতির বয়সী একজন ছেলে আসলে মঞ্চে উঠে দাঁড়ান। এদের দেখলে সত্যিই আমার করুনা হয়। এরা অস্তিত্ব সংকটে ভুগছে।” একাংশের মতে, শুভেন্দু অধিকারী তো ঠিক কথাই বলেছেন। তা না হলে এত বড় ধর্ণা হয়ে গেল, সেখানে তৃণমূলের অনেক তো অভিজ্ঞ নেতা ছিলেন? কেন সেখানে নেতৃত্ব দিতে হলো নব্য যুবরাজকে? কেন তাকে সব প্রবীণ এবং বয়স্কদের অভিজ্ঞ নেতারা মেনে নিলেন? কেন তারা একবারও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বলতে পারলেন না যে, দলে তো অনেকেই আছে। কেন এই নব্য নেতার কথা মানা হবে? তবে এই কথা বলার মত তৃণমূলে লোকের বড্ড অভাব। এই কথা বলেছেন বলেই আজকে শুভেন্দু অধিকারী তৃণমূল ছেড়ে বাইরে বেরিয়ে এসে বিজেপিতে থেকে তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াই করছেন। তার হিম্মত রয়েছে শাসকের সঙ্গে চোখে চোখ রেখে কথা বলার। আর যাদের হিম্মত নেই, তারা এখনও আঞ্চলিক দলের সর্বভারতীয় ভাইপোর সমস্ত কথা মেনে নিয়ে সব হজম করছেন বলেই দাবি সমালোচকদের।

বিজেপির দাবি, আঞ্চলিক দল তৃণমূল কংগ্রেসের মুরোদ কত, তা এখানেই বোঝা যায়। পিসির পর এই দলের সর্বেসর্বা হয়ে উঠেছেন ভাইপো। দলে অনেক অভিজ্ঞ নেতা থাকতেও, তাদের এখন এই নতুন ভাইপোর কথা মেনেই চলতে হচ্ছে। তার ক্রীতদাস হয়ে থাকতে হচ্ছে। তবে শুভেন্দু অধিকারী তা পারেননি বলেই তিনি এখন লড়াই করছেন। তাই সুব্রত বক্সী, সৌগত রায়, যারা প্রবীণ নেতা, তাদের এখন মনে মনে অনেকটাই কষ্টে রয়েছেন। তারা ভাবছেন যে, কি করে এই দমবন্ধকর পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসা যায়। তবে তাদের এখন এমন পরিস্থিতি, তারা না পারবেন ভাইপোর বিরুদ্ধে কথা বলতে, না পারবেন নেত্রীকে বোঝাতে। আর তৃতীয় রাস্তা খোলা থাকলেও কতটা শাসকের বিরুদ্ধে লড়াই করার মানসিকতা নিয়ে বিরোধী শিবিরে যোগদান করবেন তারা, সেটা নিয়েও যথেষ্ট প্রশ্ন রয়েছে। কারণ তাদের ক্ষমতা চাই। তাই সেই ক্ষমতা ভোগ করতে গিয়ে নিজেদের লজ্জা, মেরুদণ্ড সবকিছু বিক্রি করে দিয়েছেন এই বর্ষিয়ান নেতারা বলেই দাবি গেরুয়া শিবিরের।

পর্যবেক্ষকদের মতে, শুভেন্দু অধিকারীর কথাই যদি বাস্তব হয়, তাহলে তৃণমূলে ভাঙ্গন ধরতে খুব একটা বেশি সময় লাগবে না। অনেক পুরাতন নেতারা, যারা ভাইপোর নেতৃত্ব মেনে নিতে পারছেন না, তারা এখন চেষ্টা করছেন, দলের একটা দুর্দিন আসুক। তাহলেই তারা দলকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলতে পারবেন। কারণ তারা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্ব মেনে নিতে পারবেন। কিন্তু নতুন নতুন নেতা হওয়া ভাইপোকে মেনে নিতে পারছেন না, তবে প্রকাশ্যে মুখ খুললে আবার তাদের বিপদে পড়তে হবে‌। তাই কষ্ট হলেও তারা সবকিছু মুখ বুজে সহ্য করে নিচ্ছেন। কিন্তু অপেক্ষা করছেন সেই চরম সময়ের। যখন তারা প্রত্যাঘাত করতে পারবেন সেই সর্বভারতীয় যুবরাজকে। তবে সেই সময় আসতে আসতে অনেকটা দেরি হয়ে যাবে না তো? তাই যদি বিবেকবোধ থাকে, তাহলে শুভেন্দু অধিকারীর বক্তব্যে সাড়া দিয়ে এখনই বড় সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত তৃণমূলের প্রবীণ নেতাদের। যারা ভাইপোর ক্ষমতায় অতিষ্ট হয়ে উঠেছেন, তারা একটা সাহসী সিদ্ধান্ত নিয়ে দলের বিরুদ্ধে জেহাদ ঘোষণা করে বেরিয়ে আসুন। মেরুদন্ড নিয়ে যদি রাজনীতি করতে চান, তাহলে নতুন পথ বেছে নিন। শুভেন্দু অধিকারীর বক্তব্যের পর তেমনটাই বলছেন রাজনৈতিক সমালোচকরা।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!