ফের ক্ষোভ উগরে প্রকাশ্যে সরব হেভিওয়েট তৃণমূল নেতা, তৃণমূলের অন্দরে ক্রমশ বাড়ছে জটিলতা তৃণমূল নদীয়া-২৪ পরগনা রাজনীতি রাজ্য November 7, 2020 প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – নদীয়া জেলায় দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বকে সামলানোর জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দায়িত্ব দিয়েছিলেন মহুয়া মৈত্রের ওপর। কিন্তু যত দিন যাচ্ছে, ততই সেই জেলার শীর্ষ নেতারা একের পর এক প্রকাশ্যে মন্তব্য করতে শুরু করেছেন। যা রীতিমত অস্বস্তিতে ফেলছে জেলা তৃণমূল নেতৃত্বকে। ইতিমধ্যেই পুরনোদের বাদ দেওয়া নিয়ে সরব হয়েছিলেন নাকাশিপাড়ার তৃণমূল বিধায়ক কল্লোল খাঁ। আর এবার কর্মীসভায় উপস্থিত থেকে জেলা নেতৃত্বের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিতে দেখা গেল বর্ষীয়ান তৃণমূল নেতা শঙ্কর সিংহকে। জানা গেছে, নতুন কমিটি গঠনের সময় শান্তিপুর ব্লক, তাহেরপুর, বীরনগর শহরের ব্লক সভাপতি পদ থেকে শংকরবাবুর ঘনিষ্ঠদের সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এদিন সেই প্রসঙ্গে প্রকাশ্যেই ক্ষোভ উগড়ে দেন এই তৃণমূল নেতা। যার ফলে শাসকদল এখানে কিছুটা হলেও বেকায়দায় পড়ে গেল বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। এদিন এই প্রসঙ্গে শঙ্কর সিংহ বলেন, “50 বছর ধরে হরিণঘাটা থেকে করিমপুর পর্যন্ত রাজনীতি করেছি। অনেক নেতা দেখেছি। আমি মর্মাহত। সর্বোচ্চ নেতৃত্ব কমিটি করে দিয়েছেন। এটাই শেষ সিদ্ধান্ত। এতে কোনো দ্বিমত নেই। কিন্তু যারা করেছেন, তারা আরও একটু গভীরে গিয়ে ভেবে করলে পারতেন।” আর এরপরই শান্তিপুরে দলীয় সভাপতির পদ থেকে তপন সরকারকে সরিয়ে নতুন সভাপতি হওয়া নিমাই বিশ্বাসকে শঙ্কর সিংহ বলেন, “আপনি আমার থেকে কয়েকবছরের বড়ই হবেন। কিন্তু এই 10 টা পঞ্চায়েতের দায়ভার কিন্তু আপনার। পরে বলে দেবেন আপনার দায়ভার নেই, যারা করছে তারা বলবে “জানি না”। দিস ইজ নট ফেয়ার। সভাপতিকে বলব, শান্তিপুরের সিদ্ধান্তের বিষয় পুনর্বিবেচনা করতে।” অর্থ্যাৎ গোটা বিষয়ে কমিটির ব্যাপারে তিনি যে অত্যন্ত ক্ষুব্ধ, তা শঙ্করবাবুর কথাতেই কার্যত পরিষ্কার বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - এদিন শঙ্কর সিংহ আরও বলেন, “কাউকে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে দল থেকে বের করে দেওয়ার রাজনৈতিক প্রবণতা যদি কারও থাকে, তাহলে তাকে সমর্থন করি না। আমি প্রতিশোধের রাজনীতি নিয়ে চলিনি। অজয় 25 বছর পৌরপ্রধান, 25 বছর বিধায়ক ছিল। হঠাৎ যদি ভেবে নিই, ওর কোনো মূল্য নেই, ওর কোন গুরুত্ব নেই, এই ধরনের রাজনৈতিক বাতাবরণ তৈরি হয়। অস্থির রাজনৈতিক পরিস্থিতি কেউ যদি তৈরি করে কোনো সিদ্ধান্তের মধ্যে দিয়ে, তাহলে দল ক্ষতিগ্রস্ত হবে।” অর্থাৎ নতুন কমিটির ব্যাপারে তিনি যে একেবারেই খুশি নন, তা কার্যত স্পষ্ট শঙ্করবাবু বক্তব্যে। স্বাভাবিকভাবেই এর ফলে জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব ঐক্য বজায় রেখে চলার চেষ্টা করলেও, তা যে কোনোমতেই সম্ভব হচ্ছে না, তা একের পর এক নেতার বিদ্রোহী মনোভাবেই স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। কিভাবে পরিস্থিতিকে সামাল দেওয়া যাবে! এদিন এই প্রসঙ্গে জেলা তৃণমূলের মুখপাত্র বাণীকুমার রায় বলেন, “এরকম কোনো বিষয় আমার জানা নেই। ফলে এই বিষয়ে কোনো মন্তব্য করব না।” তবে তৃণমূল নেতারা এই গোটা ব্যাপারটি এড়িয়ে গেলেও, পরিস্থিতি ক্রমশ হাতের বাইরে চলে যাচ্ছে বলেই আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। তাই অবিলম্বে যদি এই কমিটি গঠন নিয়ে বিদ্রোহী নেতাদের ক্ষোভকে সামাল দেওয়া যায়, তাহলে আগামীদিনে এই জেলায় তৃণমূলকে প্রবল সমস্যার মুখে পড়তে হবে বলেই দাবি রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের। সব মিলিয়ে গোটা পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের। আপনার মতামত জানান -