উত্তরবঙ্গে মমতাকে তীব্র আক্রমণ করলেও, দক্ষিণবঙ্গে এসে চুপ রাহুল গান্ধী, বাড়ছে জল্পনা জাতীয় রাজ্য May 8, 2019 কিছুদিন আগেই মালদায় নির্বাচনী প্রচারে এসে বিজেপি পরিচালিত বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকারকে যেমন কড়া ভাষায় আক্রমণ করেছিলেন কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সভাপতি রাহুল গান্ধী, ঠিক তেমনই বাংলার বর্তমান শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস ও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধেও আক্রমণ জানিয়েছিলেন তিনি। আর রাজ্যের নির্বাচনী প্রচারে এসে দলের শীর্ষ নেতার মুখ থেকে মমতাবিরোধী মন্তব্য শোনায় কিছুটা হলেও উজ্জীবিত হতে দেখা গিয়েছিল প্রদেশ কংগ্রেসের সদর দপ্তর বিধান ভবনের নেতাদের। কিন্তু এবার ফের সেই লোকসভা ভোটের প্রচারে বাংলায় এসে দক্ষিণবঙ্গের পুরুলিয়া থেকে নির্বাচনী প্রচারসভায় দুবার ছাড়া মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সম্পর্কে আর কোনো মন্তব্য করতে দেখা গেল না কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সভাপতি রাহুল গান্ধীকে। সূত্রের খবর, মঙ্গলবার পুরুলিয়া লোকসভা কেন্দ্রের কংগ্রেস প্রার্থী নেপাল মাহাতোর সমর্থনে কোটশিলার টালি সেন্টারে একটি সভা করেন কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সভাপতি। যেখানে রাহুল গান্ধী ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি সোমেন মিত্র, কংগ্রেসের পশ্চিমবঙ্গের পর্যবেক্ষক গৌরব গগৈ, প্রদেশ কংগ্রেসের নেতৃত্ব এবং জেলা কংগ্রেসের নেতারা। আর সেই সভাতে মোট 17 মিনিটের বক্তব্যে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সমালোচনা করেন রাহুল গান্ধী। কিন্তু যে রাজ্যের প্রধান শক্তি তৃনমূল, সেখানে কেন সেই তৃণমূলের বিরুদ্ধে কোনো বক্তব্য রাখলেন না রাহুল গান্ধী তা নিয়ে ইতিমধ্যেই জোর জল্পনা শুরু হয়ে গিয়েছে রাজনৈতিক মহলে। তবে বক্তব্য রাখতে গিয়ে দু মিনিটের মাথায় এদিন রাহুল গান্ধী বলেন, “মোদীজি, মমতাজি কাউকে রোজগার দিয়েছেন কি? কৃষকদের উন্নয়নে মোদীজি, মমতাজি কিছু করেছেন কি?” কিন্তু এটাই শেষ, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সম্পর্কে আর কোনোরূপ মন্তব্য করতে শোনা যায়নি রাহুল গান্ধীকে। তবে প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে একের পর এক মন্তব্য করে এদিনের সভায় শোরগোল তুলে দেন কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সভাপতি। তিনি বলেন, “চৌকিদার দেশের 15 জন পুঁজিপতির জন্য কাজ করলেও গরিবদের জন্য কোনো কাজ করেননি। বেকার যুবকরা ব্যাংকের লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলেন। কৃষকরা কুড়ি হাজার টাকা ঋণ শোধ করতে না পারলেও তাদের জেলে যেতে হয়েছে। কিন্তু ললিত মোদী, নীরব মোদী, মেহুল চোকসিরা আজও ধরা পড়েনি।” আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - অন্যদিকে 2019 সালে কংগ্রেস যদি কেন্দ্রে ক্ষমতায় আসে তাহলে কৃষকদের জন্য একটি বাজেট এবং অপর একটি সাধারণ বাজেট হবে বলেও এদিনের সভায় প্রতিশ্রুতি দেন রাহুল গান্ধী। এদিকে কংগ্রেস ক্ষমতায় এলে পাঁচ বছরে 25 কোটি লোককে তিন লক্ষ 60 হাজার টাকা করে দেওয়া হবে এবং এক বছরের মধ্যে 22 লক্ষ বেকারকে সরকারি চাকরি এবং 10 লক্ষ বেকারের পঞ্চায়েতে কর্মসংস্থান হবে বলেও জানিয়ে দেন কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সভাপতি। পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গ থেকে এবার তারা সব থেকে বেশি আসন পাবে বলেও আশা প্রকাশ করেন রাহুল গান্ধী। তিনি বলেন, “ভারতে আর এমন কোনো শক্তি নেই যে নরেন্দ্র মোদিকে প্রধানমন্ত্রী করতে পারে। কংগ্রেসই একমাত্র দল যে মোদির বিরুদ্ধে লড়াই করে জয় আনতে পারে। পশ্চিমবঙ্গ থেকে বেশি আসন জিতে জিতে ক্ষমতায় আসতে হবে। মোদি আমার বিরুদ্ধে যাই বলুন না কেন আমি তাকে ভালোবাসা দিয়েই হারাব।” তবে মোদির বিরুদ্ধে রাহুল গান্ধী আক্রমণ করলেও কেন বাংলায় কংগ্রেসের বিরোধী শক্তি হিসেবে পরিচিত শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস ও নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে কোনোরূপ আক্রমণাত্মক মন্তব্য করলেন না কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সভাপতি? তাহলে কি কিছুদিন আগেই রাজ্যে এসে সলমন খুরশিদ কেন্দ্রে মহাজোট গঠনের ব্যাপারে তৃণমূল কংগ্রেসকে স্বাগত জানানোর কথা বললে সেই সলমন খুরশিদের মন্তব্যকে সমর্থন জানিয়ে ভবিষ্যতে যদি কেন্দ্রে তারা ক্ষমতায় আসে তাহলে সেখানে তৃণমূলও থাকতে পারে – এহেন সম্ভাবনার কথা মাথায় রেখেই তৃণমূলের বিরুদ্ধে অলআউট এটাকে অবতীর্ণ হলেন না রাহুল গান্ধী! জোর জল্পনা রাজনৈতিক মহলে। আপনার মতামত জানান -