এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > তৃণমূল > ফের উত্তপ্ত বিধানসভা, অবহেলার জন্যে দায়ী মমতাই, সোচ্চার বিজেপি!

ফের উত্তপ্ত বিধানসভা, অবহেলার জন্যে দায়ী মমতাই, সোচ্চার বিজেপি!


 

প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট- বিধানসভায় কথা বলার অধিকারটুকু নেই বিরোধীদের। এমনিতেই এই রাজ্যের বিধানসভায় কি হয়, তা দেখার মতো সৌভাগ্য হয় না রাজ্যবাসীর। কিন্তু এক দুই দিন অর্থাৎ বাজেট অধিবেশনের দিন তার লাইভ সম্প্রচার হওয়ার কারণেই এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী কতটা অহংকারী, কতটা ঔদ্ধত্য নিয়ে বিরোধীদের দমন পীড়ন করার চেষ্টা করেন, সেটা গতকালকেই এই রাজ্যের মানুষ প্রত্যক্ষ করেছেন। আর আজ সেই রাজ্যবাসীর সমস্যা থাকা কিছু বিষয় নিয়ে যখন বিরোধীরা প্রশ্ন তুলছে, তখন তাদের কথা শোনার মত ধৈর্য নেই এই রাজ্যের শাসকদলের। তাই বাধ্য হয়েই আজকেও ওয়াকআউট করে বেরিয়ে এসেছে বিজেপির প্রতিনিধি দল।

অনেকেই প্রশ্ন করেন যে, গঠনগত বিরোধিতা করতে গিয়ে বিজেপি কেন বিধানসভার অধিবেশনকে নষ্ট করছে! কেন তারা বাইরে বেরিয়ে আসছে, যখন সরকার কথা শোনে না,, যখন সরকারের কানে বারবার দেওয়ার চেষ্টা করেও লাভের লাভ কিছু হয় না, তখন তো প্রতিবাদের একমাত্র রাস্তা সেই অধিবেশন বয়কট করা। তাই বিরোধী দল হিসেবে চোখে চোখ রেখে যখন শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে বিজেপি এই সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই করছে, তখন তো বাইরের মানুষকেও দেখাতে হবে যে, সরকার কিভাবে বাংলার মানুষকে বঞ্চিত রেখেছে। তাই আজকে এই উদাসীন সরকারের বিরুদ্ধে কথা বলতে গিয়ে বাধা পেয়ে শেষ পর্যন্ত বাইরে এসে নিজেদের প্রতিবাদ জানালো গেরুয়া শিবির।

প্রসঙ্গত, আজ রাজ্য বিধানসভার অধিবেশনে বাজেটে কিছু না থাকা বিষয় নিয়ে মুলতবি প্রস্তাব আনতে চায় বিজেপি। যেখানে তারা দাবি করে যে, চা বাগানের শ্রমিকদের প্রতি এই সরকারের দরদ উথলে ওঠে। তারা মাঝেমধ্যেই বলে যে, তারা প্রত্যেকটি চা বাগান খুলে দিয়েছেন। কিন্তু বাস্তব চিত্র অন্য। চা বাগানের শ্রমিকদের জন্য এই রাজ্য সরকার কাজের কাজ কিচ্ছু করেনি। সেক্ষেত্রে যখন চা বাগানের শ্রমিকরা কাঁদছে, তখন রাজ্যের শাসকদলের নেতা, মন্ত্রীরা বিধানসভায় গাল ভরা গল্প শোনাচ্ছেন। ফলে রাজ্য বাজেটে সেই সমস্ত অবহেলিত চা শ্রমিকদের নিয়ে এই সরকার কিছু না বলার কারণেই যে বিরোধীরা তাদের প্রতিবাদ জানাতে শুরু করেছে, তা স্পষ্ট। কিন্তু এসব করে লাভের লাভ কিছু হবে কি? কারণ এই সরকার তো ভোটব্যাংক ছাড়া আর কিছুই বোঝে না। সেই ভোটব্যাংকের জন্যই তো লক্ষীর ভান্ডারের টাকা বাড়িয়ে আদতে রাজ্যের আর্থসামাজিক পরিকাঠামোকে আরও ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিয়েছে। মুখেই চা শ্রমিকদের উন্নয়ন এবং বিভিন্ন বোর্ড গঠন করেছে এই সরকার। কিন্তু তার বাস্তবায়ন এবং সেই দিকে নজর দিতে যে কিছু অর্থ বরাদ্দ করা প্রয়োজন, সেই প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। স্বাভাবিক ভাবেই বিরোধীরা এই সরকারের বক্তব্য এবং কাজের মধ্যেই বিস্তার ফারাক নিয়েই তাদের প্রতিবাদ জানিয়ে বুঝিয়ে দিয়েছেন যে, রাজ্য বাজেট ঠিক কতটা অন্তঃসারশূন্য।

বিজেপির দাবি, এই রাজ্য সম্পূর্ণ রূপে ধ্বংস করছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই কারণেই তিনি শুধুমাত্র চমকপ্রদ প্রতিশ্রুতি রাজ্য বাজেটে দিয়েছেন। কিন্তু এতে লাভের লাভ কিছু হবে না। বিভিন্ন জনজাতির উন্নয়নের কথা বাজেটে তুলে ধরা হয়নি। তাই মানুষের কথা তুলে ধরতেই বিরোধীদের এই প্রতিবাদ। আগামী দিনে এই সরকারের মুখোশ খুলে দিয়ে জনতা ভোটবাক্সে প্রকৃত জবাব দেবে বলেই দাবি গেরুয়া শিবিরের।পর্যবেক্ষকদের মতে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তার সরকার সব বিষয় নিয়ে রাজনীতি করতে খুব বেশি ভালোবাসেন। মানুষ এদের থেকে দূরে সরে গিয়েছে। আর সেটা খুব ভালো করেই মুখ্যমন্ত্রী উপলব্ধি করতে পেরেছেন। তাই তিনি চমকপ্রদ ঘোষণা করে বাজেটে তেমন কিছু ঘোষণা করেননি। একটা চালাকি এই বাজেটের মধ্যে দিয়ে করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তিনি ধরা পড়ে গেলেন বিরোধীদের কাছে। অমুক ভাতা, তমুক ভাতা দিয়ে শুধু ভোট কেনার চেষ্টা। সুদূরপ্রসারী কোনো উন্নয়নমূলক দৃষ্টিভঙ্গি নেই এই রাজ্যের। তবে সব বিরোধী দল তো আর বাম, কংগ্রেসের মত নয়। বিজেপি বিরোধী দল হওয়ার কারণে এখন এই সরকার বুঝতে পারছে, কত ধানে কত চাল। তাই বাজেট ঘোষণা করেও শান্তি নেই এই রাজ্য সরকারের। আজকে বিরোধীদের সমবেত প্রতিবাদ বুঝিয়ে দিল যে, এই রাজ্যের সরকার শুধুই চমক দিতে জানে। কিন্তু বাস্তব উন্নয়নের পথে তারা কোনো দিন হাঁটবে না। দিনের শেষে তেমনটাই বলছেন রাজনৈতিক সমালোচকরা।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!