গোষ্ঠীদ্বন্দ আটকাতে মুখ্যমন্ত্রীর কড়া হুঁশিয়ারি সাথে বিজেপির বিরুদ্ধে টাকা দিয়ে ভোট কেনার গুরুতর অভিযোগ উত্তরবঙ্গ রাজ্য November 19, 2019 রাজনৈতিক দলগুলোর সুবাদে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব এখন খুব পরিচিত শব্দ আমাদের কাছে। বরাবরই শাসক শিবিরের বিরুদ্ধে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের প্রসঙ্গ এসেছে ফিরেফিরে। মুখ্যমন্ত্রী নিজেও বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করে এই গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব কিছুতেই বন্ধ করতে পারছেন না। গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কারণেই রাজ্যের প্রধান বিরোধীদলগুলিও শাসক শিবিরকে প্রতিনিয়ত কটাক্ষ করতে থাকে। গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের তীব্র প্রভাব সম্প্রতি লক্ষ্য করা গেছে কোচবিহারে। মুখ্যমন্ত্রী নিজে এবার কোচবিহারে গিয়ে স্থানীয় নেতাদের রীতিমতো হুঁশিয়ারি দিয়ে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব সম্পর্কে সাবধান করলেন। সম্প্রতি কোচবিহারের শাসকদলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব অত্যন্ত বাড়াবাড়ি পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে নিত্যনৈমিত্তিক সংঘর্ষের ঘটনা চলছে। জখম হচ্ছেন বহুদলীয় নেতাকর্মীরা। এই পরিস্থিতিতে মুখ্যমন্ত্রী এদিন জেলা সফরে কোচবিহারে আসেন। কোচবিহারে এসে এদিন মুখ্যমন্ত্রী গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব বন্ধ করার জন্য স্থানীয় নেতৃত্বকে কঠোর নির্দেশ দেন। বিরোধী শক্তিকে হারাতে ঐক্যবদ্ধ হয়ে না লড়লে কোনমতেই জেতা যাবে না বলেও তিনি জানালেন। গত সপ্তাহে ঘূর্ণিঝড় বুলবুল এর কারণে মুখ্যমন্ত্রী উত্তরবঙ্গ সফর বাতিল করেন। বুলবুলের প্রভাব কাটতেই মুখ্যমন্ত্রী জেলা সফরে বেরিয়ে পড়েন। জেলা সফরে বেড়িয়ে সোমবার তিনি পা দিলেন কোচবিহারে। ইতিমধ্যে মুখ্যমন্ত্রীর কানেও পৌঁছেছে কোচবিহারের প্রবল গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কথা। সেই সূত্রেই মুখ্যমন্ত্রী এদিন দলীয় সভায় গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করলেন। গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব রুখতে না পারায় কোচবিহার পুরসভার চেয়ারম্যান কে মুখ্যমন্ত্রী তীব্র ভর্ৎসনা করেন। তিনি বলেন, ‘তৃণমূলে কোনও নেতা নেই। তৃণমূলের একটাই গোষ্ঠী। একটাই নেতা জোড়া ফুল।’ আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - শুধু তাই নয় মুখ্যমন্ত্রী এদিন বিজেপির বিরুদ্ধে ভোট কেনার অভিযোগ জানালেন। কোচবিহারে তৃণমূলকে হারিয়ে আসন অধিকার করেছে বিজেপির নিশীথ প্রামানিক। এই ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রী দলীয় নেতৃত্বের দুর্বলতাকে দেখেননি বরং রাতের অন্ধকারে বিজেপির বিরুদ্ধে টাকা দিয়ে ভোট কেনার কথা জানিয়েছেন। এ প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘রাতের অন্ধকারে কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে অপারেশন করা হয়েছে। টাকা দিয়ে ভোট কেনা হয়েছে।’ কোচবিহারের দলীয় সভা থেকে এদিন মুখ্যমন্ত্রী বিজেপির বিরুদ্ধে কড়া ভাষায় আক্রমণ করেন। মুখ্যমন্ত্রী দলীয় সভায় এদিন এনআরসি নিয়ে এলাকার মানুষকে আশ্বস্ত করেন। তিনি বলেন, ‘এনআরসি খুড়োর কল। এনআরসি নিয়ে অহেতুক রাজনীতি হচ্ছে। কুৎসা করে টাকা ছড়িয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে। ভয় দেখাচ্ছে। এক সম্প্রদায়ের সঙ্গে অন্য সম্প্রদায়ের ঝগড়া লাগাচ্ছে।’ এর পরেই প্রশাসনিক প্রধান হিসেবে তিনি রাজ্য সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজের বর্ণনা করেন। দলীয় সভা শেষে মুখ্যমন্ত্রী কোচবিহার মদনমোহন মন্দিরে গিয়ে সেখানে পুজো দেন। এরপর তিনি রাস মেলায় যান। শাসকদলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বকে ঘিরে ইতিমধ্যে রাজনৈতিক মহলে তুমুল সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব হেতু প্রতিদিন দলীয় সমর্থকদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনায় তৃণমূল দলনেত্রী রীতিমতো বিপাকে পড়েছেন। তাই এবার গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব মেরামতিতে এলাকায় গিয়ে কড়া নির্দেশ দিচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী স্বয়ং। অন্যদিকে, রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের দাবি, শাসক দলের অন্দরে যে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে তা থামাতে না পারলে ভবিষ্যতে তৃণমূল কংগ্রেস বড় রকমের অসুবিধায় পড়তে পারে। আপাতত দেখার মুখ্যমন্ত্রীর কড়া নির্দেশের ফলে কোচবিহারের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব কতটা নিয়ন্ত্রণে আসবে বা পুরোপুরি থামবে কিনা। আপনার মতামত জানান -