এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > মাস পয়লার বেতনকে ‘ঢাল’ করে কি আকাশচুম্বী ডিএ বঞ্চনাকে আড়াল করা যায়? ফুঁসছেন সরকারি কর্মীরা!

মাস পয়লার বেতনকে ‘ঢাল’ করে কি আকাশচুম্বী ডিএ বঞ্চনাকে আড়াল করা যায়? ফুঁসছেন সরকারি কর্মীরা!

ডিএ নিয়ে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের দীর্ঘদিন ধরেই ‘কলার টিউন’ হয়ে আছে – ‘তোমার দেখা নাই রে, তোমার দেখা নাই’! আর নতুন বেতন কমিশন ঘোষণার পর সেই ক্ষোভ তো কার্যত ‘দাবানলের’ পর্যায়ে চলে গেছে! কেননা এতদিন কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীদের সঙ্গে ডিএর ফারাক যতই যোজন বিস্তৃত হোক না কেন – ডিএ (যাকে কিনা আদালত রীতিমত রায় দিয়ে স্পষ্ট করে দিয়েছে – কর্মচারীদের সাংবিধানিক অধিকার বলে) বলে একটি ‘বস্তু’ স্যালারি স্লিপে দেখতে পেতেন রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা।

কিন্তু, নতুন বেতন কমিশনে রাজ্য সরকার এখনও পর্যন্ত এই ডিএ নিয়ে একটি শব্দও খরচ করে নি। মুখ্যমন্ত্রী শুধু জানিয়েছিলেন, ওটা কোর্টের ব্যাপার, তাই কিছু নাকি বলা যাচ্ছে না! পরবর্তীকালে নতুন পে-কমিশন নিয়ে যে সরকারি নির্দেশনামা প্রকাশিত হয়েছে – সেখানেও ডিএর কোনো উল্লেখ নেই! ফলে, রাজ্য সরকারি কর্মীদের মনে ক্রমশ ভয় জাঁকিয়ে বসছে – এবার কি তাহলে ডিএর অবলুপ্তি ঘটতে চলেছে তাঁদের বেতন থেকে! কেননা পে-কমিশনের চেয়ারম্যান অভিরূপবাবু – চার বছর ধরে অনেক মাথা খাটিয়ে কেন্দ্রের বেতন কমিশনের ‘হুবহু’ বাংলায় চালু করলেও, একটি নতুন ‘পরামর্শ’ দিয়েছেন রাজ্য সরকারকে।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

রাজ্য সরকার যে একদা দাবি করেছিল ডিএ ‘দয়ার দান’ – যা পরবর্তীকালে আদালত নস্যাৎ করে দেয়, কার্যত তাকেই মান্যতা দিতে রাজায় সরকারকে নিজস্ব সূচক তৈরির পরামর্শ দিয়েছেন তিনি! আর তাই সব মিলিয়ে ডিএ হারানোর ভয়ে আতঙ্কিত রাজ্য সরকারি কর্মীরা! নতুন বেতন কমিশনে রাজ্য সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী ২.৮ সূচক দিয়ে বাড়বে (২.৫৭ ফিটমেন্ট ফ্যাক্টর ও ৩ বছরের ৩% ইনক্রিমেন্ট হিসেবে করে) বেতন। আর কেন্দ্রের নতুন ঘোষণা অনুযায়ী ডিএর পরিমান ১৭% (পুরোনো স্কেলের হিসাবে ১৭ X ২.৮ = ৪৭%, আর বকেয়া ৪ টি ইনক্রিমেন্ট ধরলে ১৭ X ২.৯ = ৪৯%) – ফলে প্রতিমাসে এই বিপুল পরিমান বেতন হারানোর ভয়ে কার্যত চোখে সর্ষেফুল দেখছেন সরকারি কর্মচারীরা!

এই প্রসঙ্গে সরকারি কর্মচারী আন্দোলনের অন্যতম শীর্ষনেতা সরকারি কর্মচারী পরিষদের রাজ্য আহ্বায়ক দেবাশীষ শীলের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে, তিনি কার্যত ক্ষোভে ফেটে পড়েন! দেবাশীষবাবু বলেন, আমাদের রাজ্যে ষষ্ঠ বেতন কমিশন ঘোষণা থেকে, বিপুল পরিমান ডিএ বাকি রাখা – সবেতেই সারা দেশের মধ্যে ‘এগিয়ে’! এর আগে, এই নিয়ে সরকারি কর্মচারীরা কিছু বললেই মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী জানাতেন, তিনি এসে নাকি মাস পয়লায় বেতন চালু করেছেন! সেই প্রক্রিয়াকে সাধুবাদ জানিয়েও আমাদের জিজ্ঞাস্য, কিন্তু তাকে ‘ঢাল’ করে কি এই আকাশচুম্বী ডিএ বঞ্চনাকে আড়াল করা যায়?

বিজেপি নেতা মুকুল রায়ের উপস্থিতিতে সরকারি কর্মচারীদের নিজের সংগঠনে যোগদান করাচ্ছেন সরকারি কর্মচারী পরিষদের রাজ্য আহ্বায়ক দেবাশীষ শীল।

দেবাশীষবাবুর বক্তব্য, কিছুদিন আগে পর্যন্ত বিহার-ঝাড়খণ্ডের মত রাজ্যকে পশ্চিমবঙ্গের থেকে পিছিয়ে থাকা রাজ্য হিসাবে গণ্য করা হত। সেখানে কেন্দ্রীয়হারে বেতন কমিশন চালু হয়েছে কবে থেকে – মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী খবর রেখেছেন? বিহার বা তামিলনাড়ুতে কেন্দ্রীয় সরকারের মত নয়া বেতন স্কেলে মহার্ঘ ভাতা আরও ৫% বেড়ে ১৭% হয়ে গেল এবং সেই সুবিধা ১ লা জানুয়ারী ২০১৯ থেকেই চালু হয়ে গেল। বিহারে কিন্তু রাজ্য সরকারী কর্মচারী ও অন্যান্য সুবিধাভোগীর সংখ্যা পশ্চিমবঙ্গের চেয়ে বেশী। সবথেকে বড় কথা ঐ দুই রাজ্যে কর্মচারীদের মাস মাইনে ১ তারিখের আগেই হয়!

দেবাশীষবাবুর বক্তব্য, মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীর তাই মাসের ১ তারিখে মাইনে দেওয়ার কথা বড় গলা করে বলা আদৌ সাজে কি? বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গের সরকারী কর্মচারী ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্যদের ৪০%-এরও বেশি মহার্ঘ ভাতা পাওনা হয়ে গেল। স্যাট নির্দেশিকা দিয়েছে ২০০৬ থেকে এরিয়ার সহ বকেয়া ডিএ সরকারি কর্মীদের দিতে হবে। যা আগামী ১ বছর বা নতুন বেতন কমিশন চালু হওয়ার আগেই রাজ্য সরকারকে মিটিয়ে দিতে হবে। পাশাপাশি বিগত প্রায় চার বছর ধরে বেতন কমিশন নামক যে ‘নাটক’ চলল তার এরিয়ার গায়েব হয়ে গেল। রাজ্যে কর্মসংস্কৃতিকে কার্যত মাথায় তুলে ৩১ দিনের মধ্যে ২০ দিন ছুটি দিয়ে উৎসব-কার্নিভ্যাল করে – ডিএ-এরিয়ারের বঞ্চনার ঘায়ে প্রলেপ দেওয়া যাবে না!

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!