এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > মেদিনীপুর > তৃণমূলের সাধের নন্দীগ্রামও কি আর “হাতের মধ্যে” নেই? নতুন পদক্ষেপে জল্পনা বাড়ালেন হেভিওয়েট!

তৃণমূলের সাধের নন্দীগ্রামও কি আর “হাতের মধ্যে” নেই? নতুন পদক্ষেপে জল্পনা বাড়ালেন হেভিওয়েট!


বিগত বাম সরকারের সময় নন্দীগ্রামের জমি আন্দোলনে মধ্য দিয়েই নিজেদের ক্ষমতায় আসার পথ প্রশস্ত করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তৃণমূল কংগ্রেস। পরবর্তীতে 2011 সালে তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর অনেক ক্ষেত্রেই অভিযোগ উঠেছে যে, নন্দীগ্রাম এবং সিঙ্গুরকে ভুলে গেছে তৃণমূল কংগ্রেস। কিন্তু এবার নন্দীগ্রামে জমি আন্দোলনের যুক্তদের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলা রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে প্রত্যাহার করার উদ্যোগ নিতেই তৈরি হয়েছে নয়া জল্পনা।

একাংশের অভিযোগ, আসলে নন্দীগ্রাম রাজ্যের শাসকদলের হাতের বাইরে বেরিয়ে যাচ্ছে‌। তাই এখন ক্ষমতাসীন শাসকদল পরিস্থিতিকে নিজেদের আয়ত্তে আনতে আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে মামলা উঠিয়ে নেওয়ার উদ্যোগ নিচ্ছে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, গত 2006-07 সালে জমি অধিগ্রহণের বিরুদ্ধে নন্দীগ্রাম, খেজুরি সহ বিভিন্ন এলাকায় ব্যাপক আন্দোলন শুরু হয়। আর সেই সময় তৎকালীন বাম সরকারের পুলিশ আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে প্রচুর মামলা করে।

কিন্তু ক্ষমতার পালাবদল হলেও সেই সমস্ত মামলা এতদিন ওঠানোর ব্যাপারে কোনো উদ্যোগ নিতে দেখা যায়নি তৃণমূল সরকারকে। কিন্তু এবার সরকারি কাজে বাধা, হিংসা এবং সরকারি সম্পত্তির ধ্বংসের মত অভিযোগে মোট 406 টি মামলার মধ্যে একটি মামলা বাদে সব প্রত্যাহার করে নিয়েছে রাজ্য সরকার। যার ফলে তৈরি হয়েছে গুঞ্জন। এদিন এই প্রসঙ্গে নন্দীগ্রাম আন্দোলনের অন্যতম নেতা তথা রাজ্যের বর্তমান মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী মুখ খোলেন।

তিনি বলেন, “প্রায় সাড়ে চার হাজার পরিবার দীর্ঘ লড়াই থেকে মুক্তি পেয়েছে। আন্দোলনের সৈনিক হিসেবে আমাদের দায়বদ্ধতা ছিল। সেই প্রতিশ্রুতি রাখায় নন্দীগ্রামের তরফে মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।” আর রাজ্য সরকারের এই উদ্যোগেই এখন নানা মহলে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। অনেকেই বলছেন, তাহলে কি শুভেন্দু অধিকারী এবং রাজ্যের শাসক দল নন্দীগ্রামের ক্ষমতা নিজেদের দখলে রাখতে পারছে না?

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

আর তাই এখন আন্দোলনকারীদের উপর থেকে মামলা তুলে নিয়ে তাদের প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করে তাদের সমর্থন আদায় করতে চাইছে তৃনমূল কংগ্রেস? এদিন এই প্রসঙ্গে রাজ্যের বাম পরিষদীয় দলে নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, “নন্দীগ্রাম এখন আর তৃণমূলের হাতের মধ্যে নেই। শাসকের চেহারা যত সামনে আসছে, তত মানুষ বিক্ষুব্ধ হচ্ছেন। আর তা সামাল দিতেই এই পথ নিয়েছে তৃণমূল। ওখানে আমাদেরও অনেকে খুন হয়েছেন। তারা কি বিচার পাবেন না!”

যদিও বা বিরোধীদের পক্ষ থেকে তোলা এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন রাজ্যের বর্তমান মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। এদিন তিনি বলেন, “এরকম বড় বড় বহু ঘটনার বিচার অনেক পরেও হয়েছে। এক্ষেত্রেও এখনও হয়নি মানে হবে না, তা নয়। সিপিএমের নির্দেশে পুলিশ এসব মিথ্যা মামলা করেছিল। সেই অভিযোগ প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে। সরকারি আইনজীবীরা তাতে আপত্তি করেননি।”

তবে শুভেন্দুবাবু যে কথাই বলুন না কেন, সামনের বিধানসভা নির্বাচনের আগে হঠাৎ করেই আন্দোলনকারীদের উপর থেকে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে মামলা তুলে নেওয়ার পেছনে যে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য রয়েছে, সেই ব্যাপারে নিশ্চিত রাজনৈতিক মহল। তাই বিরোধীদের সুরে সুর মিলিয়ে অনেকেই বলতে শুরু করেছেন, আসলে নন্দীগ্রাম আগে যতটা তৃণমূলের পক্ষে ছিল, এখন আর ততটা নেই।

আর তাই বাম সরকারের সময় আন্দোলন করা ব্যক্তিদের সহানুভূতি পাওয়ার জন্য তাদের উপর থেকে মামলা তুলে নেওয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করল রাজ্য সরকার বলে মত সমালোচক মহলের। বিশেষ করে প্রশ্ন উঠছে, যে নন্দীগ্রাম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে মুখ্যমন্ত্রী করল, সেখানে মামলা তুলতে ৯ বছর লাগল কেন! বাংলায় লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির উত্থানের ফলেই কি সেই পদক্ষেপ? আর তাই এতসবের পরেও নন্দীগ্রাম কতটা তৃণমূলের পক্ষে থাকে, তার দিকেই নজর থাকবে সকলের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!