এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > মালদা-মুর্শিদাবাদ-বীরভূম > চাকরির নামে মোটাসোটা টাকা হাতানোর প্রতারণা চক্র! নাম জড়ালো প্রভাবশালী তৃণমূল নেতার ভাইপোর!

চাকরির নামে মোটাসোটা টাকা হাতানোর প্রতারণা চক্র! নাম জড়ালো প্রভাবশালী তৃণমূল নেতার ভাইপোর!


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট:- রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় তৃণমূলের স্থানীয় নেতাদের দুর্নীতি প্রকাশ্যে উঠে আসতে শুরু করেছে। যেখানে তৃণমূলের অনেক নেতার ঘনিষ্ঠ আত্মীয়দের সুবিধা পাইয়ে দেওয়া থেকে শুরু করে কাটমানি নেওয়ার অভিযোগ তুলে সরব হয়েছে বিরোধীরা। এবার সেরকমই এক ঘটনা ঘটল রাজ্যে। যেখানে মোটা টাকার বিনিময়ে তৃণমূল নেতার ভাইপো এক যুবককে চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। যার পরিপ্রেক্ষিতে শনিবার সেই তৃণমূল নেতার ভাইপোর বিরুদ্ধে রামপুরহাট এসডিপিও অফিসে একটি অভিযোগ দায়ের করলেন সেই যুবক।

জানা যায়, গত 2016 সালে জেলার প্রতিটি হাইস্কুলে পিছিয়ে পড়া ছাত্র-ছাত্রীদের শিক্ষা এবং কর্ম শিক্ষার বিষয়ে শিক্ষিত যুবক যুবতীদের এনজিওর মাধ্যমে নিয়োগের জন্য একটি বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়। আর তখনই নন্দীগ্রামে তৃণমূল সভাপতি তথা মুরারই কাহারপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক অরিন্দম সরকার এদরাকপুর গ্রামের বাসিন্দা বরুণকুমার ভাস্করের কাছ থেকে চাকরি দেওয়ার নাম করে দু লক্ষ টাকা নেন বলে অভিযোগ ওঠে। যার জেরে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। সিউড়িতে সেই পরীক্ষার পর সেই যুবককে নিয়োগপত্র দেওয়া হলে তিনি জেএন ইনস্টিটিউটে চাকরিতে যোগ দেন।

কিন্তু সেই সময়কার টিআইসি সেই নিয়োগপত্র দেখে সিল মেরে তাকে জয়েন করিয়ে নিলে 18 হাজার টাকা করে বেতনের কথা বলা হয়। তবে তিন মাস অ্যাকাউন্টে 5,000 করে টাকা দেওয়া হয় তবে এত কম টাকা কেন, সেই ব্যাপারে অরিন্দমবাবুকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, “ছয় মাস পর বেতন বেড়ে যাবে।” তবে এর কিছুদিন যেতে না যেতেই সেই শিক্ষকের বেতন বাড়া তো দূর অস্ত, উল্টে তা সম্পূর্ণরূপে বন্ধ হয়ে যায়। আর এর পরেই বরুণকুমার ভাস্কর জানতে পারেন যে, তিনি প্রতারণার শিকার হয়েছেন।

এদিকে বেতন বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর বরুণ কুমার ভাস্কর সেই তৃণমূল নেতার ভাইপো অরিন্দম সরকারের কাছে টাকা চাইতে গেলে তাকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হয়। যার পরে গোটা বিষয় নিয়ে থানায় অভিযোগ করেন তিনি। স্বাভাবিক ভাবেই তৃণমূলের নানা নেতার বিরুদ্ধে যখন দুর্নীতির অভিযোগ উঠছে, তখন এক সাধারণ যুবক তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে এরকম বিস্ফোরক অভিযোগ তোলায় ব্যাপক অস্বস্তিতে পড়েছে শাসক দল।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

এদিন এই প্রসঙ্গে প্রতারিত বরুণ কুমার ভাস্কর বলেন, “টাকা চাইতে গেলে অঞ্চল সভাপতি আমাকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। বিষয়টি ব্লক সভাপতিকে জানিয়েছি। সমস্যার সমাধান না হওয়ায় এসডিপিওর দ্বারস্থ হয়েছি।এই প্রতারণা চক্রের সঙ্গে গ্রামের এক হাতুড়ে চিকিৎসক জড়িত। তারা এলাকার আরও চারজনের কাছ থেকে একইভাবে টাকা নিয়ে প্রতারণা করেছেন।”

কিন্তু এইভাবে কেন দুর্নীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছেন তৃণমূলের নেতারা? যেখানে দলের পক্ষ থেকে বারবার স্বচ্ছতার উপর জোর দেওয়া হচ্ছে, সেখানে এভাবে যদি তারা সাধারণ মানুষকে প্রতারণা করেন, তাহলে তৃণমূলের প্রতি তো মানুষের ভরসা হারাতে শুরু করবে? এদিন যার বিরুদ্ধে এত অভিযোগ সেই অরিন্দম সরকার বলেন, “চাকরি দেওয়ার নাম করে কারো কাছ থেকে কোনো টাকা নিইনি। আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।” এদিকে অভিযোগ করা হলেও টাকা দেওয়ার কোনো প্রমান পত্র অভিযোগকারী দেখাতে পারেননি বলে দাবি করেছেন তৃণমূলের অঞ্চল এবং ব্লক সভাপতি। অর্থাৎ মূল অভিযুক্তের পাশেই দাঁড়াতে দেখা গেছে তৃণমূল নেতৃত্বকে।

রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সামনেই 2021 এর বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে তৃণমূল এখন নিজেদের স্বচ্ছতা বজায় রাখার চেষ্টা করছে। কিন্তু তার আগেই যদি এভাবে তৃনমূলের নানা নেতা এবং কর্মীদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠতে শুরু করে, তাহলে বিরোধীরা সেটাকে অস্ত্র করে ময়দানে নামবে এবং তার ফলে তৃণমূলের ঘুম উড়িয়ে দেবে বলেই মনে করা হচ্ছে। স্বাভাবিকভাবেই গোটা ঘটনায় বরুণকুমার ভাস্কর প্রতারিত হওয়ার অভিযোগ তুললেও, পুলিশি তদন্তে কি উঠে আসে এবং তার পরিপ্রেক্ষিতে তৃনমূলের পক্ষ থেকে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয় কিনা, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!