এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > তৃণমূল > কট্টর বিরোধিতা থাকবে, তবুও নিজের মুখ্যমন্ত্রী বলে মমতার সুস্থতা কামনা সুকান্তর!

কট্টর বিরোধিতা থাকবে, তবুও নিজের মুখ্যমন্ত্রী বলে মমতার সুস্থতা কামনা সুকান্তর!


প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-রাজনীতিতে ব্যক্তিগত লড়াই বলে কিছু হয় না। রাজনৈতিক লড়াইটাই হয় শেষ কথা। সেক্ষেত্রে বিরোধী দলের নেতা বা নেত্রীরা যদি অসুস্থ হন, তারা যদি কোনো দুর্ঘটনার মুখে পড়েন, তাহলে বাংলার সংস্কৃতি অনুযায়ী দল মত না দেখে সকলেই তার সুস্থতা কামনা করেন। সামনে লোকসভা নির্বাচন। তার আগে রাজ্যের রাজনৈতিক পারদ এমন জায়গায় পৌঁছে গিয়েছে যে, তৃণমূল এবং বিজেপির মধ্যে সেয়ানে সেয়ানে টক্কর হচ্ছে। প্রতিনিয়ত বিভিন্ন সভা সমিতি থেকে বিজেপির সুকান্ত মজুমদার থেকে শুরু করে শুভেন্দু অধিকারীরা একেবারে তৃণমূলের প্রচন্ড অস্বস্তি বাড়িয়ে দিচ্ছেন। আক্রমণ করছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও। কিন্তু সেটা রাজনৈতিক আক্রমণ। তবে এর মাঝে হঠাৎ করেই বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় একটি খবর সামনে আসে যে, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। যেখানে একটি ছবিতে দেখা যায় যে, তার মাথা ফেটে রক্ত পড়ছে। বিভিন্ন প্রশ্ন এর পেছনে থাকলেও, সুকান্ত মজুমদার কিন্তু সেই সব কিছুতে না গিয়ে একেবারে সৌজন্যতা দেখিয়ে এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী যাতে দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠেন, তার প্রার্থনা করলেন। অনেকে বলছেন, এটাই তো একজন নেতার পরিচয় হওয়া উচিত। যতই রাজনৈতিক বৈরিতা থাক, ব্যক্তিগত শত্রুতা তো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে সুকান্ত বাবুর নেই। তাই তিনি অসুস্থ হওয়ার সাথে সাথেই সুকান্ত মজুমদার তার সুস্থ জীবন কামনা করলেন।

প্রসঙ্গত, এদিন এই ব্যাপারে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারকে একটি প্রশ্ন করা হয়। বিভিন্ন জায়গায় মুখ্যমন্ত্রী কিভাবে পড়ে গেলেন, কেন তার পরিবারের সদস্যরা ছিলেন না, তার নিরাপত্তার রক্ষীরা কোথায় ছিলেন, এই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। তবে সুকান্তবাবু সেই সব কিছুতে গেলেন না। তিনি একেবারে নিপাট ভদ্রলোকের মত এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী অসুস্থ হয়েছেন, তাই তার দ্রুত সুস্থতা কামনা করলেন। তিনি বলেন, “দিনের শেষে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমারও মুখ্যমন্ত্রী। তাই আমি অন্য কিছুতে এখন যেতে চাই না। আমি শুধু চাই, উনি সুস্থ জীবনে ফিরে আসুন। ওনার দ্রুত আরোগ্য কামনা করি।”

অনেকে বলছেন, মুখ্যমন্ত্রী যেভাবে আহত হয়েছেন, তা নিয়ে প্রশ্ন থাকবে। কিন্তু সেসব পরে। প্রথম কর্তব্য এবং দায়িত্ব হওয়া উচিত, তিনি যাতে দ্রুত আরোগ্য লাভ করে ওঠেন, তার জন্য প্রার্থনা করা। আর সেটাই সুকান্ত বাবু করেছেন। এর ফলে প্রমাণ হয় যে, বিরোধী দলের নেতারা শুধুমাত্র বিরোধিতা করার জন্য রাজনীতি করেন না। তাদের কাছে ব্যক্তিগত জীবনটাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাজ নিয়ে তাদের হাজারও প্রশ্ন থাকতে পারে। কিন্তু তার ব্যক্তিগত শত্রু তো সুকান্তবাবু বা শুভেন্দুবাবু নন। তাই রাজনীতির মাঝেও যে সৌজন্যতা রয়েছে, তার নজির স্থাপন করলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি।

পর্যবেক্ষকদের মতে, ভোটের লড়াই, রাজনীতির লড়াই হবে মঞ্চে, রাজপথে। কিন্তু সব জায়গায় রাজনীতি চলে না। দিনের শেষে সুকান্ত মজুমদার যেমন মানুষ, তেমনই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও একজন মানুষ। তাই কেউই চান না, তার প্রতিপক্ষ কোনো নেতা বা নেত্রীর জীবনে বড় দুর্ঘটনা নেমে আসুক। আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কপাল থেকে যেভাবে রক্ত পড়ছে, তাতে তার হাজার শত্রু হলেও, এই ছবি কেউ কিন্তু গ্রহণ করতে পারছে না। সকলের মনের কোনাতেই একটা ব্যথা অনুভূত হচ্ছে। তাই মানুষ হিসেবে সমস্ত রাজনৈতিক শত্রুতাকে দূরে সরিয়ে রেখে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আরোগ্য কামনা করলেন সুকান্ত মজুমদার।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!