এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > বাম কংগ্রেস জোট নিয়ে অসন্তুষ্ট! এবার কি তৃণমূলপন্থী হচ্ছেন এই হেভিওয়েট নেতা? বাড়ছে জল্পনা

বাম কংগ্রেস জোট নিয়ে অসন্তুষ্ট! এবার কি তৃণমূলপন্থী হচ্ছেন এই হেভিওয়েট নেতা? বাড়ছে জল্পনা


সমস্ত জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে বাংলার ৩ উপনির্বাচনকে সামনে রেখে পুনরায় সংঘবদ্ধ হল বামফ্রন্ট ও কংগ্রেস। ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলকে ক্ষমতা থেকে সরাতে, দীর্ঘদিনের বৈরিতা ভুলে জোট বাঁধে এই দুই দল। তৃণমূলের সঙ্গে তীব্র লড়াই হলেও, আসন সংখ্যার নিরিখে বহু পিছনে থাকে জোট। আর, নির্বাচনে সাফল্য না পেতেই – কার্যত ছত্রভঙ্গ হয়ে যায় এই জোট।

এরপর থেকে রাজ্যে হয়ে চলা বিভিন্ন উপনির্বাচনে ও পঞ্চায়েত নির্বাচনে আলাদা-আলাদা ভাবেই লড়াই করে এই দুই দল। আর সেই সুযোগে তীব্র গতিতে উত্থান হতে থাকে বিজেপির। আর তাই গত লোকসভা নির্বাচনে এই দুই দল মরিয়া চেষ্টা চালিয়েছিল, এক ছাতার তলায় আসার। কিন্তু, রায়গঞ্জ ও মুর্শিদাবাদ আসন নিয়ে ঐক্যমতে পৌঁছাতে না পারায় শেষপর্যন্ত ভেস্তে যায় সেই জোট।

আর তারফলে, এই দুই দল বাংলা থেকে কার্যত মুছে যাওয়ার জায়গায় চলে যায়। কংগ্রেস কোনোরকমে দুটি আসন দখলে আনলেও, একদা বাংলার বুকে টানা ৩৪ বছর সাম্রাজ্য চালানো বামফ্রন্টের ঝুলি থাকে শূন্য! আর তাই বাঁচার মরিয়া প্রয়াসে, রাজ্যের আসন্ন ৩ উপনির্বাচনকে ঘিরে আবারো জোট করল বামফ্রন্ট-কংগ্রেস। কিন্তু, সেই জোট জল্পনার মাঝেই, এবার বেসুরো হলেন হেভিওয়েট কংগ্রেস নেতা তথা বিধানসভার বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান। আর তা নিয়েই রাজ্য রাজনীতিতে শুরু হয়েছে নতুন জল্পনা!

২০১৬-এর নির্বাচনের পরে বাম-কংগ্রেসকে সেইভাবে একমঞ্চে দেখা না গেলেও, আব্দুল মান্নানের বাম-প্রীতি নিয়ে কম আলোচনা হয় নি! তাঁর জেদের জন্যই দল ছাড়েন মানস ভূঁইয়ার মত প্রবীণ নেতা বলে কোনো কোনো মহল থেকে অভিযোগ জানানো হয়। এমনকি বিধানসভায় তাঁর ‘নতুন বন্ধু’ সুজন চক্রবর্তীকে পদ পাইয়ে দিতে তিনি যেভাবে উঠেপড়ে লেগেছিলেন, কম সমালোচিত হয় নি তাও। কিন্তু, সেই আব্দুল মান্নানই বর্তমানে বাম-প্রীতি ছেড়ে তৃণমূল-প্রীতিতে বেশি ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

কংগ্রেস বরাবরই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘দূর্গা-কার্নিভ্যালের’ বিরোধী। অথচ, এবারের কার্নিভ্যালে আব্দুল মান্নানকে মঞ্চ আলো করে বসে থাকতে দেখা যায়! সেই নিয়ে কম বিতর্ক হয় নি তখন! আর এরপরেই যেন আব্দুল মান্নানের তৃণমূল প্রেম পাল্লা দিয়ে বাড়ছে বলে দলের মধ্যেই অভিযোগ! যে মান্নান সাহেব কিছুদিন আগে দিল্লিতে গিয়ে স্বয়ং সোনিয়া গান্ধীকে বুঝিয়ে এসেছিলেন রাজ্যে বাম-কংগ্রেসের জোট ও যৌথ কর্মসূচির কতটা দরকার, তিনিই উপনির্বাচনের আগে জোটকে জলাঞ্জলি দিয়ে তৃণমূলকে জেতানোর চিন্তায় বিভোর!

মান্নান সাহেব সোনিয়া গান্ধীকে তৃণমূল কংগ্রেসকে সমর্থন করা নিয়ে যে চিঠি লিখেছেন, তার সারমর্ম হল, জ্ঞান সিং সোহনপালের মৃত্যুর পর থেকে খড়গপুর শহরে আমাদের দল দুর্বল। সুতরাং, বিজেপিকে রুখতে হলে সেখানে তৃণমূল প্রার্থীকে সমর্থন করতে হবে। এতে বোঝা যাবে, পশ্চিমবঙ্গে আদৌ তৃণমূল বিজেপির বিরুদ্ধে লড়ছে কিনা। আর মান্নান সাহেবের এই চিঠি প্রকাশ্যে আসতেই কংগ্রেসের অন্দরমহলে শুরু হয়েছে তীব্র জল্পনা! যে তৃণমূলের বিরুদ্ধে দল ভাঙানোর অভিযোগে কংগ্রেস এত সরব, সেই তৃণমূলের প্রতি মান্নান সাহেবের এত প্রীতি উপছে পড়ছে কেন?

দলের মধ্যে তাঁর বিরোধীদের বক্তব্য, এতদিন মুখে মমতা-বিরোধী হলেও, এবার তৃণমূলের টিকিটে বা সমর্থনে তিনি বিধানসভায় নিজের কেন্দ্র থেকে জিততে চান। চাঁপদানিতে বর্তমান রাজনৈতিক সমীকরণে বিজেপি বেশ ভালো জায়গায়। মান্নান সাহেব বা তৃণমূল কেউই জেতার মত জায়গায় নেই! কিন্তু, সেখানে তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী বা সমর্থিত প্রার্থীর নাম যদি আব্দুল মান্নান হয়, তাহলে বদলে যাবে অনেক সমীকরণই। তৃণমূলেরও নাকি এতে খুব একটা আপত্তি নেই।

আর তাই নাকি মান্নান সাহেব, আপাতত বাম-প্রীতি ভুলে তৃণমূলকে জেতানোর জন্য মরিয়া! একই সঙ্গে দলে তাঁর বিরোধীদের প্রশ্ন, অনেক চেষ্টা করেও তো তিনি বাম-কংগ্রেস জোট আটকাতে পারলেন না। সোমেন মিত্র ও বিমান বসু পাশাপাশি বসে সাংবাদিক বৈঠক করে জোট ঘোষণা করলেন? ফলে মান্নান সাহেবের ‘তৃণমূল-প্রেমের’ তত্ত্ব যে দলের মধ্যেই খারিজ তা প্রমাণিত! এবার তাহলে কি করবেন মান্নান সাহেব? গুটি গুটি পায়ে আরও তৃণমূল-মুখী হবেন? নাকি, পরিস্থিতির চাপে আবারো পুরোনো বাম-প্রীতি ঝালিয়ে নেবেন? উত্তরের অপেক্ষায় রাজনৈতিক মহল!

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!