করোনা থেকে বাঁচার একমাত্র উপায় হল লকডাউন। ইতিমধ্যেই লকডাউনের মধ্যে দিয়ে চলছে গোটা দেশ। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার জন্য প্রথমে 21 দিন এবং তারপর টানা 19 দিন লকডাউনের কথা ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আগামী 3 মে সেই লকডাউন শেষ হবে। তবে আবার লকডাউন বাড়বে কিনা, তা নিয়ে এতদিন নানা মহলে নানা জল্পনা চলছিল।

সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন ক্ষেত্র শিথীল করে দেওয়ায় আশা করা হয়েছিল, হয়ত আর লকডাউন হবে না। কিন্তু তাতে জল ঢেলে দিয়ে শুক্রবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের পক্ষ থেকে আগামী 17 মে পর্যন্ত তৃতীয় দফার লকডাউনের কথা ঘোষণা করা হয়েছে। আর এই লকডাউন ফের বৃদ্ধি পাওয়ার পরেই তা নিয়ে আপত্তির সুর শোনা গেছে পশ্চিমবঙ্গের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের গলায়।

সূত্রের খবর, শুক্রবার বিকেলে তৃতীয় দফার লকডাউন জারি করেছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। যেখানে দেশের রেড জোন, অরেঞ্জ জোষ এবং গ্রীন জনে কিভাবে সেই লকডাউন পালন করা হবে, তার ব্যাপারে স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্র। আর এর পরেই এই ব্যাপারে আপত্তি তুলতে দেখা গেছে লোকসভার তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়কে।

এদিন তিনি বলেন, “লকডাউন বাড়ানো নিয়ে আমাদের কোনো আপত্তি নেই। তবে ঠিক কী কারণে লকডাউন বাড়ানো হল, সেটা স্পষ্টভাবে জানালে ভালো হত। কেন্দ্র স্পষ্ট করে জানাক যে, তারা আর্থিক পরিস্থিতির উন্নয়ন চায় কি চায় না! অসংগঠিত ক্ষেত্রে ও কৃষকদের ক্ষেত্রে কোনো অনুদান দেওয়া হবে, কি হবে না! আমরা জানি যে, আমরা মহামারীর মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু এখন কি পরিস্থিতি, গোষ্ঠী সংক্রমণ হয়েছে কিনা, সেই ব্যাপারে বিস্তারিত জানাক কেন্দ্র।” আর সৌগত রায়ের লকডাউনকে কেন্দ্র করে এই আপত্তি এখন রীতিমত চাঞ্চল্য তৈরি করেছে বিভিন্ন মহলে।

অনেকে বলছেন, কিছুদিন আগেই প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সের বৈঠকে লকডাউন আরও বাড়ানো উচিত বলে বিভিন্ন মুখ্যমন্ত্রীরা মন্তব্য করেছিলেন। শুধু তাই নয়, পরবর্তী সময়কালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাংবাদিক বৈঠকে 21 মে পর্যন্ত সকলের সচেতন থাকা উচিত বলেও জানিয়েছিলেন। আর সেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলের সাংসদ হয়ে লকডাউন বৃদ্ধির পরে কেন তা নিয়ে আপত্তির সুর শোনালেন বর্ষিয়ান সাংসদ সৌগত রায়, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে রাজনৈতিক মহলে।

যদিও বা রাজ্যের শাসক দলের দাবি, বুঝেশুনেই এই কথা বলেছেন সৌগতবাবু। তিনি লকডাউন নিয়ে কোনো আপত্তি জানাননি। তবে দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতিকে বাঁচাতে গেলে কেন্দ্রীয় সরকার কি পদক্ষেপ নিয়েছে, তার ব্যাপারে কেন্দ্রের কাছে জানতে চেয়েছেন তিনি। সব মিলিয়ে এখন কেন্দ্রের পক্ষ থেকে লকডাউন বৃদ্ধি করে তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়ের এই আপত্তি রাজ্য রাজনীতিতে কতটা ঝড় তোলে, তার দিকেই নজর থাকবে সকলের।